মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়-উপকারিতা জেনে নিন
মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন। তবে কোথাও কোন
সঠিক তথ্য না পেয়ে বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন। মাল্টিভিট প্লাস একপ্রকার ভিটামিন জাতীয় ট্যাবলেট, যেটি আমাদের শরীরের স্বাস্থ্য
বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিনের চাহিদা মেটাতেও
সাহায্য করে।
আপনাদের মধ্যে অনেকেই শরীর মোটা করার জন্য মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট সেবন করে থাকেন। তবে এটা কি আসলেই শরীর মোটা করে? যদি না
জেনে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয় ও মাল্টিভিট প্লাস এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
- মাল্টিভিট প্লাস কি
- মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
- মাল্টিভিট প্লাস এর উপাদান
- মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর উপকারিতা
- মালটিভিট প্লাস খাওয়ার নিয়ম
- মাল্টিভিটামিন সিরাপ খেলে কি হয়
- মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট কখন খেতে হয়
- মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- মালটিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর দাম কত
- শেষকথাঃ মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
মাল্টিভিট প্লাস কি
মাল্টিভিট প্লাস একটি ভিটামিন ও মিনারেল সম্পূরক, যা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি
সরবরাহ করতে সহায়তা করে। এই ট্যাবলেটটিতে প্রায় সকল ধরনের ভিটামিন উপস্থিত
রয়েছে, যার কারণে এটি শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে থাকে। যাদের
শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে তারা কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ধরনের
মাল্টিভিট প্লাস জাতীয় ভিটামিন ট্যাবলেট গুলো সেবন করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ লাইসিভিন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা
এটি এক প্রকার সাপ্লিমেন্ট, প্রায় সকল ধরনের ভিটামিন এর সমন্বয়ে এই
ট্যাবলেটটি তৈরি করা হয়েছে।যার কারণে একে মাল্টিভিটামিন বলা হয়ে থাকে।
প্রতিটি মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেটে ভিটামিন-A, D, B1, B2, B6, B12, C, E,
ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম প্যান্টোথেনেট ও খনিজ উপাদান-আয়রন,
জিঙ্ক, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়োডিন রয়েছে। এই উপাদানগুলো শরীরের
পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করে এবং বিভিন্ন শারীরিক প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য।
মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়, মূলত এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্যই
আজকের আর্টিকেলটি লিখা। মালটিভিট প্লাস খেলে সাধারণত মোটা হওয়া যায় না,
কারণ এটি একটি ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট, যা মূলত শরীরে ভিটামিন ও
খনিজের ঘাটতি পূরণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি কোন মোটা হওয়ার বা ওজন
বৃদ্ধির ঔষধ নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে ওজন বাড়তে পারে, নির্ভর করে কিছু
নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপরঃ
ক্ষুধা বৃদ্ধি করেঃ কিছু মাল্টিভিটামিন, (বিশেষ করে যেগুলিতে
ভিটামিন B কমপ্লেক্স বা জিংক থাকে) ক্ষুধা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে খাবার
বেশি খাওয়া হয়, আর ওজন বাড়ে। আপনার হজমতন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্র যদি দুর্বল
থাকে, তাহলে খাবারের প্রতি অনীহা থাকে। মালটিভিটের ভিটামিন B কমপ্লেক্স সেই
দুর্বলতা দূর করে। শরীর যদি অপুষ্টিতে ভোগে, তখন মালটিভিট খাওয়ার ফলে শরীর
তার ঘাটতি পূরণ করতে চায়, এতে ক্ষুধা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লাগতে পারে।
পুষ্টির অভাব পূরণ করেঃ মাল্টিভিট প্লাস এক ধরনের
মাল্টিভিটামিন ও মাল্টিমিনারেল সাপ্লিমেন্ট যা শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন ও
খনিজের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। যদি পুষ্টির ঘাটতির কারণে শরীর দুর্বল
থাকে, তাহলে এই ট্যাবলেটটি সেবন করলে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হতে পারে এবং
শরীরের স্বাভাবিক ওজন পুনরায় ফিরে আসতে পারে। পুষ্টির অভাব হলে বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা যেমন- ক্লান্তি, দুর্বলতা, ক্ষুধামান্দ্য, ঘনঘন অসুস্থ হওয়া,
চুল পড়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, মনোযোগের ঘাটতি হতে
পারে।মালটিভিট প্লাস এসব উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে শরীরকে স্বাভাবিক
কার্যকারিতায় ফিরিয়ে আনে।
শরীরের সঠিক মেটাবলিজম ফিরে পাওয়াঃ মালটিভিট প্লাস শরীরের সঠিক
মেটাবলিজম (Metabolism) ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। মেটাবলিজম হলো শরীরের সেই
প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে খাবারকে শক্তিতে রূপান্তর করে, কোষে প্রয়োজনীয়
উপাদান সরবরাহ করে ও অতিরিক্ত শক্তি সঞ্চিত রাখে। এতে থাকা B-complex,
Zinc, Magnesium, Iron ইত্যাদি উপাদান খাদ্য হজম ও শক্তি উৎপাদনে সহায়ক।
ফলে শরীরের কোষগুলো আবার স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। আপনি আগে দুর্বল
ছিলেন বা খাবারে অনীহা ছিল, মালটিভিট খাওয়ার পর শরীরের মেটাবলিজম স্বাভাবিক
হয়ে ওজন কিছুটা বাড়তে পারে।
তাহলে দেখতে পেলেন এই মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট খেলে কখনোই সরাসরি শরীর
মোটা হয় না, উল্লেখিত কারণে শরীর স্বাভাবিক মোটা হতে পারে। কিন্তু এটি
স্থায়ী নয়, অর্থাৎ ট্যাবলেট খেলে স্থায়ীভাবে ওজন বাড়ানো বা মোটা হওয়া
যায় না। যদি আপনি ট্যাবলেট সেবন করা ছেড়ে দেন, সেক্ষেত্রে আবার পুনরায়
আপনার ওজন কমতে শুরু করবে। তাই বলা যায় মাল্টিভিট প্লাস খেলে মোটা হওয়া
যায় না।
তবে সবচেয়ে ভালো হয় প্রাকৃতিক ভাবে মোটা হওয়া, আপনি বেশি বেশি পুষ্টিকর
খাবার খেয়ে মোটা হতে পারেন বা ওজন বাড়াতে পারেন। এভাবে মোটা হলে কোন
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তবে ওষুধ সেবনে সরাসরি মোটা হলে
বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে দেখা দিতে পারে। এজন্য যেকোনো
ওষুধ সেবন করার পূর্বে সরাসরি রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের নিকট পরামর্শ করে সেবন
করবেন।
মাল্টিভিট প্লাস এর উপাদান
মালটিভিট প্লাস একটি সুষম মাল্টিভিটামিন ও মাল্টিমিনারেল সাপ্লিমেন্ট, যা
শরীরের ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। এটি বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ
উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত, যা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর উপাদানসমূহ শরীরের স্বাভাবিক বিপাক ক্রিয়া,
রক্তকণিকা উৎপাদন, টিস্যু মেরামত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং
স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
উপাদানসমূহ, প্রতি ট্যাবলেটেঃ
ভিটামিনঃ
ভিটামিন A (রেটিনল) – 1.50 মি.গ্রা
ভিটামিন D – 10.00 মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন B1 (থায়ামিন) – 1.50 মি.গ্রা
ভিটামিন B2 (রিবোফ্লাভিন) – 1.70 মি.গ্রা
ভিটামিন B6 (পাইরিডক্সিন) – 2.00 মি.গ্রা
নিয়াসিনামাইড (ভিটামিন B3) – 20.00 মি.গ্রা
ভিটামিন B12 (সায়ানোকোবালামিন) – 6.00 মাইক্রোগ্রাম
ক্যালসিয়াম প্যান্টোথেনেট (ভিটামিন B5) – 10.92 মি.গ্রা
ফোলিক অ্যাসিড (ভিটামিন B9) – 0.40 মি.গ্রা
ভিটামিন C (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড) – 60.00 মি.গ্রা
ভিটামিন E – 15.00 IU
ভিটামিন D – 10.00 মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন B1 (থায়ামিন) – 1.50 মি.গ্রা
ভিটামিন B2 (রিবোফ্লাভিন) – 1.70 মি.গ্রা
ভিটামিন B6 (পাইরিডক্সিন) – 2.00 মি.গ্রা
নিয়াসিনামাইড (ভিটামিন B3) – 20.00 মি.গ্রা
ভিটামিন B12 (সায়ানোকোবালামিন) – 6.00 মাইক্রোগ্রাম
ক্যালসিয়াম প্যান্টোথেনেট (ভিটামিন B5) – 10.92 মি.গ্রা
ফোলিক অ্যাসিড (ভিটামিন B9) – 0.40 মি.গ্রা
ভিটামিন C (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড) – 60.00 মি.গ্রা
ভিটামিন E – 15.00 IU
খনিজ উপাদানসমূহঃ
ফেরাস সালফেট (লোহা) – 50.00 মি.গ্রা
কাপরিক সালফেট (তামা) – 2.00 মি.গ্রা
ম্যাঙ্গানিজ সালফেট – 1.00 মি.গ্রা
জিংক সালফেট (দস্তা) – 37.03 মি.গ্রা
পটাশিয়াম আয়োডাইড – 196.00 মাইক্রোগ্রাম
পটাশিয়াম সালফেট – 11.141 মি.গ্রা
কাপরিক সালফেট (তামা) – 2.00 মি.গ্রা
ম্যাঙ্গানিজ সালফেট – 1.00 মি.গ্রা
জিংক সালফেট (দস্তা) – 37.03 মি.গ্রা
পটাশিয়াম আয়োডাইড – 196.00 মাইক্রোগ্রাম
পটাশিয়াম সালফেট – 11.141 মি.গ্রা
মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর উপকারিতা
মালটিভিট প্লাস ট্যাবলেটের উপকারিতা অনেক, কারণ এটি একটি মাল্টিভিটামিন ও
মাল্টিমিনারেল সাপ্লিমেন্ট। আপনি যদি মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট সেবন করতে চান
সেক্ষেত্রে অবশ্যই মালটিভিট প্লাস এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। এটি
শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণ করে শরীরকে আরও সক্রিয়, স্বাস্থ্যবান ও রোগ
প্রতিরোধী করে তোলে। নিচে মালটিভিট প্লাস ট্যাবলেটের প্রধান উপকারিতাগুলো
ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো:
- মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেটটি শরীরের শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। মূলত যাদের শরীরের দুর্বল তারা চাইলে শরীরের দুর্বলতা কমাতে এই ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।
- তাছাড়াও শরীরে ভিটামিনের অভাব থাকলে মালটিভিট প্লাস ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। এটি শরীরের সকল ধরনের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
- এতে থাকা Vitamin A, C, D, E, B-complex ও Iron, Zinc ইত্যাদি শরীরের ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণ করে। যারা অনিয়মিত বা অপুষ্টিকর খাবার খান, তাদের জন্য খুবই উপকারী।
- আবার শরীরের শক্তি বাড়ানোর জন্য এই ট্যাবলেট খেতে পারেন। যাদের শরীরের শক্তি কম অর্থাৎ শরীর দুর্বল তারা এই ট্যাবলেট খেয়ে দেহের শক্তি বাড়াতে পারেন।
- এতে থাকা Vitamin B1, B6, B12 ও Zinc হজম শক্তি বাড়ায় এবং ক্ষুধা উদ্দীপিত করে। দুর্বলতা, অরুচি বা খাবারে আগ্রহ না থাকলে এটি কার্যকর।
- শরীরে ক্লান্তি ভাব দূর করতে মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট সহায়তা করে থাকে, যারা সারাদিন কাজকর্ম করার সময় শরীরের দুর্বলতা অনুভব করেন তারা রেগুলার এই ট্যাবলেটটি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সেবন করতে পারেন।
- Vitamin A, C, E, Biotin (B7) ও Zinc ত্বক ও চুলের কোষ গঠন ও মেরামতে সাহায্য করে। চুল পড়া, ত্বকের রুক্ষতা বা ব্রণ সমস্যা কমাতে সহায়ক।
- এই ট্যাবলেট ভিটামিন এ রয়েছে যার কারণে এটি আমাদের চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। ভিটামিন এ চোখের রেটিনা ভালো রাখতে সাহায্য করে। এজন্য আপনারা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এই ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।
- মালটিভিট ট্যাবরেটে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেটি শরীরের ভিটামিন বি এর সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ করে। আর ভিটামিন বি এর অভাবজনিত রোগ সমূহ নিরাময় করতে সহায়তা করে।
- উক্ত ট্যাবলেটটি সেবন করলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কারণ এই ট্যাবলেট ত্বকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরি করে, যার কারণে ত্বক রোগমুক্ত ও ভালো থাকে।
- এছাড়াও ট্যাবলেটটি শরীরের জিংকের চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করে। তবে এই ট্যাবলেট গ্রহণ করলে আপনারা যারা জিংক এর অভাব জনিত রোগে ভুগছেন তা নিরাময় করতে পারবেন।
- মাল্টিভিট প্লাস হাড়ের পেশী টিস্যু ভালো রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে হার্টের টিস্যুর জন্য অনেক উপকারী।
- থাইরয়েড গ্রন্থির বিকাশ ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। কারণ এই ট্যাবলেটের আয়োডিন রয়েছে। আয়োডিন থাইরয়েড গ্রন্থির বিকাশ ও থাইরক্সিন হরমোন গঠনে সহায়তা করে থাকে।
- মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট এ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যার কারণে এটি আপনি বিভিন্ন রোগের সমস্যায় সেবন করতে পারেন, এই ট্যাবলেটের ভিটামিন এ রয়েছে। চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই সাপ্লিমেন্ট ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন।
- ভিটামিন বি এর অভাবজনিত রোগ নিরাময় করতে এই ট্যাবলেটটি সহায়তা করে থাকে।
- Vitamin C, D, E ও Zinc শরীরকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ঘন ঘন অসুস্থ হওয়া বা ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়ক।
উল্লেখিত উপকারিতা গুলো মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট থেকে পেতে পারেন। এছাড়া আরও
অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যাবে। কারণ এই ট্যাবলেট প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও
মিনারেল রয়েছে। ট্যাবলেটটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন এবং পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া থেকে দূরে থাকুন।
মালটিভিট প্লাস খাওয়ার নিয়ম
মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে, যা আমরা এখন জানানোর
চেষ্টা করব। শরীরের সঠিক বৃদ্ধির জন্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং
প্রতিদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণে মালটিভিট প্লাস একটি উপকারী মাল্টিভিটামিন
সাপ্লিমেন্ট। যা শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণে
সহায়ক। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্যও
উপযোগী।
সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিন, তারাই সবকিছু নিয়মকানুন বলে দিবে।
প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য প্রতিদিন মাত্র ১টি ট্যাবলেট
যথেষ্ট। খাবারের পর মালটিভিট প্লাস সেবন করাই সর্বোত্তম। খাওয়ার পর এটি গ্রহণ
করলে পেটে অস্বস্তি বা গ্যাসের সমস্যা কম হয় এবং শরীর আরও ভালোভাবে ভিটামিন ও
খনিজ উপাদানগুলো শোষণ করতে পারে। ট্যাবলেটটি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি অথবা গরম
দুধের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
এতে ট্যাবলেট সহজে গিলে নেওয়া যায় এবং হজমও ভালো হয়। যদিও মালটিভিট প্লাস
দীর্ঘমেয়াদে সেবন নিরাপদ, তবুও নিজের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী এটি চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেবন করাই উত্তম। এতে করে আপনি নিশ্চিত
হতে পারবেন যে আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন নিচ্ছেন না। অতিরিক্ত ট্যাবলেট
ও সিরাপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন, আর সুস্থ থাকুন।
মাল্টিভিটামিন সিরাপ খেলে কি হয়
মাল্টিভিটামিন সিরাপ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান
সরবরাহ করে, যা স্বাভাবিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক সুস্থতা
বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে যখন আপনার খাবারে
পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান না থাকে বা শরীর অতিরিক্ত চাহিদা অনুভব করে যেমন:
অসুস্থতা, অপুষ্টি, গর্ভাবস্থা ইত্যাদির সময়। নিচে মাল্টিভিটামিন সিরাপ
খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করেঃ যারা সুষম খাদ্য গ্রহণে ব্যর্থ হন বা
নির্দিষ্ট পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে, তাদের জন্য মাল্টিভিটামিন সিরাপ সহায়ক হতে
পারে। বয়স্কদের মধ্যে খাবারে ভিটামিন শোষণের হার কমে যায়। মাল্টিভিটামিন
সিরাপ শরীরের সামগ্রিক পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে শরীরকে সুস্থ, সক্রিয় ও
রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। তবে, এটি “খাদ্য বিকল্প” নয়, সুষম খাদ্যই
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাল্টিভিটামিন হলো একটি সহায়ক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ মাল্টিভিটামিন সিরাপ রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউন সিস্টেম) বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
মাল্টিভিটামিন সিরাপে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শরীরের প্রতিরক্ষা
ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে, যার ফলে সংক্রমণ (জ্বর, ঠান্ডা, কাশি) কম হয়,
ক্ষত দ্রুত শুকায় ও শরীর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ সহজে প্রতিরোধ করতে
পারে। মাল্টিভিটামিন সিরাপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি ভালো
সাপ্লিমেন্ট। তবে মনে রাখতে হবে এটি ঔষধ নয়, বরং সহায়ক পুষ্টি।
ত্বক ও চুলের যত্নেঃ মাল্টিভিটামিন সিরাপ শুধু শরীরের ভিতরের
স্বাস্থ্যই নয়, ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য এবং স্বাস্থ্য ঠিক রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে। ভিটামিন A, C এবং E ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং চুলের
বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মাল্টিভিটামিন সিরাপ চুল এবং ত্বকের জন্য একটি চমৎকার
সাপ্লিমেন্ট, যদি আপনি এটি নিয়মিত এবং সঠিকভাবে গ্রহণ করেন স্বাস্থ্যকর
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের সঙ্গে মিলিয়ে। এটি চুল পড়া কমাতে, ত্বককে উজ্জ্বল
রাখতে ও বয়সজনিত ত্বকের সমস্যায় সহায়তা করে।
শিশুদের জন্য সহায়কঃ শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশে মাল্টিভিটামিন
সিরাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, বিশেষ করে যদি তাদের
খাদ্যতালিকায় পুষ্টির ঘাটতি থাকে। শিশুদের জন্য মাল্টিভিটামিন সিরাপ বেছে
নেওয়ার সময় তাদের বয়স ও পুষ্টির চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচন করা উচিত।
উদাহরণস্বরূপ, Seven Seas Multi-vitamin Syrup এবং Boot বাচ্চাদের ডেইলি হেলথ
মাল্টিভিটামিন সিরাপ শিশুদের জন্য উপযুক্ত বিকল্প হতে পারে।
মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট কখন খেতে হয়
মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট সেবনের সঠিক সময় নির্ভর করে আপনার শরীরের চাহিদা,
খাদ্যাভ্যাস এবং সাপ্লিমেন্টের ধরন অনুযায়ী। মাল্টিভিটামিনে থাকা ভিটামিন A,
D, E ও K — এগুলো ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন। অর্থাৎ, এই ভিটামিনগুলো ঠিকভাবে
শোষিত হতে হলে শরীরে সামান্য চর্বি থাকা দরকার। তাই দুপুর বা রাতের খাবারের
পর সেবন করাই উত্তম। এতে শরীর ভালোভাবে উপাদানগুলো শোষণ করতে পারে।
খালি পেটে মাল্টিভিটামিন খেলে অনেকের বমি ভাব, পেট ব্যথা বা গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা হতে পারে। তাই এই সময়ে এড়িয়ে চলা ভালো। সকালের খাবারের পর
মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা অনেকের জন্য সুবিধাজনক, কারণ এটি দৈনন্দিন রুটিনের
অংশ হিসেবে সহজে মনে রাখা যায়। তবে যদি আপনার সকালের খাবারে পর্যাপ্ত চর্বি
না থাকে, তাহলে দুপুর বা রাতের খাবারের সঙ্গে সেবন করাও উপযুক্ত, কারণ
সাধারণত এই খাবারগুলোতে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও চর্বি থাকে।
মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট সাধারণত একটি নিরাপদ মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট
হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এবং বেশিরভাগ মানুষ এটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সেবন
করতে পারেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যদি মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া হয়
বা দেহে নির্দিষ্ট উপাদানের অতিরিক্ত মাত্রা থেকে যায়। মাল্টিভিট প্লাস
ট্যাবলেটটি যদি অতিরিক্ত সেবন করেন সেক্ষেত্রে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
দেখা দিতে পারে।
- মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের পেটে হালকা গ্যাস, অম্বল বা বমি বমি ভাব হতে পারে।
- কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বা শুষ্কতা দেখা দিতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে হালকা ও সাময়িক হয়।
- অতিরিক্ত ট্যাবলেট সেবন করার ফলে মাথা ঘোরা ও হাইপারটেনশন জনিত সমস্যা হতে পারে।
- মাল্টিভিট প্লাসের মধ্যে থাকা কোনো ভিটামিন, খনিজ বা অ্যাডিটিভের প্রতি শরীরের অস্বাভাবিক সংবেদনশীলতা বা এলার্জি হতে পারে। বিশেষ করে যাদের অন্য কোনো খাদ্য বা ওষুধের প্রতি এলার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।
মালটিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর দাম কত
মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেটের দাম বাংলাদেশে ভিন্ন ভিন্ন অনলাইন ফার্মেসিতে
কিছুটা পরিবর্তিত হতে দেখা যায়। এই ট্যাবলেটটি সাধারণত ৩০ পিসের বোতলে
পাওয়া যায়। প্রতি পিস মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট এর দাম ২.৫০ টাকা। ৩০টি
ট্যাবলেটের প্যাকের মূল্য ৭৫ টাকা। বিভিন্ন ফার্মেসির দোকানে ট্যাবলেটটির
দাম একটু কমবেশি হতে পারে। সর্বশেষ দাম জানতে সরাসরি ফার্মেসির দোকানে
গিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
- MedEx ওয়েবসাইটে প্রতি ট্যাবলেটের মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৳২.৫০, ফলে একটি ৩০ ট্যাবলেটের বোতলের দাম দাঁড়ায় ৳৭৫.০০।
- eEssentials-এ এই একই বোতলের দাম পাওয়া যায় ৳৫৪.০০ টাকায়।
- MShopBD-তে কিছুটা ছাড়ে পাওয়া যায়, প্রায় ৳৫১.৩০ দামে।
- ePharma প্ল্যাটফর্মেও বোতলটির দাম ধরা হয়েছে ৳৫৪.০০।
- আর MediLink-এ প্রতি ট্যাবলেট বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৳১.৮০ দামে।
তবে মনে রাখতে হবে, এই দামে সাময়িক অফার, প্রমোশনাল ডিসকাউন্ট বা
ডেলিভারির খরচ যুক্ত হতে পারে। তাই সবচেয়ে সঠিক ও আপডেটেড দাম জানতে
আপনার নিকটস্থ ফার্মেসিতে খোঁজ নিন, অথবা বিশ্বস্ত অনলাইন ফার্মেসি থেকে
দেখে নিতে পারেন।
শেষকথাঃ মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
মাল্টিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয় ও মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট সম্পর্কে
বিস্তারিত সকল তথ্যগুলো আর্টিকেলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
করেছি। মাল্টিভিট প্লাস ট্যাবলেট নিজে থেকে ওজন বৃদ্ধি করে না, কারণ এটি
একটি পুষ্টি সম্পূরক, ওজন বাড়ানোর ওষুধ নয়। তবে এর মধ্যে থাকা কিছু
উপাদান ক্ষুধা বাড়াতে পারে, যার ফলে কেউ কেউ বেশি খাওয়া শুরু করেন এবং
সময়ের সঙ্গে ওজন সামান্য বাড়তে পারে। তবে এটি সরাসরি মোটা করার ওষুধ নয়।
স্বাস্থ্য উন্নত হলে শরীর কিছুটা ভারী বা সুগঠিত হতে পারে, কিন্তু এটিকে
মোটা হওয়া বলা যায় না।
মাল্টিভিট প্লাস খেলে শরীর দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠে, হজমশক্তি ও ক্ষুধা বাড়ে।
অপুষ্টিতে ভোগা বা খেতে না চাওয়া মানুষের জন্য এটি উপকারী, কারণ এটি
খাওয়ার আগ্রহ বাড়ায়। তবে যারা স্বাভাবিক ওজনের, তারা যদি দীর্ঘদিন
অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতায় যান, তখন কিছুটা ওজন বাড়তেই পারে। একে "মোটা
করার ওষুধ" বলা ভুল হবে। বরং এটি পুষ্টি পূরণে সহায়ক একটি সাপ্লিমেন্ট।
যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ওজন বাড়াতে চান, তাদের জন্য সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য,
পর্যাপ্ত ঘুম, এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে বিশেষ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ
করা উত্তম।
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url