ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়


ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়, এই প্রশ্নটি অনেকের মনে ঘুরপাক খায়, বিশেষ করে যারা ওজন বাড়াতে চান বা স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত থাকেন। ইউনিজাইম সিরাপ খেয়ে কি মোটা হওয়া যায় ও ইউনিজাইম সিরাপ এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এখনই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
ইউনিজাইম-সিরাপ-খেলে-কি-মোটা-হওয়া-যায়
বর্তমানে আমরা কমবেশি সকলেই মোটা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি। তবে মনে রাখা উচিত সব ধরনের ঔষধ খেলে মোটা হওয়া যায় না। অনেকেই আমরা মোটা হওয়ার জন্য ইউনিজাইম সিরাপ খেয়ে থাকি। যা মূলত শুধুমাত্র মোটা হওয়ার ওষুধ নয়, এই ওষুধটি খাবারের প্রতি রুচি বাড়াতে ও শরীরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়

ইউনিজাইম কি

ইউনিজাইম (Unienzyme) একটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ওষুধ, যা হজম সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত খাবার হজমে সহায়তা করে এবং পেটে গ্যাস, ফোলাভাব, বা অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি একটি ক্ষুধা উদ্দীপক (ক্ষুধা বৃদ্ধি করে) যা কার্যকরভাবে অ্যাসিড বদহজম (অম্বল), পেট ফাঁপা (গ্যাস), এপিগ্যাস্ট্রিক যন্ত্রণা (উপরের পেটে ব্যথা), এবং ক্ষত (বার্পিং) এর চিকিৎসা করে।
এছাড়াও ইউনিজাইম সিরাপ অগ্ন্যাশয়ের অপ্রতুলতা (অগ্ন্যাশয় এনজাইম তৈরি করতে অক্ষমতা) এবং পেটের অস্বস্তি উপশম করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মূলত একটি হজম এনজাইম ও কারমিনেটিভ (গ্যাস দূরকারী) ঔষধ, যার দুটি প্রধান উপাদান হলো ডাইজেস্টিভ এনজাইম (প্রধানত পেপসিন এবং ফাঙ্গাল ডায়াস্টেজ) এবং সিমেথিকন। ইউনিজাইম ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায়। এর উপাদানসমূহ ও কাজঃ

  • ফাঙ্গাল ডায়াস্টেজঃ এটি একটি হজম এনজাইম, যা প্রধানত কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে সাহায্য করে। এটি খাওয়ার পর দেহে শর্করা জাতীয় খাদ্য সহজভাবে ভেঙে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়, ফলে হজম সহজ হয়।
  • পেপসিনঃ এটি একটি প্রোটিন-ভেঙে-ফেলা এনজাইম, যা পেটের মধ্যে প্রোটিনকে সহজ করে অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিণত করে। পেপসিন প্রাকৃতিকভাবে আমাদের পাকস্থলীতে উৎপন্ন হয়, কিন্তু যখন হজমের সমস্যা হয়, তখন অতিরিক্ত পেপসিন সাহায্য করতে পারে।
  • সিমেথিকনঃ এটি একটি অ্যান্টি-ফ্ল্যাটুলেন্স ওষুধ, যা পেটে জমে থাকা অতিরিক্ত গ্যাস ভেঙে ছোট ছোট বুদবুদে রূপান্তর করে এবং সহজে বের হতে সহায়তা করে। এটি বেলচা, গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং অস্বস্তি কমাতে কার্যকর।

ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়

ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়, এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় ইউনিজাইম সিরাপ খেলে মোটা হওয়া যায় না। অর্থাৎ আপনি এই ইউনিজাইম সিরাপ খেলে সরাসরি মোটা হতে পারবেন না। ইউনিজাইম সাধারণত খাবার হজমে সাহায্য করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি শরীরে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এনজাইমগুলিকে অনুকরণ করে। অনেকেই এই ধরনের ভুল ধারণা পোষণ করেন, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ইউনিজাইম সিরাপ মূলত হজমের সমস্যা, গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং অ্যাসিডিটির মতো উপসর্গ দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এটি প্যাপেইন, ডায়াস্টেজ এবং অ্যাক্টিভেটেড চারকোলের মতো উপাদান দিয়ে তৈরি, যা খাবার হজমে সহায়তা করে এবং পেটের অস্বস্তি কমায়। এই সিরাপ ওজন বৃদ্ধি করার জন্য তৈরি নয়। তবে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হলে শরীর পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে শোষণ করতে পারে, যা কিছু ক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।

ইউনিজাইম হজমের উন্নতি করে, ফলে শরীর খাবার থেকে পুষ্টি উপাদান আরও ভালোভাবে শোষণ করতে পারে। এর ফলে ওজন কিছুটা বাড়তে পারে, কিন্তু এটি চর্বি জমার কারণে নয়, বরং শরীরের মাসল মাসের বৃদ্ধির কারণে। ওজন বৃদ্ধির অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, যেমন খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা, হরমোনজনিত সমস্যা ইত্যাদি। ইউনিজাইমকে এর জন্য দায়ী করা ঠিক হবে না। এই সিরাপটি শুধুমাত্র আপনার মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।

তবে একটা কথা বলা যায় এই সিরাপ গ্রহণের ফলে আপনার মুখে খাবার খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে আপনি বেশি বেশি খেতে থাকবেন। এর ফলে আপনার শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে এবং আপনি সামান্য মোটা হতে পারেন। তাহলে বুঝতে পারছেন এই সিরাপ সরাসরি শরীর মোটা করতে সাহায্য করে না। আপনি যখন সিরাপ খাবেন আপনার খাবারের প্রতি রুচি বাড়বে এবং আপনি বেশি খাবার খেলে আপনার স্বাস্থ্য বেড়ে যাবে।

তবে এটি প্রত্যক্ষভাবে ওজন বাড়ানোর ওষুধ নয়। ওজন বাড়াতে চাইলে সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে, পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওজন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা উচিত। ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহারের আগে, বিশেষ করে যদি আপনি গর্ভবতী, স্তন্যদানকারী মা, বা অন্য কোনো ওষুধ গ্রহণ করছেন, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আশা করছি, ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়, এ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ইউনিজাইম সিরাপের উপকারিতা

ইউনিজাইম সিরাপের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। ইউনিজাইম সিরাপ খেলে শরীরের বেশ কিছু উপকারিতা হয়। ইউনিজাইম সিরাপ একটি হজম সহায়ক সিরাপ যা খাবার হজমে সহায়তা করে। এই সিরাপটি শরীরে প্রায় বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে খাবারের অনীহা দূর করতে সাহায্য করে। ইউনিজাইম সিরাপের উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
১. হজম শক্তি বাড়ায়ঃ ইউনিজাইম সিরাপ একটি হজম সহায়ক (digestive enzyme) সিরাপ যা খাবার হজমে সহায়তা করে। এটি মূলত দুইটি প্রধান এনজাইম Diastase, Pepsin দিয়ে তৈরি। এই দুইটি এনজাইম আমাদের দেহে খাদ্য হজমে প্রাকৃতিকভাবে কাজ করে থাকে। এর ফলে হজমে সহায়ক এনজাইমগুলো শরীরে খাবার ভাঙার কাজ দ্রুত করে ফেলে। দেহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি (nutrition) ভালোভাবে শোষণ করতে পারে। পেটে ভার ভাব, অম্বল, গ্যাস ইত্যাদি হ্রাস পায়, ধীরে ধীরে ক্ষুধা বাড়ে এবং খাবার খেতে মন চায়। নিয়মিত খাওয়াদাওয়া এবং হজম ভালো থাকলে শরীর স্বাভাবিকভাবে শক্তি ও ওজন ধরে রাখতে পারে।

২. গ্যাস, অম্বল ও পেট ফাঁপা কমায়ঃ ইউনিজাইম সিরাপ গ্যাস, অম্বল ও পেট ফাঁপা কমাতে কার্যকর হতে পারে, বিশেষ করে যদি এগুলোর মূল কারণ হয় হজমের সমস্যা বা হজমজনিত এনজাইমের ঘাটতি। হজম না হওয়া খাবার অন্ত্রে জমে গিয়ে গ্যাস তৈরি করে। ইউনিজাইমে থাকা Diastase ও Pepsin খাবার দ্রুত ভেঙে ফেলে, ফলে গ্যাস কম তৈরি হয় ফলে পেটের চাপ, ঢেকুর বা অস্বস্তি হ্রাস পায়। হজম ধীরগতিতে হলে পাকস্থলীতে অ্যাসিড জমে থাকে, যা অম্বলের কারণ হয়। ইউনিজাইম খাবার দ্রুত হজম করতে সহায়তা করে বলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ব্যবহার হয় এবং অম্বলের সমস্যা কমে।

৩. অরুচি বা ক্ষুধামন্দা কমায়ঃ ইউনিজাইম সিরাপ অরুচি বা ক্ষুধামন্দা কমাতে সহায়ক, বিশেষ করে যখন অরুচির পেছনে কারণ থাকে হজমের সমস্যা বা হজম-সংক্রান্ত দুর্বলতা। অরুচির মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-খাবার ভালোভাবে হজম না হওয়া, পাকস্থলীতে গ্যাস জমে থাকা, অম্বল বা পেটে ভার ভাব, দীর্ঘদিন রোগে ভুগে দুর্বল হয়ে পড়া, পরিপাক এনজাইমের ঘাটতি, দুশ্চিন্তা, ক্লান্তি বা মানসিক চাপ ইত্যাদি। ইউনিজাইম সিরাপে থাকা Diastase ও Pepsin খাবার দ্রুত ভাঙতে সাহায্য করে ফলে পাকস্থলীতে খাবার জমে থাকে না, অস্বস্তিও হয় না। পেট ফাঁপা, ভার ভাব বা ঢেকুর বন্ধ হলে স্বাভাবিকভাবে খিদে বাড়ে। হজম ঠিক হলে দেহ খাবার চায়, ফলে ক্ষুধা বাড়ে এবং অরুচি কমে।

৪. ডায়াজেস্টিভ ডিসঅর্ডার কমায়ঃ ইউনিজাইম সিরাপ ডায়াজেস্টিভ ডিসঅর্ডার (Digestive Disorders) বা হজমসংক্রান্ত গোলযোগ কমাতে সহায়ক। ডায়াজেস্টিভ ডিসঅর্ডার বলতে হজম-সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যাকে বোঝায়-গ্যাস্ট্রিক বা অম্বল, বদহজম, পেট ফাঁপা, ঢেকুর, পেট ভার, খাবার হজমে দেরি হওয়া, গ্যাস ও পেটে চাপ, ক্ষুধামন্দা বা অরুচি, পেট ব্যথা বা পায়খানার অনিয়ম। ইউনিজাইম সিরাপ Diastase কার্বোহাইড্রেট হজমে সহায়তা করে ও Pepsin প্রোটিন হজমে সাহায্য করে, ফলে পাকস্থলীতে খাবার জমে থাকে না-পেট ফাঁপা, ভার ভাব ও গ্যাস কমে। খাবার হজম হলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ব্যবহার হয়ে যায়-কমে অ্যাসিডিটির সমস্যা হজম ভালো হলে রুচি বাড়ে, নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়।

৫. পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করেঃ ইউনিজাইম সিরাপ পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে, বিশেষ করে যদি হজম সংক্রান্ত এনজাইমের ঘাটতির কারণে সমস্যা হয়ে থাকে। পাচনতন্ত্র (Digestive System) মূলত খাদ্য গ্রহণ করে তা ভেঙে পুষ্টি উপাদানে রূপান্তর করে এবং বর্জ্য শরীর থেকে বের করে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন এনজাইম, পাকস্থলীর রস এবং অন্ত্রের গতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইউনিজাইম সিরাপ পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে, হজম শক্তি বাড়ায় এবং গ্যাস, অম্বল, ফাঁপা ও অরুচির মতো সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। হজম ভালো হলে দেহ সহজে ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটিন শোষণ করতে পারে, ফলে দুর্বলতা, ক্লান্তি বা অরুচি কমে।

৬. জীবনশৈলীর সমস্যাজনিত হজমে উপকারীঃ ইউনিজাইম সিরাপে থাকা উপাদানগুলো যেমন-ডায়াস্টেজ, প্যাপেইন, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল, এসব উপাদান জীবনযাপন-সংক্রান্ত কারণে তৈরি হওয়া হজম সমস্যার উপশমে কার্যকর। অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে সৃষ্ট (অনিয়মিত খাওয়া, বেশি ফাস্ট ফুড খাওয়া বা অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া খেলে হজমে যে সমস্যা হয় তা কমাতে সাহায্য করে) হজম সমস্যায় সহায়ক, যেমন গ্যাস, অম্বল, পেট ফাঁপা, ও অরুচি। তবে তা সাময়িক সমাধান, স্থায়ীভাবে হজমশক্তি ভালো রাখতে চাইলে জীবনযাত্রার সঠিকতা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঘন ঘন এই ধরনের সিরাপ ব্যবহার না করে মূল জীবনধারার উন্নতি করাই উত্তম।

ইউনিজাইম সিরাপের মূল উপাদান

ইউনিজাইম সিরাপ একটি হজম সহায়ক ওষুধ, যা খাদ্য হজমে সাহায্য করে এবং পেটে অস্বস্তি, গ্যাস, বদহজম ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়। ইউনিজাইম সিরাপটিতে দুটি পাচক এনজাইম রয়েছে, যথা- ডায়াস্টেস এবং পেপসিন। ডায়াস্টেস হলো একটি স্টার্চ হাইড্রোলাইজিং এনজাইম যা জটিল কার্বোহাইড্রেট ভেঙে সরল কার্বোহাইড্রেট তৈরি করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, পেট পূর্ণতা, পেট ফাঁপা এবং বদহজমের ক্ষেত্রে হজমকে উৎসাহিত করে।
অন্যদিকে, পেপসিন হলো একটি প্রোটিন-হজমকারী এনজাইম যা বৃহত্তর প্রোটিন অণুগুলিকে প্রোটিনের ছোট ইউনিটে (অ্যামিনো অ্যাসিড) ভেঙে দিতে সাহায্য করে। পেপসিন খাদ্যে থাকা প্রোটিন অণুসমূহকে ভেঙে ছোট পেপটাইড ও অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিণত করে। এটি পাকস্থলীতে থাকা গ্যাস্ট্রিক জুসের (যার pH খুব অ্যাসিডিক) সহায়তায় সক্রিয় হয় এবং প্রোটিন হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এইভাবে একসাথে, ইউনিজাইম সিরাপ হজমের ব্যাধি এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় সহায়তা করে।

ইউনিজাইম সিরাপ এর ব্যবহার

ইউনিজাইম সিরাপ মূলত হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার প্রতিকারে ব্যবহৃত হয়। এতে থাকা ইউনিজাইম সিরাপ হজমে সহায়তা করে এমন একটি কার্যকর ওষুধ, যা প্রধানত ডায়াস্টেস ও পেপসিন এনজাইমের মাধ্যমে শর্করা ও প্রোটিন হজমে সাহায্য করে। এটি বদহজম, পেট ফাঁপা, ক্ষুধামান্দ্য, এবং পেটের অস্বস্তি দূর করতে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়। ইউনিজাইম সিরাপ এর বিস্তারিত ব্যবহার নিম্নরূপঃ

হজম সহায়কঃ ইউনিজাইম সিরাপ সাধারণত খাদ্য উপাদান ভেঙ্গে এবং পুষ্টির শোষণ সমর্থন করে হজমশক্তি বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এটি হজমজনিত ব্যাধিগুলির সম্মুখীন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। এতে থাকে হজমশক্তি বাড়ানো এনজাইম যেমন ডায়াস্টেজ (Diastase) ও পেপসিন (Pepsin), যা খাবার ভেঙে পেটে সহজে হজম হয়। খাবার দ্রুত হজম হওয়ায় বদহজম, গ্যাস, অম্বল, পেট ফাঁপা কমে। হজম ঠিক থাকলে ক্ষুধাও ভালো থাকে, ফলে অরুচি দূর হয়।

গ্যাস এবং পেট ফাঁপাঃ গ্যাস ও পেট ফাঁপা হলো হজম সংক্রান্ত সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা, যা অনেকেই ভোগেন। এগুলো হতে পারে খারাপ খাবার, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, স্ট্রেস বা পাচনতন্ত্রের দুর্বলতার কারণে। ইউনিজাইম সিরাপ ফোলাভাব, গ্যাস এবং বদহজমের মতো উপসর্গগুলি উপশম করতে সাহায্য করে। এটি পাচনতন্ত্রকে প্রশমিত করে, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলির সাথে যুক্ত অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়।

ক্ষুধা উদ্দীপকঃ ইউনিজাইম সিরাপ ক্ষুধা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে, বিশেষ করে যখন ক্ষুধা কমে যাওয়ার কারণ হয় হজমের সমস্যার কারণে। হজমশক্তি বাড়ানোর ফলে খাবার পাকস্থলীতে কম জমে, ফলে শরীর ভালোভাবে পুষ্টি শোষণ করে।হজম ভালো হলে শরীরের খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। যাদের ক্ষুধা কম বা অসুস্থতা থেকে সেরে উঠছে তাদের জন্য ইউনিজাইম সিরাপ সুপারিশ করা যেতে পারে। এটি ক্ষুধাকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক সুস্থতায় অবদান রাখে।

খাবার পর পেট ভার লাগা বা পেটে চাপ অনুভবঃ খাবার পর পেট ভার লাগা বা পেটে চাপ অনুভব অনেকেরই হয়, যা মূলত হজমের সমস্যা বা বদহজমের লক্ষণ। এটা হয় যখন খাবার পাকস্থলীতে সঠিকভাবে হজম না হয়ে জমে থাকে বা গ্যাস তৈরি হয়। খাবার পর পেট ভার বা চাপ অনুভব হলে ইউনিজাইম সিরাপ বা ট্যাবলেট হজমে সহায়তা করে, গ্যাস ও অম্বল কমায়, ফলে পেট হালকা ও আরামদায়ক হয়। ইউনিজাইমে থাকা এনজাইমগুলো খাবার দ্রুত ভেঙে হজমে সাহায্য করে, ফলে পাকস্থলী হালকা থাকে।

অস্ত্রোপচারের পরে পুনরুদ্ধারের সময় সহায়তাঃ অস্ত্রোপচারের পরে শরীরের দ্রুত পুনরুদ্ধার ও সুস্থতার জন্য সঠিক যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্ত্রোপচারের পরে অনেক সময় রোগীর হজমশক্তি কমে যায় বা ক্ষুধা কমে যায়। ইউনিজাইম সিরাপ হজম প্রক্রিয়া সহজ করে, ফলে খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শরীর ভালোভাবে শোষণ করতে সাহায্য করে। সার্জারির পর ক্ষুধা কমে গেলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ইউনিজাইম ক্ষুধা বাড়িয়ে শরীরের শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। অপারেশনের পর গ্যাস বা পেট ফাঁপা হয়ে থাকলে ইউনিজাইম তা কমায়, আরাম দেয়।

ইউনিজাইম সিরাপ কিভাবে কাজ করে

ইউনিজাইম সিরাপটিতে দুটি পাচক এনজাইম রয়েছে, যথা- ডায়াস্টেস এবং পেপসিন। ডায়াস্টেজ (Diastase) হলো এক ধরনের পাচন এনজাইম, যা মূলত শর্করা (কার্বোহাইড্রেট) ভাঙার কাজ করে।এটি একটি এমাইলেজ এনজাইম (Amylase enzyme) যা শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, আলু ইত্যাদি থেকে স্টার্চকে সরল চিনি (ম্যাল্টোজ, গ্লুকোজ) এ পরিণত করে। হজমের জন্য ডায়াস্টেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যারা শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খান।

অন্যদিকে, পেপসিন হলো একটি প্রোটিন-হজমকারী যা এনজাইম বৃহত্তর প্রোটিন অণুগুলিকে প্রোটিনের ছোট ইউনিটে (অ্যামিনো অ্যাসিড) ভেঙে দিতে সাহায্য করে। পেপসিন পাকস্থলীর (স্টম্যাক) অম্লীয় পরিবেশে সক্রিয় থাকে। এটি প্রোটিনকে ছোট ছোট পেপটাইডে ভেঙে দেয়, যা পরবর্তীতে আরও ছোট অণুতে হজম হয়। এইভাবে একসাথে, ইউনিজাইম সিরাপ হজমের ব্যাধি এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় সহায়তা করে।

ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহারে সতর্কতা

ইউনিজাইম সিরাপ হজম সহায়ক একটি জনপ্রিয় ওষুধ, যা ফাঙ্গাল ডায়াস্টেজ এবং পেপসিন নামক দুটি প্রধান এনজাইমের সংমিশ্রণে তৈরি। এটি হজমের সমস্যা যেমন-গ্যাস, বদহজম, পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে। যদিও এটি সাধারণত নিরাপদ ও কার্যকর, তবুও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অযথা বা অতিরিক্ত ব্যবহারে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

আপনার যদি অগ্ন্যাশয়ের (তীব্র প্যানক্রিয়াটাইটিস) ফোলা/প্রদাহের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনার চিকিত্সককে এটি সম্পর্কে জানান। ইউনিজাইম সিরাপ এর ওরাল সিরাপ ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত কারণ এতে সুক্রোজ থাকতে পারে, পরিবর্তে, আপনি চিনি-মুক্ত ফর্মুলেশন চেষ্টা করতে পারেন। আপনার মাথা উঁচু করে (কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি) ঘুমালে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের লক্ষণগুলি হ্রাস পেতে পারে।

আপনি যদি বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন তবে প্রোবায়োটিক, প্রিবায়োটিক এবং প্রচুর পরিমাণে তরল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ইউনিজাইম সিরাপ বুকের দুধে নিঃসৃত হয় কিনা তা জানা নেই। সুতরাং, গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানো মহিলাদের যথাযথ পরামর্শ এবং সতর্কতার সাথে ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহার করা উচিত। এই অবস্থায় শরীরের হরমোন ও বিপাকক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে, ফলে সিরাপের উপাদান শরীর ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করতে পারে।

অ্যালকোহল সেবন এবং ধূমপান পাকস্থলীকে আরও অ্যাসিড তৈরি করতে পারে, যার ফলে অম্বল হতে পারে, তাই চিকিত্সার সময় এর ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। যদি আপনি ডায়াস্টেজ, পেপসিন বা ইউনিজাইম সিরাপের অন্যান্য উপাদানের প্রতি অ্যালার্জিক হন, তবে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। অ্যালার্জির লক্ষণ যেমন-ত্বকে র‍্যাশ, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, মুখ বা গলা ফুলে যাওয়া দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ওষুধ বন্ধ করে চিকিৎসা নিতে হবে।

ইউনিজাইম সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ইউনিজাইম সিরাপ সাধারণত নিরাপদ একটি হজম সহায়ক ওষুধ, তবে যেকোনো ওষুধের মতো এরও কিছু সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (side effects) হতে পারে, বিশেষ করে যদি অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয় বা কেউ যদি কিছু নির্দিষ্ট উপাদানে অতিসংবেদনশীল (allergic) হন। কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সিরাপ সেবন করার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পরে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ইউনিজাইম সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো জেনে নিই।

  • পেটের সমস্যাঃ কখনো কখনো সিরাপ খাওয়ার পরে হালকা বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। বিশেষ করে যদি মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া হয়, তবে ডায়রিয়া হতে পারে। হজমে সহায়তা করার পরিবর্তে কারও কারও মধ্যে পেটে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে।
  • অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়াঃ কিছু মানুষের শরীর ইউনিজাইম সিরাপের কোনো একটি উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে। চুলকানি, র‍্যাশ, ত্বকে লালচে দাগ, ঠোঁট বা মুখ ফুলে যাওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া ইত্যাদি। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত ব্যবহারজনিত সমস্যাঃ ইউনিজাইম সিরাপ দীর্ঘদিন বা মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করলে দেহের প্রাকৃতিক এনজাইম উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এতে ভবিষ্যতে দেহ স্বাভাবিকভাবে হজমে সমস্যা অনুভব করতে পারে, কারণ শরীর বাইরের উৎসের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
  • মাথা ঘোরা বা দুর্বলতাঃ বিরল ক্ষেত্রে ইউনিজাইম সিরাপ সেবনের পর হালকা মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা ঘুম ঘুম ভাব দেখা দিতে পারে।
  • অপরিপাকজাত উপসর্গঃ কারো কারো ক্ষেত্রে হজম-প্রক্রিয়ার অতিরিক্ত উত্তেজনা দেখা দিতে পারে, ফলে অস্বাভাবিক খিদে লাগা বা অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন হতে পারে।
  • ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়াঃ যারা একাধিক ওষুধ সেবন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে ইউনিজাইম সিরাপের কিছু উপাদান অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। যেমন- অ্যান্টাসিড, অ্যান্টিবায়োটিক বা পেইনকিলার সেবনের সময় ইউনিজাইম খেলে সমস্যা হতে পারে।

ইউনিজাইম সিরাপ এর দাম

ইউনিজাইম সিরাপের দাম বিভিন্ন অনলাইন ফার্মেসি ও বিক্রেতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। ইউনিজাইম সিরাপ হজমের সমস্যা সমাধানে একটি কার্যকর ও সহজলভ্য ওষুধ। এর দাম বিভিন্ন বিক্রেতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই কেনার আগে বিভিন্ন উৎস থেকে দাম যাচাই করা বুদ্ধিমানের কাজ। সঠিক ব্যবহার ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করলে এটি হজমের সমস্যা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
ইউনিজাইম-সিরাপ-এর-দাম
স্থানভেদে ইউনিজাইম সিরাপের দাম ভিন্ন হতে পারে, যা স্থানীয় ফার্মেসি বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নির্ভর করে। সাধারণত, বাংলাদেশে ইউনিজাইম সিরাপের দাম ৩১০ টাকা। তবে বিভিন্ন ওষুধের দোকানে দামের কমবেশি পার্থক্য দেখা দিতে পারে। আপনারা বাজারে ওষুধ দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। তাছাড়া অনলাইন এর মাধ্যমে এই সিরাপ অর্ডার করতে পারবেন। তবে সঠিক দাম জানতে স্থানীয় ফার্মেসিতে যোগাযোগ করা উত্তম।

ইউনিজাইম সিরাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর 

১. প্রশ্নঃ  ইউনিজাইম সিরাপ কি জন্য ব্যবহার করা হয়?

উত্তরঃ ইউনিজাইম সিরাপ পরিপাক রোগ, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, ক্ষুধা উদ্দীপনা, অগ্ন্যাশয়ের অপ্রতুলতা, এবং ক্ষরণের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২. প্রশ্নঃ  ইউনিজাইম সিরাপ কিভাবে কাজ করে?

উত্তরঃ ইউনিজাইম সিরাপ এর মধ্যে রয়েছে ডায়াস্টেস এবং পেপসিন। ডায়াস্টেস হল একটি স্টার্চ হাইড্রোলাইজিং বা অ্যামাইলোলাইটিক এনজাইম যা স্টার্চকে সরল শর্করায় (মল্টোজ) ভেঙে দেয়। পেপসিন হল একটি প্রোটিওলাইটিক এনজাইম (প্রোটিন-পাচনকারী) যা বড় প্রোটিন অণুগুলিকে ছোট পেপটাইডে (অ্যামিনো অ্যাসিডের একটি ছোট চেইন) ভেঙে দেয়। অন্ত্র

৩. প্রশ্নঃ  ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহার করার সময় কোন পরিস্থিতিতে আমার সতর্ক থাকা উচিত?

উত্তরঃ ইউনিজাইম সিরাপ (উনিয়েঞ্জইমে) শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারকে জানান ওষুধের প্রতি আপনার অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া এবং অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহের ইতিহাস থাকলে।

৪. প্রশ্নঃ  আমি কি ডায়াবেটিস হলে ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহার করতে পারি?

উত্তরঃ ইউনিজাইম সিরাপ ডায়াবেটিক রোগীদের সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত কারণ এতে সুক্রোজ থাকতে পারে। ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহার করার আগে আপনার চিকিত্সকের সাথে পরামর্শ করার এবং আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনার চিকিত্সক আপনাকে চিনি-মুক্ত ফর্মুলেশনের পরামর্শ দিতে পারেন।

৫. প্রশ্নঃ  আমার উপসর্গ উপশম হলে আমি কি ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহার করা বন্ধ করতে পারি?

উত্তরঃ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কোর্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনি ভাল বোধ করলেও ইউনিজাইম সিরাপ ব্যবহার বন্ধ করবেন না। আপনার উপসর্গের উন্নতি হতে পারে, কিন্তু রোগটি পুরোপুরি নিরাময় নাও হতে পারে।

শেষ কথাঃ ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়

ইউনিজাইম সিরাপ সরাসরি মোটা হওয়ার কোনো ঔষধ নয়। তবে যারা দীর্ঘদিন হজমের সমস্যায় ভুগে ওজন হারিয়েছেন, তাদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে, কারণ এটি হজমক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। যারা অরুচি, বদহজম বা গ্যাসে ভোগেন, তাদের খাওয়া-দাওয়া কমে যায় এবং ওজন কমে যেতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে যদি কেউ ইউনিজাইম সিরাপ গ্রহণ করেন এবং তার ফলে খাওয়ার রুচি বাড়ে ও হজম ভালো হয়।

ফলে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি শোষণ করতে পারে এবং এতে শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক ওজনে ফিরে আসতে পারে। তবে একে মোটা হওয়ার ঔষধ বলা ভুল হবে। ইউনিজাইম সিরাপে এমন কোনো উপাদান নেই যা সরাসরি চর্বি বা ওজন বাড়িয়ে দেয়। এটি কোনো স্টেরয়েড, হরমোন বা ক্যালোরি-বৃদ্ধিকারক ওষুধ নয়। শুধুমাত্র হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে সহায়তা করে। তাই এটি খাওয়ার কারণে স্বাভাবিক অবস্থায় কেউ মোটা হয় না। 

কিছু মানুষ ইউনিজাইম খেয়ে খিদে বেশি পেতে পারেন এবং সে অনুযায়ী বেশি খাওয়া শুরু করেন। অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করলে, স্বাভাবিকভাবেই ওজন বাড়তে পারে। কিন্তু এটি ওষুধের কারণে নয়, বরং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ফল। আশা করছি আপনি, ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায় ও ইউনিজাইম সিরাপ কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url