বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম


বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তার জানুন এই পোস্ট থেকে। বিশেষ কিছু কারণে বাংলাদেশ থেকে আমাদের অনেকের পেপাল একাউন্ট প্রয়োজন পড়ে। আমরা অনেকেই আছি যারা অনলাইনে ইনকাম করি। আর সে ইনকামের টাকা বিভিন্ন ব্যাংকিং মাধ্যমে নিয়ে আসতে হয়। যার মধ্যে পেপাল অন্যতম।
বাংলাদেশ-থেকে-পেপাল-একাউন্ট-খোলার-নিয়ম
কিন্তু এই পেপালে কীভাবে একাউন্ট খুলতে হয়, কীভাবে ব্যবহার হয় আমাদের সকলেরই প্রায় অজানা।আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম, পেপালে ডলার আনার সহজ নিয়ম, কীভাবে পেপাল থেকে বিকাশে টাকা আনবেন ইত্যাদি। আশাকরি শেষপর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে উপকৃত হবেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম

পেপাল একাউন্টের ধরণ বা প্রকারভেদ

পেপাল একাউন্ট মূলত ৩ ধরণের হয়ে থাকে। আসলে পেপাল একটি আমেরিকান আর্থিক প্রযুক্তি কোম্পানি। এটি অনলাইন বেজসড অর্থাৎ অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম যা ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যাংকিং সেক্টর। আপনি চাইলে তাদের ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। কিন্তু এই লেনদেনের পূর্বে আপনাকে জানতে হবে এই ব্যাংকে কোন ধরণের সার্ভিস চালু আছে বা কোন কোন ধরণের একাউন্ট ব্যবহারযোগ্য। চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাকঃ

১. পার্সোনাল একাউন্টঃ পার্সোনাল পেপাল একাউন্ট মূলত ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যারা অনলাইন কেনাকাটা করেন, পেমেন্ট গ্রহণ/প্রেরণ করেন বা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে টাকা লেনদেন করতে চান। ই-কমার্স ওয়েবসাইটে নিরাপদে পেমেন্ট দেওয়া যায় যেমন-eBay, AliExpress, Amazon ইত্যাদি যেগুলো পেপাল সাপোর্ট করে। বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের টাকা পাঠানো বা তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা যায় ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে।

২. প্রীমিয়ার একাউন্টঃ প্রীমিয়ার পেপাল একাউন্ট একসময় ছিল এবং টি একটি মধ্যম পর্যায়ের একাউন্ট টাইপ, যা পার্সোনাল এবং বিজনেস একাউন্টের মাঝে অবস্থান করত। এটি মূলত ব্যক্তিগতভাবে অনলাইন লেনদেন এবং কিছু ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হতো, বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সার বা ইন্ডিভিজুয়াল সেলারদের জন্য। তবে বর্তমানে পেপাল অনেক দেশে Premier Account অপশনটি বন্ধ করে দিয়েছে বা Personal Account-এর সঙ্গে একীভূত করে ফেলেছে।

৩. ব্যবসায়িক একাউন্টঃ পেপাল বিজনেস একাউন্ট মূলত ব্যবসায়ী, প্রতিষ্ঠান, ফ্রিল্যান্স এজেন্সি, বা যেকোনো ধরনের প্রফেশনাল অনলাইন সেলারদের জন্য। এই অ্যাকাউন্ট দিয়ে আপনি কোম্পানির নামে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক টুল ব্যবহার করতে পারেন। আপনি পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে যেখানে পেপাল কার্যকর সেখান থেকে পেমেন্ট সম্পূর্ণ করতে পারবেন। যদিও বাংলাদেশে এটি এখনো কার্যকর না তবুও এটি ব্যবহারযোগ্য।

পেপাল একাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

পেপাল একাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন মৌলিক তথ্য ও ডকুমেন্ট প্রদান করতে হয়। আপনি কোন ধরনের একাউন্ট খুলছেন (Personal না Business), তার উপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্ন হয়ে থাকে। কিছু দেশে এই তথ্য ও কাগজপত্র ভেরিফিকেশনের সময় আপলোড করতে হয়, আবার কিছু দেশে শুধু কার্ড লিঙ্ক করলেই অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়। পেপাল একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ধাপসমূহ দেখে নিনঃ 

১. পেপাল পার্সোনাল একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

কাগজপত্র/তথ্য বিবরণ
একটি বৈধ ইমেইল ঠিকানা এটি পেপালের লগইন ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। একাউন্ট খোলার সময় একাধিকবার ভেরিফিকেশন করা হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিচয় যাচাই করার জন্য, কিছু দেশে বাধ্যতামূলক (KYC প্রয়োগে)।
বাসার ঠিকানা ও জন্মতারিখ ঠিকানাটি আপনার আইডির সাথে মিল থাকা উচিত। পেপাল মাঝে মাঝে প্রমাণ চায় (Utility bill/Bank Statement)।
মোবাইল নম্বর দুই ধাপে সুরক্ষা ও ভেরিফিকেশনের জন্য দরকার হয়। দেশের নির্ভরযোগ্য নম্বর হওয়া উচিত।
ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (বিশ্বব্যাপী লেনদেন সমর্থিত) যেমনঃ Mastercard, Visa – কার্ড ভেরিফাই করে ছোট একটি এমাউন্ট কেটে নেয় এবং একটি কোড দেয় যা দিয়ে আপনি ভেরিফাই করবেন।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা Utility Bill (প্রয়োজনে) ঠিকানা ভেরিফিকেশনের জন্য (বিশেষ করে EU/US region-এ)।

২. পেপাল বিজনেস একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

কাগজপত্র/তথ্য বিবরণ
ব্যবসার নাম (Trade Name/Legal Name) এটি পেমেন্টে প্রদর্শিত হবে।
ব্যবসার ঠিকানা ও ফোন নম্বর রেজিস্ট্রেশনের সময় লাগবে এবং ভেরিফিকেশনের জন্য বিল বা ডকুমেন্ট লাগতে পারে।
ব্যবসা মালিকের পরিচয়পত্র (NID/Passport/License) মালিক হিসেবে ভেরিফিকেশন হবে।
Tax Identification Number (TIN) বা EIN (যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে) ট্যাক্স রিপোর্টিংয়ের জন্য আবশ্যক।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড (ব্যবসার নামে হতে হবে, যদি সম্ভব হয়) তহবিল উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত হবে।
ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্ট (Certificate of Incorporation/Trade License) কোম্পানির আইনি প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।
ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ব্যবসার অস্তিত্ব প্রমাণে সাহায্য করে (প্রয়োজনে PayPal দেখতে চাইতে পারে)।

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম ভালোভাবে না জানলে আপনি অনেক বড় ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। আপনার টাকা যে কোন সময় আটকিয়ে যেতে পারে। যদিও পেপাল একাউন্ট খোলা বাংলাদেশে এখন অনেক সহজ এবং সুরক্ষিত। তবে এটি বাংলাদেশে অবৈধ তারপরও এটির ব্যবহার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক। পেপাল একাউন্ট খোলার জন্য কিছু সহজ স্টেপ অনুসরণ করতে হবে যা নিচে বর্ণনা করা হলো।

আপনি যেহেতু Paypal একাউন্ট তৈরি করবেন, সেহেতু প্রথমেই পেপালের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে আপনি একাউন্ট খোলার জন্য দুইটি অপশন দেখতে পাবেন। একটি হলো পেপাল পার্সোনাল একাউন্ট, অন্যটি পেপাল বিজিনেস একাউন্ট খোলার অপশন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোন একটি অপশন বেছে নিন। পার্সোনাল একাউন্ট ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য, বিজনেস একাউন্ট ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য।

১. পার্সোনাল পেপাল একাউন্ট খোলার ধাপসমূহঃ আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশে এখনো অফিসিয়াল ভাবে পেপাল সার্ভিস চালু হয়নি। তাই সরাসরি Bangladeshi ঠিকানা বা ফোন নম্বর ব্যবহার করে পেপাল অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব নয়। তবে কিছু বিকল্প পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে বিদেশি ঠিকানা ব্যবহার করে একটি Personal PayPal Account তৈরি করা যায়। এই প্রক্রিয়াটি অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট বা সাবস্ক্রিপশন এর জন্য ব্যবহার করে থাকে।

ধাপ ১ঃ পেপাল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করাঃ প্রথমে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের ব্রাউজারে গিয়ে প্রবেশ করুন: https://www.paypal.com. এটাই পেপালের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, এখান থেকেই অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ শুরু হবে। পেজটি খোলার আগে VPN ব্যবহার করে নিজেকে USA/UK/UAE লোকেশন দেখানো ভালো, যেন পেপাল ওয়েবসাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই দেশের সংস্করণ দেখায়।

ধাপ ২ঃ অ্যাকাউন্ট টাইপ নির্বাচন ও সাইন আপঃ ওয়েবসাইটে ঢোকার পর উপরের ডান পাশে Sign Up বা Sign Up for Free অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে আপনাকে দুটি অপশন দেবে: Personal Account, Business Account. পার্সোনাল একাউন্ট সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য, যারা পেমেন্ট পাঠায় বা গ্রহণ করে। বিজনেস একাউন্ট ব্যবসার জন্য, ইনভয়েস, ওয়েবসাইট ইন্টিগ্রেশন ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। আপনি যেহেতু পার্সোনাল একাউন্ট তৈরি করবেন তাই Personal Account-সিলেক্ট করে Next চাপুন।

ধাপ ৩ঃ ব্যক্তিগত তথ্য প্রদানঃ এবার আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য দিতে হবে। অবশ্যই এটি সত্য এবং আপনার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকা তথ্য হওয়া উচিত। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা পাসপোর্ট অনুযায়ী আপনার পুরা নাম, একটি Email Address যেটি আপনি রোজ ব্যবহার করেন, এবং রিকভার করতে পারেন, ও একটি Strong Password, অন্তত ৮ অক্ষর দীর্ঘ, যাতে বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং একটি বিশেষ চিহ্ন থাকে।

ধাপ ৪ঃ ঠিকানা ও ফোন নম্বরঃ এই ধাপটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পেপাল বাংলাদেশ সাপোর্ট করে না। আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন, তবে আপনাকে USA বা অন্য কোনো দেশের ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। ফোন নম্বর – USA এর একটি নম্বর দরকার হবে। USA নাম্বার পাওয়ার জন্য TextNow, Google Voice বা 2ndLine অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপগুলো ইন্টারনেট ভিত্তিক এবং ফ্রি USA নম্বর দেয়। একই নাম্বার দিয়ে বারবার ভেরিফিকেশন করা যায় না, তাই নিজের জন্য একটি রেজিস্টার করে নিন।

ধাপ ৫ঃ ইমেইল ও ফোন নম্বর ভেরিফিকেশনঃ পেপাল আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাঠাবে। সেখানে ক্লিক করলে ইমেইল কনফার্ম হয়ে যাবে। এরপর, আপনার USA নাম্বারে একটি ৬-সংখ্যার কোড পাঠানো হবে। সেই কোডটি পেপাল অ্যাকাউন্টে বসিয়ে ফোন নাম্বার ভেরিফাই করতে হবে। এটি পেপালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এটি ছাড়া অ্যাকাউন্ট চালু হবে না।  এই ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করলেই আপনার পেপাল অ্যাকাউন্ট প্রায় প্রস্তুত।

ধাপ ৬ঃ কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করাঃ এখন একটি আন্তর্জাতিক লেনদেনে উপযোগী Visa বা Mastercard যুক্ত করতে হবে। উদাহরণ- DBBL Nexus Card, EBL Visa, City Bank AMEX, অথবা Payoneer Mastercard। কার্ড নম্বর, মেয়াদ ও CVV দিয়ে যুক্ত করুন। PayPal আপনার কার্ড থেকে $1.95 কেটে একটি ৪ ডিজিটের কোড পাঠাবে। কোডটি আপনার কার্ড স্টেটমেন্ট বা মেসেজে পাওয়া যাবে। কোডটি PayPal-এ গিয়ে বসিয়ে Confirm Card সিলেক্ট করুন। এটি আপনার পরিচয় ও কার্ড যাচাইয়ের জন্য জরুরি।

২. পেপাল বিজনেস একাউন্ট খোলার ধাপসমূহঃ পেপাল বিজনেস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে। এটি আপনি বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে আপনি যদি অন্য কোনো দেশের (যেমন: USA, UK, UAE ইত্যাদি) তথ্য ব্যবহার করেন (যেমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ঠিকানা, ফোন নম্বর), তাহলে খোলা সম্ভব হয়। নিচে সাধারণ ধাপগুলো দেওয়া হলোঃ

ধাপ ১ঃ রেজিস্ট্রেশন ইন্টারফেসঃ যেহেতু পেপালের পার্সোনাল একাউন্ট বাংলাদেশ থেকে খোলা যায় না, তাই আপনি ‘Business Account’ অপশনটিতে ক্লিক করবেন। তারপর আপনার সামনে একটি রেজিস্ট্রেশন ইন্টারফেস চলে আসবে। এখানে ‘Enter your Email address’ অপশন দেখতে পাবেন। আপনি যে ইমেইল আইডি ব্যবহার করে পেপাল একাউন্ট খুলতে চান, সেটি এখানে প্রদান করবেন এবং সাইন আপ করবেন। 

তবে সেই ইমেইল আইডিতে আপনার পরিপূর্ণ একসেস ও নিরাপত্তা অবশ্যই নিশ্চিত করে নিবেন।তারপর আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। এখানে আপনি একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করবেন। পাসওয়ার্ড কোনোভাবেই গুগলে সেইভ করবেন না, সহজ ও সাধারণ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। কারণ, পেপালে আপনার অর্থ চুরির জন্য আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা ওঁত পেতে বসে আছে। কাজেই, সাইবার নিরাপত্তার সাধারণ নিয়ম অবশ্যই মেনে চলবেন।

ধাপ ২ঃ বিজিনেস কনটাক্ট ও ডিটেইলসঃ পাসওয়ার্ড সাবমিট করার পর আপনার বিজিনেস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। প্রথমেই ‘Business Contact’ জানতে চাওয়া হবে। আপনি আপনার সঠিক নাম অর্থাৎ সার্টিফিকেট/আইডি কার্ড অনুযায়ী লিগ্যাল নামটিই প্রদান করবেন। First Name জানতে চাওয়া হবে, Last Name জানতে চাওয়া হবে। এখানে যথাক্রমে আপনার নামের প্রথম অংশ ও শেষ অংশ- দুই ভাগে ভাগ করে নিয়ে তথ্য প্রদান করবেন।

তারপর আপনাকে Business Details প্রদান করতে হবে। আপনার যদি কোনো ওয়েবসাইট বা অনলাইন প্ল্যাটফরম কিংবা অনলাইন/অফলাইন কোনো ব্যবসা থাকে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার নাম ব্যবহার করবেন। সেই নাম ব্যবহার করে দুই থেকে তিন লাইন বর্ণনা করবেন সেই প্রতিষ্ঠান / ব্যবসা / ওয়েবসাইট সম্পর্কে। এটিই আপনার বিজিনেস ডিটেইলস। আর আপনার এমন ব্যবসা / ওয়েবসাইট না থাকলে, আপনি নিজের স্বাভাবিক কর্মজগত নিয়ে কয়েক লাইন বর্ণনা করে দিতে পারেন বিজিনেস ডিটেইলস হিসেবে।

তারপর আপনি বিজিনেস ফোন নম্বর প্রদান করার অপশন দেখতে পাবেন। এখানে নিজের সঠিক ফোন নম্বরটি দিবেন। এখানে যেহেতু পার্সোনাল পেপাল একাউন্টের মতো ড্রপ- আউট মেন্যু নেই, তাই বাংলাদেশ সহ যেকোনো দেশের নম্বর ব্যবহার করা যায়। তবে আপনি এমন নম্বর ব্যবহার করবেন, যেটায় আপনার একসেস রয়েছে। নম্বরটি অবশ্যই আন্তর্জাতিক ফরম্যাটে (+8801******** )লিখবেন।

এরপর আপনি Business Address দেয়ার অপশন দেখতে পাবেন। এখানে ঠিকানা লেখার জন্য দুইটি ব্ল্যাঙ্ক লাইন দেওয়া আছে। এখানে আপনার পুরো ঠিকানাটি লিখবেন। প্রথম লাইনে বাড়ি বা হোল্ডিং নম্বর, রাস্তার নাম, ওয়ার্ড বা গ্রামের নাম, ইউনিয়ন, ডাকঘর, থানা ইত্যাদি তথ্য দিতে পারেন। দ্বিতীয় লাইনে শহরের নাম, পাড়ার নাম, দেশের নাম ইত্যাদি তথ্য লিখতে পারেন।

তারপর আপনি আলাদা করে আবার শহরের নাম লিখতে হবে ‘City’ অপশনটিতে। তারপর প্রোভিন্স সিলেক্ট করতে হবে। এখানে বাংলাদেশকে খুঁজে না পেলে অন্য একটি অপশন সিলেক্ট করে দিবেন। তারপর পোস্টাল কোড অপশনে আপনার নিকটস্থ ডাকঘরের পোস্ট কোড প্রদান করবেন।

এগুলোর পূরণ করার পর পেপাল এর টার্মস এন্ড কন্ডিশানগুলো মেনে নিয়েছেন- এমনটি নিশ্চিত করতে ‘Terms and Conditions’ এর বাম পাশে টিক চিহ্ন দিবেন। আপনি চাইলে পুরো টার্মস এন্ড কন্ডিশানটি পড়তে পারেন। এতে করে আপনি Paypal ব্যবহারের সময় কোনো নিয়ম ভঙ্গ করছেন কিনা, সহজেই বুঝতে পারবেন। সময় থাকলে পড়ে নিবেন। না জানার কারণে অনেকের Paypal একাউন্ট রেস্ট্রিক্ট বা ব্লক হয়ে যায়।

ধাপ ৩: Describe your business: এসব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর আপনি ‘Describe your business’ নামে আরেকটি তথ্য ফরম দেখতে পাবেন। এখানে ‘Business type’ হিসেবে ‘Individual’ সিলেক্ট করবেন। প্রডাক্ট/সার্ভিস কীওয়ার্ড নামক ঘরটিতে দিতে পারেন ‘Business Service’। ‘What is your normal sale’ নামের ফাঁকা ঘরটিতে আপনি মিনিমাম ভ্যালু সিলেক্ট করবেন। কারণ, আপনি যেহেতু ‘ইনডিভিজুয়াল’ বা ব্যক্তিগত বিজিনেস টাইপ সিলেক্ট করেছেন, তাই সেল ভ্যালু অপশনে ড্রপ ডাউন লিস্ট থেকে সবচেয়ে ছোট এমাউন্ট সিলেক্ট করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

তারপর আপনার বিজিনেস কবে শুরু হয়েছিলো, সে ব্যাপারে একটা তারিখ দিতে বলবে। আপনার বিজিনেস না থাকলে, এই ঘরটিতে ইচ্ছে মতো একটা তারিখ বসালেই হবে। তারপর ওয়েবসাইট লিংক দেয়ার ঘর দেখতে পাবেন। এটি অপশনাল। এই ঘরটি পূরণ না করলেও কিছু আসে যায় না। তারপর ‘Submit’ বাটনে ক্লিক করবেন।

ধাপ ৪: Tell us more about you: ‘Tell us more about you’ শিরোনামে আরো একটি তথ্য ফরম দেখতে পাবেন। এখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো জানতে চাওয়া হবে। প্রথমেই আপনার সঠিক জন্ম তারিখটি প্রদান করবেন। তারপর ‘What is your occupation’ এখানে ‘Business’ সিলেক্ট করতে পারেন, অথবা প্রাসঙ্গিক অন্য যেকোনোটা সিলেক্ট করতে পারেন। তারপর হোম অ্যাডরেস সংক্রান্ত তথ্য দিতে বলা হবে। এখানে আপনি ‘Same as Business’ অপশনটি ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে বাড়ির ঠিকানা হিসেবে আলাদা ঠিকানা বা তথ্য এখানে দিতে পারেন।

এসব ধাপ সঠিকভাবে পার করে আসলে, আপনি দেখতে পাবেন- আপনার Paypal বিজিনেস একাউন্টটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। আপনি Paypal একাউন্টের ড্যাশবোর্ডটি সামনে দেখতে পাবেন। আপনার ব্যালেন্স, কাউকে টাকা পাঠানোর অপশন, একাউন্টে টাকা যোগ করার অপশন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সব সুবিধা পাবেন ড্যাশবোর্ডে।

পেপালের সাথে লোকাল ব্যাংক একাউন্ট লিঙ্ক করার নিয়ম

পেপালের সাথে লোকাল ব্যাংক একাউন্ট লিঙ্ক করা অবশ্যই জরুরি। বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার পর, ব্যাংক একাউন্ট লিঙ্ক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম বাংলাদেশে জানার পর আপনাকে একটি স্থানীয় ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হবে। কারণ এটি আপনাকে ডলার আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ করে দিবে। নিচে ব্যাংক একাউন্ট লিঙ্ক করার নিয়মগুলি বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো।

ব্যাংক তথ্য যাচাইঃ প্রথমে আপনার ব্যাংক তথ্য যাচাই করতে হবে। এ জন্য নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন
  • পেপাল অ্যাকাউন্টে লগইন করুন।
  • প্রোফাইলে যান এবং Bank Accounts অপশন সিলেক্ট করুন।
  • নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যোগ করুন।
  • আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং রাউটিং নম্বর প্রবেশ করান।
  • দাখিল করুন এবং ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু করুন।
অ্যাড ফান্ড পদ্ধতিঃ ব্যাংক তথ্য যাচাইয়ের পর, আপনি সহজেই অ্যাড ফান্ড পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন। নিচে অ্যাড ফান্ড করার কয়েকটি পদ্ধতি দেওয়া হল

  • পেপাল অ্যাকাউন্টে লগইন করুন।
  • প্রোফাইলে যান এবং Add Funds অপশন সিলেক্ট করুন।
  • আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করুন।
  • নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা অ্যাড করুন।
  • ট্রান্সফার নিশ্চিত করুন। এভাবে আপনি সহজেই আপনার পেপাল অ্যাকাউন্টে টাকা যোগ করতে পারবেন।

পেপাল অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া

পেপাল অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া বেশ সহজ। বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলা যেমনটা বেশ সহজ তেমনি ভেরিফিকেশনটাও সহজ। আপনি শুধু অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করলেন কিন্তু ভেরিফিকেশ করলেন না তাহলে আপনি কোনভাবেই ডলার আনতে পারবেন না। তারই প্রেক্ষিতে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার ধাপগুলো আলোচনা করা হলো।

ইমেইল ভেরিফিকেশনঃ

  • পেপাল একাউন্টে লগইন করুন।
  • সেটিংসে যান এবং ইমেইল সেকশনে ক্লিক করুন।
  • আপনার ইমেইল ঠিকানা লিখুন এবং ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করুন।
  • পেপাল থেকে একটি ভেরিফিকেশন ইমেইল পাবেন।
  • ইমেইলটি খুলে ভেরিফিকেশন লিংক এ ক্লিক করুন।
ফোন নম্বর যাচাইঃ ইমেইল ভেরিফিকেশনের পর, ফোন নম্বর যাচাই করতে হবে।

  • পেপাল একাউন্টে লগইন করুন।
  • সেটিংসে যান এবং ফোন সেকশনে ক্লিক করুন।
  • আপনার ফোন নম্বর লিখুন এবং ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করুন।
  • পেপাল থেকে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাবেন।
  • কোডটি লিখে সাবমিট করুন।

পেপাল একাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। আমরা যারা ফ্রিল্যান্সিং করি তাদের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম পেপাল। যদিও এটি বাংলাদেশে অবৈধ কিন্তু এটি ডলার আনার কার্যকরী একটি মাধ্যম। এই পেপালের মাধ্যমে আপনি সহজেই আন্তর্জাতিক অনলাইন পেমেন্ট করতে পারেন এবং ডলার আনতে পারেন। পেপাল একাউন্টের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে, যেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।

১. আন্তর্জাতিক লেনদেনে সুবিধাঃ পেপাল হলো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল পেমেন্ট মাধ্যম। এটি ব্যবহার করে আপনি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিশ্বের যেকোনো দেশে টাকা পাঠাতে বা গ্রহণ করতে পারেন। ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফারের মতো দীর্ঘ অপেক্ষা বা জটিলতা নেই। পেপাল ২৫টিরও বেশি মুদ্রা সাপোর্ট করে (USD, EUR, GBP, CAD, AUD, JPY ইত্যাদি)। আপনি মুদ্রা কনভার্সন করে নিতে পারেন বা বিভিন্ন কারেন্সিতে ব্যালেন্স রাখতে পারেন।

২. ট্রানজাকশন নিরাপত্তাঃ পেপালের সবচেয়ে বড় শক্তিগুলোর একটি হলো এর ট্রানজাকশন নিরাপত্তা। এটি ব্যবহারকারীদের অর্থনৈতিক তথ্য সুরক্ষিত রাখতে একাধিক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করে। পেপাল 128-bit বা তার বেশি শক্তিশালী SSL (Secure Socket Layer) এনক্রিপশন ব্যবহার করে। এর মানে হলো, আপনি যেসব তথ্য (ব্যাংক ডিটেইল, কার্ড নাম্বার, পাসওয়ার্ড) পেপালে দেন, সেগুলো হ্যাকার বা তৃতীয় পক্ষ পড়তে পারে না।

৩. ফ্রিল্যান্স ইনকাম রিসিভ করার সুযোগঃ বাংলাদেশে সরাসরি PayPal ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্স ইনকাম রিসিভ করা সীমিত, তবে কিছু কার্যকর বিকল্প আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। আপনি যদি Fiverr, Upwork, Freelancer, PeoplePerHour ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে কাজ করেন, তাহলে পেপাল দিয়েই খুব সহজে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন। কটি US Bank Account (Global Payment Service) দেওয়া হয় — যেটি দিয়ে PayPal, Amazon, Fiverr ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম থেকে টাকা নেয়া যায়। টাকা সরাসরি বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে ট্রান্সফার করা যায়।

৪. নিরাপদ ও ঝামেলাহীন লেনদেনঃ পেপালের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর Buyer Protection ও Fraud Prevention System. এটি বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন বিক্রেতা এবং আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্য খুবই কার্যকর। পেপাল আপনার সব লেনদেন SSL (Secure Socket Layer) এনক্রিপশনের মাধ্যমে সুরক্ষিত করে, যাতে হ্যাকার বা অননুমোদিত কেউ আপনার তথ্য পেতে না পারে। পেপাল প্রতিটি ট্রানজাকশন অটোমেটিকভাবে স্ক্যান করে। সন্দেহজনক কিছু হলে তা থামিয়ে দেয় এবং ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে।

৫. অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধাঃ পেপাল দিয়ে অনলাইন পেমেন্ট করা খুবই সহজ। পেপাল বিশ্বের ২০০+ দেশে ব্যবহৃত হয় এবং ২৫টির বেশি মুদ্রা সাপোর্ট করে। অনলাইনে আন্তর্জাতিক ক্রয়-বিক্রয়ে এটি খুবই কার্যকর। আপনি যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে পেমেন্ট করতে পারেন। এই সুবিধা আপনাকে দোকানে যাওয়ার প্রয়োজন কমিয়ে দেয়। এছাড়া, পেপাল একাউন্টের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা করতে পারেন।

৬. মোবাইল অ্যাপ ও সহজ ব্যবহারযোগ্যতাঃ পেপালের মোবাইল অ্যাপ আধুনিক ডিজাইন, শক্তিশালী নিরাপত্তা এবং সহজ ব্যবহারের জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। এটি এমনভাবে তৈরি, যাতে একজন নতুন ব্যবহারকারীও অনায়াসে টাকা পাঠানো, গ্রহণ এবং ট্রানজাকশন ট্র্যাক করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি ইনSTANT নোটিফিকেশন পান, এক ক্লিকে পেমেন্ট পাঠাতে পারেন, ইনভয়েস তৈরি করতে পারেন।

৭. ইনভয়েস জেনারেশন ও ট্র্যাকিং সুবিধাঃ ইনভয়েস হলো পেশাদারভাবে তৈরি একটি বিল, যা আপনি আপনার ক্লায়েন্টকে পাঠান পেমেন্টের জন্য। পেপাল ইনভয়েস তৈরির প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ, দ্রুত ও ফ্রি। ক্লায়েন্টের নাম, ইমেইল, পণ্যের নাম, দাম, শর্তাবলি ইত্যাদি দিয়ে মাত্র কয়েক ক্লিকে ইনভয়েস তৈরি করা যায়। এতে থাকবে সার্ভিস ডিটেইলস, পেমেন্ট এমাউন্ট, ডিউ ডেট ইত্যাদি যা ক্লায়েন্ট সহজেই ইনভয়েস দেখে পেমেন্ট করতে পারে।

৮. বিভিন্ন মুদ্রায় লেনদেনের সুবিধাঃ পেপাল বিশ্বের ২০০+ দেশে সেবা প্রদান করে এবং ২৫টিরও বেশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা সাপোর্ট করে। এর ফলে আপনি একাধিক মুদ্রায় সহজেই অর্থ পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারেন যা বিশ্বব্যাপী ব্যবসার জন্য একটি বিশাল সুবিধা। আপনি ডলার (USD), ইউরো (EUR), পাউন্ড (GBP), কানাডিয়ান ডলার (CAD), অস্ট্রেলিয়ান ডলার (AUD), ইত্যাদি মুদ্রায় ইনভয়েস পাঠাতে পারেন। ফলে বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টের সঙ্গে সহজেই লেনদেন করা যায়।

পেপালে ডলার আনার সহজ নিয়ম

পেপালে ডালার আনার সহজ নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন এই অংশ হতে। ডলার আনার অনেক উপায় রয়েছে কিন্তু এটি বিশ্বস্ত মাধ্যম গুলোর অন্যতম। যদিও বাংলাদেশে পেপাল এখনো পুরোপুরি কার্যকর নয়, তবে কিছু বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার বা অনলাইন আর্নাররা পেমেন্ট নিতে পারছেন। বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খুলে ডলার আনার অনেক সহজ উপায় আছে। চলুন জেনে নিই কিভাবে পেপাল একাউন্ট খুলে ডলার আনবেন।

পেপালে ডালার আনতে হলে প্রথমে আপনার একটি পেপাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। পেপাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে উপরে আলোচনা করেছি। পেপাল একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম, যার মাধ্যমে আপনি বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে ডলারসহ নানা মুদ্রায় অর্থ পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারবেনন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন, তাহলে Fiverr, Upwork, বা Freelancer.com এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।

আপনি যেসব মার্কেটপ্লেসে কাজ করেন Upwork, Fiverr, Freelancer, YouTube / AdSense, Canva Contributor, Affiliate Networks etc, সেখানে পেপাল লিঙ্ক যুক্ত করুন। এসব প্ল্যাটফর্মে আপনি PayPal Email যুক্ত করে সহজেই পেমেন্ট রিসিভ করতে পারবেন। ক্লায়েন্টকে আপনার পেপাল ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে বা পেপাল ইনভয়েস পাঠিয়ে পেমেন্ট নিতে পারবেন। ইনভয়েসে পণ্যের বিবরণ, মূল্য ও পেমেন্ট লিঙ্ক থাকবে, ক্লায়েন্ট ইনভয়েস পেয়ে সরাসরি কার্ড/পেপাল ব্যালেন্স দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবে।

পেমেন্ট আসলে আপনি ইমেইল ও অ্যাপে রিয়েল-টাইম নোটিফিকেশন পাবেন এবং আপনার ব্যালেন্সে ডলার জমা হবে। শুধু আপনার পেপালের ইমেইল দিলেই ক্লায়েন্ট আপনাকে টাকা পাঠাতে পারবে কোনো SWIFT কোড বা ব্যাংক ডিটেইলস লাগবে না। PayPal-এর ব্যালেন্স সরাসরি বাংলাদেশে তোলা যায় না, তবে আপনি Payoneer বা অন্য মাধ্যমে তা তুলতে পারেন যদি USA অ্যাকাউন্ট হয়। পেমেন্ট আসার আগে অ্যাকাউন্ট লিমিট চেক করে নিন অনেক সময় প্রথম পেমেন্টে “On Hold” থাকতে পারে পরে রিলিজ হয়ে যায়।

স্থানীয় ব্যাংক থেকে ডলার উইথড্রো করার নিয়ম

স্থানীয় ব্যাংক থেকে ডলার উইথড্রো করার নিয়ম খুবই সহজ। আপনি সরাসরি কখনোই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডলার আনতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই থার্ড পার্টি ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি বৈধ পথে ডলার আনতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। যেমন:পাসপোর্ট, ভিসা কার্ড ইত্যাদি। স্থানীয় ব্যাংকে ডলার তোলার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এখানে আমি দুইটি প্রধান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

ব্যাংক ট্রান্সফারঃ প্রথমে আপনার পেপাল একাউন্টে লগইন করুন। এরপর Withdraw অপশনে ক্লিক করুন। তারপর Link a Bank Account অপশনটি সিলেক্ট করুন। আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রদান করুন। তথ্য প্রদান করার পর, পেপাল আপনার ব্যাংক একাউন্টটি ভেরিফাই করবে। ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে, আপনি Withdraw to Bank অপশনে ক্লিক করে ডলার ট্রান্সফার করতে পারবেন। ট্রান্সফার সম্পন্ন হলে, আপনার ব্যাংক একাউন্টে ডলার জমা হবে।

এটিএম ব্যবহারঃ এটিএম ব্যবহার করেও পেপাল থেকে ডলার তোলা যায়। প্রথমে আপনার পেপাল একাউন্টের সাথে একটি আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড লিঙ্ক করুন। Link a Card অপশনে ক্লিক করে কার্ডের তথ্য প্রদান করুন। পেপাল কার্ডটি ভেরিফাই করার পর, আপনি এটিএম থেকে ডলার তুলতে পারবেন। এটিএম থেকে ডলার তোলার জন্য আপনার কার্ডটি স্থানীয় ব্যাংকের মাস্টারকার্ড বা ভিসা নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। একবার কার্ডটি সফলভাবে লিঙ্ক করা হলে, যেকোনো এটিএম থেকে ডলার তোলা সম্ভব হবে।

পেপাল একাউন্টের নিরাপত্তা বজায় রাখার উপায়

পেপাল অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি আপনার অনলাইন অর্থ ও ব্যক্তিগত তথ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে যখন ফিশিং স্ক্যাম এবং সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলে, আপনার একাউন্ট হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে থাকে। নিচে পেপাল অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বজায় রাখার উপায় ও সুবিধা বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো।

১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুনঃ পেপাল সহ যেকোনো অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেপাল অ্যাকাউন্টের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা স্তর হলো পাসওয়ার্ড। দুর্বল পাসওয়ার্ড সহজেই হ্যাকারদের হাতে পড়ে যেতে পারে। বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং বিশেষ চিহ্ন (যেমন @, #, $, %) মিলিয়ে একটি জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। কখনোই আপনার জন্মতারিখ, নাম বা সহজ অনুমানযোগ্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না।

২. দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ দুই স্তরের নিরাপত্তা বা Two-Factor Authentication (2FA) পেপাল অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এটি এক ধরনের অতিরিক্ত নিরাপত্তা যা শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্টে প্রবেশ করা বন্ধ করে দেয়। আপনি যখন পাসওয়ার্ড প্রবেশ করবেন, তখন সিস্টেম একটি দ্বিতীয় নিরাপত্তা কোড পাঠাবে (যা সাধারণত মোবাইল ফোনে বা ইমেইলে আসে)। অর্থাৎ কেউ যদি আপনার পাসওয়ার্ড জেনেও যায়, সে আপনার ফোন বা নিরাপত্তা কোড ছাড়া অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারবে না।

৩. ফিশিং ইমেইল ও ভুয়া লিংক এড়িয়ে চলুনঃ ফিশিং হচ্ছে এক ধরনের সাইবার প্রতারণা, যেখানে হ্যাকাররা আসল প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ইমেইল বা ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং আপনার পাসওয়ার্ড, কার্ড নম্বর বা অন্য গোপন তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে। আপনি একটি ইমেইল পাবেন, যা দেখতে পেপাল-এর মতো, এবং বলবে "আপনার অ্যাকাউন্ট লক হয়ে গেছে", "তথ্য আপডেট করুন", ইত্যাদি। সেখানে একটি ভুয়া লিংক থাকবে, যেটিতে ক্লিক করলে আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।পেপাল বা যেকোনো বৈধ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কখনোই ইমেইলে আপনার পাসওয়ার্ড বা ব্যাংক তথ্য চাইবে না। প্রয়োজনে সরাসরি www.paypal.com থেকে লগইন করুন।

৪. লগইন অ্যাক্টিভিটি নিয়মিত চেক করুনঃ পেপাল অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে শুধু লগইন নিরাপত্তা যথেষ্ট নয়, আপনার টাকা কোথায় যাচ্ছে বা আসছে তা নিয়মিত নজরে রাখা জরুরি। হ্যাকার বা প্রতারক আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ক্ষতি করছে কিনা, তা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ট্রানজ্যাকশন হিস্টোরি ও অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভিটি রিভিউ করা। সময়মতো সন্দেহজনক প্রবেশ শনাক্ত করতে পারলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়। মাসে অন্তত একবার লগইন করে “Activity” ট্যাবে গিয়ে সব লেনদেন চেক করুন। যদি কোনো সন্দেহজনক ট্রানজ্যাকশন দেখেন, সঙ্গে সঙ্গে Report করুন।

৫. ব্যাকআপ ইমেইল যুক্ত করুনঃ আপনার পেপাল অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা ও অ্যাক্সেস বজায় রাখতে ব্যাকআপ ইমেইল যুক্ত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি বিশেষভাবে কার্যকর যখন আপনি পাসওয়ার্ড ভুলে যান বা অ্যাকাউন্টে অনধিকার প্রবেশের চেষ্টা হয়। ব্যাকআপ ইমেইল যুক্ত করার পরে পাসওয়ার্ড বা 2FA সেটিংস পুনরায় চেক করে নিশ্চিত হন। যদি কোনো অজানা ডিভাইস বা আইপি থেকে লগইন হয়, তখন পেপাল ব্যাকআপ ইমেইলে সতর্কতা পাঠাবে। প্রতি তিন মাসে একবার ব্যাকআপ ইমেইল চেক করুন এবং দেখুন সেটি সক্রিয় এবং আপনি নিয়মিত অ্যাক্সেস করতে পারছেন কি না। 

৬. নিরাপদ ডিভাইস ও ব্রাউজার ব্যবহার করুনঃ আপনার পেপাল অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বজায় রাখতে নিরাপদ ডিভাইস এবং নিরাপদ ব্রাউজার ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি আপনার পেপাল অ্যাকাউন্টে লগইন বা ট্রানজ্যাকশন করেন, তখন আপনি যে ডিভাইস বা ব্রাউজার ব্যবহার করছেন, সেটি সুরক্ষিত ও আপডেটেড থাকা জরুরি। সঠিক ডিভাইস এবং ব্রাউজার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়ার, ফিশিং অ্যাটাক, এবং হ্যাকিং থেকে রক্ষা পেতে পারেন। সুরক্ষিত ব্রাউজারগুলির মধ্যে Google Chrome, Mozilla Firefox, Microsoft Edge অন্যতম। এগুলো নিয়মিত সিকিউরিটি আপডেট পেয়ে থাকে।

পেপাল অ্যাকাউন্টের ট্রানজাকশন ফি এবং চার্জ

পেপাল একাউন্ট খোলার পর, পেপাল অ্যাকাউন্টের ট্রানজাকশন ফি এবং চার্জ সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। PayPal ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের লেনদেনের জন্য বিভিন্ন হারে ফি কাটা হয়। ফি নির্ভর করে আপনি কী ধরণের লেনদেন করছেন — পণ্য বা সেবা, ব্যক্তিগত ট্রান্সফার, আন্তর্জাতিক লেনদেন, কারেন্সি রূপান্তর, অথবা উইথড্রয়াল। নিচে বিস্তারিতভাবে পেপাল অ্যাকাউন্টের ট্রানজাকশন ফি এবং চার্জ সম্পর্কে সবগুলো তুলে ধরা হলো:

১. পণ্য ও সেবা লেনদেনের ফিঃ যখন আপনি পেপাল ব্যবহার করে কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রি করেন যেমন- অনলাইন শপ, ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস ইত্যাদি তখন এটিকে কমার্শিয়াল ট্রানজ্যাকশন বলা হয়। এই ধরণের লেনদেনে পেপাল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সার্ভিস চার্জ/ফি কেটে রাখে।

  • আন্তর্জাতিক ক্রেতা হলেঃ যদি আপনার ক্রেতা আপনার দেশের বাইরে থেকে পেমেন্ট পাঠান (যেমনঃ আপনি বাংলাদেশে, ক্রেতা USA বা UK-তে), তাহলে ফি হবে মোট লেনদেনের ৫% (সর্বনিম্ন $0.99 এবং সর্বোচ্চ $4.99) । উদাহরণঃ আপনি যদি $100 আয় করেন, পেপাল ৫% = $5 কেটে নেবে। কিন্তু যেহেতু সর্বোচ্চ সীমা $4.99, তাই আপনার ফি হবে $4.99।
  • দেশীয় লেনদেন হলেঃ যখন আপনি এবং আপনার ক্রেতা একই দেশের মধ্যে থাকেন এবং পেপালের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা লেনদেন করেন, তখন এটিকে ডোমেস্টিক (Domestic) ট্রানজ্যাকশন বলা হয়। এই ধরনের লেনদেনে পেপাল একটি ভিন্ন ফি কাঠামো প্রযোজ্য করে যা আন্তর্জাতিক লেনদেনের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। উদাহরণঃ আপনি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন এবং কারো কাছ থেকে পেপালের মাধ্যমে $100 USD পেলেন, ফি হবে $2.90 + $0.30 = $3.20, আপনি পাবেন $96.80, অন্যান্য দেশের জন্য হার আলাদা হতে পারে, যেমন UK, EU, Canada ইত্যাদি।
২. ব্যক্তিগত লেনদেনের ফিঃ ব্যক্তিগত লেনদেন অর্থাৎ “Friends & Family” পেমেন্ট এমন একটি লেনদেন যেখানে কোনো পণ্য বা সার্ভিস কেনাবেচা হয় না। বরং এটি শুধুমাত্র বন্ধু, পরিবার বা পরিচিতজনকে টাকা পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন: উপহার, পারিবারিক সহায়তা, ঋণ পরিশোধ ইত্যাদি।

  • দেশীয় ব্যক্তিগত লেনদেনঃ যখন আপনি পেপালের মাধ্যমে একই দেশের ভেতরে বন্ধু বা পরিবারের সদস্যকে ব্যক্তিগত কারণে টাকা পাঠান তখন এটি নির্ভর করে আপনি কীভাবে পেমেন্ট পাঠাচ্ছেন।পেপাল ব্যালেন্স বা লিঙ্ক করা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠালে কোনো ফি নেই। উদাহরণঃ আপনি USA-তে থাকেন এবং পেপাল ব্যালেন্স থেকে বন্ধুকে $100 পাঠালেন, প্রাপক পুরো $100 পাবেন। ডেবিট কিনবা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পাঠালে ফি হবে ২.৯% + নির্দিষ্ট ফিক্সড ফি।
  • আন্তর্জাতিক ব্যক্তিগত লেনদেনঃ যখন আপনি PayPal ব্যবহার করে একজন ভিন্ন দেশের বন্ধু বা পরিবারের সদস্যকে টাকা পাঠান (Friends & Family), তখন এটিকে বলা হয় আন্তর্জাতিক ব্যক্তিগত লেনদেন। এই ক্ষেত্রে PayPal সাধারণত লেনদেনের মোট পরিমাণের ৫% ফি কেটে নেয়, সর্বনিম্ন ফি: $০.৯৯, সর্বোচ্চ ফি: $৪.৯৯। এই ফি প্রযোজ্য হয় যখন আপনি PayPal ব্যালান্স বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ পাঠান। যদি আপনি ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা PayPal Credit ব্যবহার করে অর্থ পাঠান, তাহলে অতিরিক্ত ২.৯% + একটি নির্দিষ্ট মুদ্রার উপর ভিত্তি করে ফি প্রযোজ্য হবে।
৩. কারেন্সি রূপান্তর ফিঃ যখন আপনি PayPal-এর মাধ্যমে এমন কাউকে অর্থ পাঠান বা গ্রহণ করেন, যার মুদ্রা আপনার মুদ্রার সাথে ভিন্ন, তখন PayPal একটি কারেন্সি রূপান্তর ফি কেটে নেয়। এই ফি অনেকেই বুঝতে পারেন না কারণ এটি সরাসরি ট্রান্সফার অ্যামাউন্ট থেকে কাটা না হয়ে রূপান্তরিত রেটের মধ্যেই লুকানো থাকে। PayPal রিয়েল মার্কেট এক্সচেঞ্জ রেট (mid-market rate) থেকে কিছুটা কম রেট দিয়ে টাকা রূপান্তর করে এবং সেই পার্থক্যের মধ্যেই তারা কারেন্সি কনভার্শন ফি নেয়।

আপনি যদি USD থেকে EUR, BDT বা অন্য কোনো মুদ্রায় লেনদেন করেন, পেপাল এক্সচেঞ্জ রেটের সাথে একটি অতিরিক্ত ফি যুক্ত করে। PayPal মুদ্রা রূপান্তরের জন্য একটি নির্দিষ্ট শতাংশ ফি চার্জ করে, যা সাধারণত ৩% থেকে ৪.৫% পর্যন্ত হতে পারে। এই ফি PayPal-এর নির্ধারিত বিনিময় হারের উপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়। উদাহরণঃ আপনি যদি $100 রূপান্তর করেন, তার প্রকৃত মূল্য হতে পারে $96 এর মতো। তাই আপনার যদি অন্য কারেন্সিতে টাকা প্রয়োজন হয়, তাহলে সস্তা রেটের জন্য Wise বা Revolut মত বিকল্প বিবেচনা করাতে পারেন।

৪. উইথড্রয়াল ফিঃ PayPal থেকে টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট কার্ড, বা অন্য মাধ্যমে তুলতে গেলে নির্দিষ্ট কিছু ফি কাটা হতে পারে। ফি নির্ভর করে আপনি কোন দেশে আছেন, কোন মাধ্যম ব্যবহার করছেন, এবং আপনার অ্যাকাউন্ট টাইপ কী (ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক) তার উপর। যদি আপনি আপনার PayPal ব্যালেন্স থেকে একটি লিঙ্ক করা ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে অর্থ উত্তোলন করেন,

তাহলে উত্তোলিত পরিমাণের ১% ফি প্রযোজ্য হবে। সর্বনিম্ন ফিঃ ২২.০০ BDT, এবং সর্বোচ্চ ফিঃ ৮৮০.০০ BDT, এই হারগুলি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য এবং মুদ্রার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। যদি উত্তোলনের সময় মুদ্রা রূপান্তর প্রয়োজন হয়, তাহলে অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য হবে লেনদেনের পরিমাণের ৩% থেকে ৪.৫% পর্যন্ত। এই ফি PayPal-এর নির্ধারিত বিনিময় হারের উপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়।

শেষকথাঃ বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম

সম্প্রতি, PayPal বাংলাদেশে তাদের সেবা চালু করার বিষয়ে আলোচনা করেছে, বিশেষ করে SpaceX-এর ডিজিটাল পেমেন্ট সাপোর্টের অংশ হিসেবে। যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তবে বাংলাদেশে PayPal-এর সেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি PayPal অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব নয়। তবে, বৈধভাবে মার্কিন কোম্পানি গঠন করে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করে PayPal Business Account খোলা যায়।

এছাড়া, Wise বা OneSafe-এর মতো বিকল্প সেবা ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক লেনদেন পরিচালনা করা সম্ভব। ভবিষ্যতে PayPal বাংলাদেশে তাদের সেবা চালু করলে, সরাসরি অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং পেপালে ডলার আনার নিয়ম এখন খুবই সহজ। সঠিক নির্দেশনা মেনে চললে আপনি সহজেই সফল হবেন। এই পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজ হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url