ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি-জেনে নিন

ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি এ বিষয়ে জানতে অনেকের আগ্রহের শেষ নেই।ফেসবুক ও ইউটিউব দুটি প্লাটফর্মই এখন বেশ পরিচিত। আর এখানে ইনকামের সুযোগ থাকায় এই দুটি প্লাটফর্মে ক্রিয়েটরদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে ফেসবুক থেকে পুরোনো মাধ্যম ইউটিউব।
ফেসবুক-নাকি-ইউটিউব-কোনটিতে-আয়-বেশি
ফেসবুকে মনিটাইজেশনের জন্য ব্যবহার করা হয় স্টার্স, ইন-ভিডিও পারচেস এবং ব্র্যান্ড কোলাবোরেশন। তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফেসবুকে প্রতি ১০ লাখ ভিউয়ে আয় হয় গড়ে মাত্র ২৫০-২৬০ ডলার। এছাড়া মনিটাইজেশন চালু করতে হলে কমপক্ষে ১০ হাজার পেজ লাইক এবং শেষ ৬০ দিনে অন্তত ৩০ হাজার মিনিট ভিউ থাকা আবশ্যক।

ইউটিউব তুলনামূলকভাবে পুরোনো এবং প্রতিষ্ঠিত প্ল্যাটফর্ম। এখানে ক্রিয়েটররা আয় করতে পারেন ইন-স্ট্রিম অ্যাড, স্পনসরশিপ, সুপার চ্যাট ডোনেশন এবং চ্যানেল মেম্বারশিপের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে একই ১০ লাখ ভিউ থেকে আয় হয় প্রায় ২ হাজার ডলার বা তারও বেশি। ইউটিউবে মনিটাইজেশনের শর্ত হলো অন্তত ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ৪ হাজার ঘণ্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ করা, পাশাপাশি ভিডিও হতে হবে সম্পূর্ণ নিজস্ব।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি

ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি

বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনেকেই অনলাইনে আয়ের জন্য ফেসবুক এবং ইউটিউবকে বেছে নিচ্ছেন। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে দুটি প্ল্যাটফর্মের আয়ের ধরন ও সুযোগগুলো বোঝা জরুরি। ইউটিউব হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স, যা ভিডিও ভিউ ও ওয়াচ টাইমের উপর নির্ভর করে স্থায়ী আয় নিশ্চিত করে।
আপনার ভিডিও যত বেশি ভিউ এবং ওয়াচ টাইম পাবে, তত বেশি বিজ্ঞাপন দেখানো হবে এবং সেখান থেকে স্থায়ী ইনকাম তৈরি হবে। ইউটিউবের CPM (Cost per Mille) সাধারণত ফেসবুকের তুলনায় বেশি, বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা বা গ্লোবাল অডিয়েন্স থাকলে ইনকাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। এ ছাড়া ইউটিউব থেকে ব্র্যান্ড প্রোমোশন, স্পনসরশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুযোগও অনেক বেশি।

অন্যদিকে, ফেসবুকের মনেটাইজেশন সিস্টেম তুলনামূলক নতুন। এখানে ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, রিলস বোনাস, ফ্যান সাবস্ক্রিপশন ইত্যাদির মাধ্যমে আয় করা যায়। ফেসবুকে দ্রুত ভিউ পাওয়া সহজ হলেও বাংলাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলে CPM কম হওয়ায় একই ভিউতে ইউটিউবের চেয়ে আয়ের পরিমাণ কম হয়। তবে যারা শর্ট ভিডিও বা ভাইরাল কনটেন্ট তৈরি করেন, তাদের জন্য ফেসবুক আয়ের ভালো মাধ্যম হতে পারে।

সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়, যদি দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী ও বেশি ইনকাম চান তাহলে ইউটিউব সেরা প্ল্যাটফর্ম। আর যদি দ্রুত গ্রোথ এবং স্বল্পমেয়াদি ইনকাম চান, তবে ফেসবুকও ভালো অপশন। তাই ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি, এর উত্তর হলো, স্থায়ী আয়ের জন্য ইউটিউব এবং দ্রুত ভিউ ও ফলোয়ার পেতে ফেসবুক উপযোগী।এই বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, সঠিক পরিকল্পনা এবং কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী আপনি যেকোনো প্ল্যাটফর্ম থেকেই সফলভাবে আয় করতে পারেন।

ফেসবুকে আয় করার উপায় বনাম ইউটিউব

বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনলাইনে আয়ের জন্য ফেসবুক এবং ইউটিউব দুটোই জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে ফেসবুকে আয় করার উপায় বনাম ইউটিউব কোনটি বেশি লাভজনক। দুটো প্ল্যাটফর্মের আয়ের সুযোগ এবং কনটেন্ট ধরন আলাদা হওয়ায় এ বিষয়টি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী আয়ের জন্য ইউটিউব সেরা, দ্রুত অডিয়েন্স বৃদ্ধির জন্য ফেসবুক কার্যকর। নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
১. ইউটিউব থেকে আয়ের উপায়ঃ ইউটিউব হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে আয়ের প্রধান উৎস হলো গুগল অ্যাডসেন্স। ভিডিওর ভিউ এবং ওয়াচ টাইম অনুযায়ী বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ইউটিউব থেকে স্পনসরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ড প্রোমোশন করে আয়ের সুযোগ থাকে। গ্লোবাল অডিয়েন্স থাকলে CPM (Cost per Mille) বেশি হওয়ায় আয়ের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। তাই যারা দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী আয়ের লক্ষ্য রাখেন, তাদের জন্য ইউটিউব সবচেয়ে উপযুক্ত।

২. ফেসবুক থেকে আয়ের উপায়ঃ ফেসবুক ভিডিও মনেটাইজেশন নতুন হলেও আয়ের বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। এখানে ইন-স্ট্রিম অ্যাড, রিলস বোনাস এবং ফ্যান সাবস্ক্রিপশন থেকে আয় করা যায়। ফেসবুকে দ্রুত ভিউ এবং ফলোয়ার বৃদ্ধি করা সহজ। তবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলে CPM কম হওয়ায় একই ভিউতে আয় ইউটিউবের তুলনায় কম হয়। যারা শর্ট ভিডিও বা ভাইরাল কনটেন্ট তৈরি করে দ্রুত অডিয়েন্স বৃদ্ধি করতে চান, তাদের জন্য ফেসবুক কার্যকর।

ইউটিউব আয় ও ফেসবুক আয়ের পার্থক্য

বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনলাইনে আয়ের জন্য ইউটিউব এবং ফেসবুক দুটোই অন্যতম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। অনেকেই ভাবেন, কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে আয়ের সুযোগ বেশি। ইউটিউব আয় ও ফেসবুক আয়ের পার্থক্য বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দুটি প্ল্যাটফর্মের আয়ের ধরন, কনটেন্ট প্রকার এবং মনেটাইজেশন পদ্ধতি ভিন্ন। নিচে ইউটিউব আয় ও ফেসবুক আয়ের পার্থক্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলোঃ 

ইউটিউব আয়ের ধরনঃ ইউটিউব আয় মূলত গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে হয়। ভিডিওতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন থেকে ভিউ বা ক্লিকের উপর ভিত্তি করে আয় হয়। ইউটিউবের সুবিধা হলো, ভিডিও একবার আপলোড করলে তা দীর্ঘ সময় ধরে আয় করতে পারে। এছাড়াও, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং চ্যানেল মেম্বারশিপের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ রয়েছে। ইউটিউবের দর্শকরা সাধারণত ভিডিওর জন্য প্রস্তুত থাকেন, তাই বিজ্ঞাপনের ক্লিক রেট তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। তবে এটি সফল হতে নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি এবং SEO ফ্রেন্ডলি ভিডিও টাইটেল, ডিসক্রিপশন, ট্যাগ ব্যবহার প্রয়োজন।

ফেসবুক আয়ের ধরনঃ ফেসবুক আয় মূলত পেইড পোস্ট, ব্র্যান্ড কলাবোরেশন, এবং ফেসবুক অ্যাডস থেকে আসে। ফেসবুকের সুবিধা হলো দ্রুত অডিয়েন্সের সঙ্গে যোগাযোগ এবং কনটেন্ট শেয়ারের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা। ফেসবুক ভিডিও আয়ের জন্য “ফেসবুক ইন-স্ট্রিম অ্যাডস” ব্যবহার করা হয়। তবে ফেসবুকে দর্শকরা অনেক সময় সোশ্যাল কনটেন্টের জন্য থাকেন, তাই ক্লিক এবং ভিউ থেকে আয় ইউটিউবের তুলনায় কম হতে পারে।

মূল পার্থক্যঃ ইউটিউব দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী আয়ের জন্য উপযুক্ত, যেখানে ভিডিও কনটেন্টের মান, নিয়মিত আপলোড এবং গ্লোবাল ভিউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে ফেসবুক দ্রুত অডিয়েন্স তৈরি এবং শর্ট-টার্ম আয়ের জন্য সুবিধাজনক, তবে CPM কম হওয়ায় আয় সীমিত থাকে। তাই যারা দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী ইনকাম চাইছেন, তাদের জন্য ইউটিউব বেশি লাভজনক, আর যারা দ্রুত ভিউ ও ছোট আয় চান, তাদের জন্য ফেসবুক ভালো বিকল্প।

ইউটিউবে এক লাখ ভিউতে কত টাকা আয়?

ইউটিউবে এক লাখ ভিউ থেকে আয় নির্ভর করে নানা বিষয়ে। সঠিক কনটেন্ট নির্বাচন ও টার্গেটেড দর্শক থাকলে একজন ইউটিউবার সহজেই উল্লেখযোগ্য ইনকাম করতে পারেন। ইউটিউব বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। ইউটিউব শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি এখন আয়ের অন্যতম বড় উৎস। লাখ লাখ কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইউটিউব থেকে মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছেন।

প্রথমেই জানা দরকার, ইউটিউবে আয় নির্ভর করে মূলত গুগল অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপন এর ওপর। ভিডিওতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হলে ক্রিয়েটররা সেই বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ উপার্জন করেন। তবে এই আয়ের হার একেকটি ভিডিওর বিষয়বস্তু, বিজ্ঞাপনের ধরন, দর্শকের অবস্থান, চ্যানেলের পারফরম্যান্স এবং ভিডিওর মানের ওপর ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্রযুক্তি, ফাইন্যান্স বা শিক্ষা সংক্রান্ত ভিডিও থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি আয় হয়।

অন্যদিকে ভ্লগ বা বিনোদনমূলক ভিডিও থেকে আয় তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বা দক্ষিণ এশিয়ায় সাধারণত প্রতি ১ হাজার ভিউ থেকে আয় হয় গড়ে ১–৫ ডলার। উন্নত দেশে একই ভিউ থেকে আয় দাঁড়াতে পারে ১০–২৫ ডলার পর্যন্ত। সেই হিসেবে একটি ভিডিওতে ১ লাখ ভিউ হলে গড়ে ১০০ থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ হাজার থেকে ১ লাখ টাকারও বেশি হতে পারে।

তবে ইউটিউবে শুধু ভিউ দিয়ে আয় বা সাফল্য নির্ধারণ হয় না, সাবস্ক্রাইবারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নির্দিষ্ট মাইলস্টোন অতিক্রম করলে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ক্রিয়েটরদের প্লে বাটন পুরস্কার প্রদান করে। যেমন ১ লাখ সাবস্ক্রাইবারে সিলভার প্লে বাটন, ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবারে গোল্ডেন প্লে বাটন, ১ কোটিতে ডায়মন্ড প্লে বাটন এবং ১০ কোটিতে রেড ডায়মন্ড প্লে বাটন দেওয়া হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে ইউটিউবে সফল হতে হলে ভিউয়ের পাশাপাশি সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোও অপরিহার্য।

ফেসবুক মনেটাইজেশন বনাম ইউটিউব মনেটাইজেশন

ফেসবুক মনেটাইজেশন বনাম ইউটিউব মনেটাইজেশন সঠিকভাবে বোঝা এবং স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কনটেন্ট তৈরি করা আপনার অনলাইন আয় বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। SEO ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট এবং নিয়মিত আপলোডের মাধ্যমে উভয় প্ল্যাটফর্মে আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। ডিজিটাল দুনিয়ায় ঘরে বসে আয় করার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ভিডিও কনটেন্ট। এই ক্ষেত্রে ফেসবুক মনেটাইজেশন এবং ইউটিউব মনেটাইজেশন দুটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।

ফেসবুক মনেটাইজেশনঃ ফেসবুক মনেটাইজেশন মূলত ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, পেইড পোস্ট এবং ব্র্যান্ড কলাবোরেশন থেকে আসে। ফেসবুকের সুবিধা হলো দ্রুত অডিয়েন্সের সঙ্গে যোগাযোগ এবং কনটেন্ট ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফেসবুক ভিডিও দর্শকরা সোশ্যাল কনটেন্ট দেখার জন্য থাকেন, তাই বিজ্ঞাপন ক্লিক থেকে আয় ইউটিউবের তুলনায় কম হতে পারে। তবে ফেসবুকে কনটেন্ট শেয়ারিং এবং কমিউনিটি বিল্ডিং দ্রুততর আয়ের সুযোগ দেয়।

ইউটিউব মনেটাইজেশনঃ ইউটিউব মনেটাইজেশন মূলত গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে কাজ করে। ভিডিওতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন থেকে ভিউ বা ক্লিকের উপর ভিত্তি করে ক্রমাগত আয় হয়। ইউটিউবের বিশেষ সুবিধা হলো একবার ভিডিও আপলোড করলে তা দীর্ঘ সময় ধরে আয় করতে পারে। এছাড়াও চ্যানেল মেম্বারশিপ, স্পন্সরশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করার সুযোগ থাকে। ইউটিউব দর্শকরা সচরাচর ভিডিও দেখার জন্য প্রস্তুত থাকেন, তাই বিজ্ঞাপনের ক্লিক রেট তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। সফল মনেটাইজেশনের জন্য নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড, SEO ফ্রেন্ডলি ভিডিও টাইটেল, ডিসক্রিপশন এবং ট্যাগ ব্যবহার অপরিহার্য।

ইউটিউব থেকে আয় বেশি কেন

বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনলাইনে আয়ের জন্য ইউটিউব সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। অনেকেই জানতে চান, ইউটিউব থেকে আয় বেশি কেন। ইউটিউবের আয়ের সুযোগ, কনটেন্ট মনেটাইজেশন এবং গ্লোবাল অডিয়েন্সের কারণে এটি অন্য অনেক প্ল্যাটফর্মের তুলনায় বেশি লাভজনক। সঠিক কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, নিয়মিত আপলোড এবং দর্শকের সাথে সক্রিয় এনগেজমেন্ট থাকলে ইউটিউব থেকে ধারাবাহিক এবং উচ্চ আয়ের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।

প্রথমত, ইউটিউব আয়ের জন্য গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। দর্শক ভিডিও দেখে বা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে ক্রমাগত আয় হয়। একবার ভিডিও আপলোড করলে এটি দীর্ঘ সময় ধরে আয় করতে পারে, যা ফেসবুকের মতো অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় বেশি লাভজনক। এছাড়াও, ইউটিউবের দর্শকরা সক্রিয়ভাবে ভিডিও দেখেন, ফলে বিজ্ঞাপনের ক্লিক রেটও তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

দ্বিতীয়ত, ইউটিউব ক্রিয়েটরদের জন্য বিভিন্ন আয়ের সুযোগ রয়েছে। চ্যানেল মেম্বারশিপ, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং Super Chat-এর মাধ্যমে তারা অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। এই বৈচিত্র্যময় আয়ের উৎস ইউটিউবকে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় বেশি লাভজনক করে তোলে। ফলে যারা ঘরে বসে স্থায়ী এবং ধারাবাহিক আয় করতে চান, তাদের জন্য ইউটিউব একটি উপযুক্ত এবং বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।

তৃতীয়ত, ইউটিউবের অ্যালগরিদম কনটেন্টকে দীর্ঘমেয়াদি ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। SEO ফ্রেন্ডলি ভিডিও টাইটেল, ডিসক্রিপশন ও ট্যাগ ব্যবহার করলে নতুন দর্শক সহজে ভিডিও খুঁজে পায়। এর ফলে ক্রিয়েটরের আয় ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘমেয়াদে নির্ভরযোগ্য আয়ের ধারা তৈরি হয়। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে ইউটিউব অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় বেশি লাভজনক এবং স্থায়ী 
আয়ের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।

ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় কেমন

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ফেসবুক ভিডিও একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে এবং বিভিন্ন মনেটাইজেশন অপশন ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফেসবুক ভিডিও থেকে আয়ের প্রধান মাধ্যম হলো ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, যা ভিডিওর মধ্যে স্বল্প দৈর্ঘ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয় করে। দর্শক ভিডিও দেখার সময় বিজ্ঞাপন দেখা বা স্কিপ না করলে ক্রিয়েটর আয় পায়।

ফেসবুক ভিডিও মনেটাইজেশনের একটি বড় সুবিধা হলো পেইড পার্টনারশিপ বা স্পন্সরশিপ। এখানে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড বা কোম্পানিগুলো নির্দিষ্ট ক্রিয়েটরের সঙ্গে চুক্তি করে ভিডিওর জন্য অর্থ প্রদান করে। পাশাপাশি ফেসবুকের সাবস্ক্রিপশন ফিচার এবং স্টারস (Stars) সিস্টেমের মাধ্যমে দর্শকরা সরাসরি ক্রিয়েটরকে অর্থ সহায়তা করতে পারে। ফলে ক্রিয়েটররা বিজ্ঞাপন আয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যমে আয় বৈচিত্র্যময় করতে সক্ষম হন, যা ফেসবুককে একটি লাভজনক ভিডিও প্ল্যাটফর্মে পরিণত করেছে।

ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় শুরু করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন— ক্রিয়েটরের ফেসবুক পেজে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার থাকতে হবে, নিয়মিত মানসম্মত ভিডিও আপলোড করতে হবে এবং অবশ্যই ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি ফেসবুকের উন্নত অ্যালগরিদম ভিডিওকে অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দিতে সহায়তা করে, ফলে ভিডিও ভাইরাল হয়ে বেশি ভিউ সংগ্রহ করে আয়ের সুযোগ তৈরি হয়।

ইউটিউব আয় করার সহজ উপায়

বর্তমান সময়ে ইউটিউব আয় করার সহজ উপায় ও অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। আয় শুরু করা সহজ হলেও সফল হতে হলে কিছু কৌশল মানা জরুরি। প্রথমেই একটি নির্দিষ্ট নীশ বা বিষয় নির্বাচন করা দরকার। যেমন শিক্ষা, প্রযুক্তি, ভ্রমণ বা ফুড সম্পর্কিত ভিডিও সহজে নির্দিষ্ট অডিয়েন্স তৈরি করতে সাহায্য করে। নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট আপলোড এবং দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখলে ইউটিউবে দ্রুত জনপ্রিয়তা ও আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব।

ইউটিউবে সফল হতে হলে নিয়মিত এবং মানসম্মত কনটেন্ট আপলোড করা অত্যন্ত জরুরি। ভিডিওর দৈর্ঘ্য, মান এবং দর্শকের জন্য আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু ইউটিউবের অ্যালগরিদমে বেশি প্রাধান্য পায়। পাশাপাশি SEO ফ্রেন্ডলি শিরোনাম, বর্ণনা এবং ট্যাগ ব্যবহার করলে নতুন দর্শক সহজেই ভিডিও খুঁজে পায়। এতে ভিডিওর রিচ বাড়ে, সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি পায় এবং আয় করার সম্ভাবনাও বহুগুণে বাড়ে।

ইউটিউবে আয় করার জন্য আপনার অ্যাকাউন্টে গুগল অ্যাডসেন্স যুক্ত থাকা প্রয়োজন। ভিডিওতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন ভিউ বা ক্লিকের ভিত্তিতে ক্রিয়েটররা আয় করেন। এর পাশাপাশি চ্যানেল মেম্বারশিপ, স্পন্সরশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব। এছাড়াও Super Chat বা Live Stream ব্যবহার করে দর্শকরা সরাসরি অর্থ প্রদান করতে পারেন, যা ইউটিউব আয়কে আরও বৈচিত্র্যময় এবং স্থায়ী করে।

ইউটিউবে সফল আয়ের জন্য দর্শকদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখা অত্যান্ত জরুরি। কমেন্টের উত্তর দেওয়া, কমিউনিটি পোস্ট ব্যবহার করা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার করা সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি এবং ভিডিও ভিউ বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও দর্শকরা ভিডিওতে আরও বেশি সময় ব্যয় করলে ইউটিউব অ্যালগরিদম ভিডিওকে বেশি প্রচার করে, ফলে চ্যানেলের জনপ্রিয়তা ও আয় উভয়ই বৃদ্ধি পায়।

ফেসবুক থেকে আয় করার নিয়ম ও শর্ত

ফেসবুক থেকে আয় করার নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে ফেসবুক একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম, যা ঘরে বসে আয় করার সুযোগ দেয়। ফেসবুক আয় করার জন্য মূলত ভিডিও মনেটাইজেশন, স্পন্সরশিপ এবং পেইড পার্টনারশিপের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হয়। তবে সফলভাবে আয় করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম এবং শর্ত মেনে চলা জরুরি। এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

প্রথমত, ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় শুরু করতে হলে প্রথম শর্ত হলো পেজ বা প্রোফাইল হতে হবে সক্রিয় এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার থাকতে হবে। সাধারণত প্রায় ১০,০০০ বা তার বেশি ফলোয়ার থাকা প্রয়োজন, যা পেজকে মনেটাইজেশন যোগ্য করে তোলে। সক্রিয় পেজে নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট আপলোড করলে দর্শক ও এনগেজমেন্ট বাড়ে, যা ফেসবুকের অ্যালগরিদম ভিডিওকে প্রচার করতে সহায়তা করে এবং আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি করে।

দ্বিতীয়ত, ফেসবুকে আয় করতে হলে নিয়মিত ভিডিও কনটেন্ট তৈরি ও আপলোড করা অত্যন্ত জরুরি। ভিডিওর মান এবং বিষয়বস্তু দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় হওয়া উচিত, যাতে তারা ভিডিও দেখেন এবং শেয়ার করেন। বেশি ভিউ এবং এনগেজমেন্ট পেলে ফেসবুকের অ্যালগরিদম ভিডিওকে আরও বেশি প্রচার করে, যা আয়ের সুযোগ বাড়ায় এবং ক্রিয়েটরের পেজকে মনেটাইজেশনের জন্য আরও উপযুক্ত করে তোলে।

তৃতীয়ত, ফেসবুকে আয় করার জন্য ইন-স্ট্রিম অ্যাডস ব্যবহার করা হয়। ভিডিওর মধ্যে সংক্ষিপ্ত বিজ্ঞাপন দেখালে ক্রিয়েটররা আয় পান। এছাড়াও ফেসবুক স্টারস (Stars) এবং সাবস্ক্রিপশন ফিচারের মাধ্যমে দর্শকরা সরাসরি অর্থ প্রদান করতে পারেন। পাশাপাশি পেইড পার্টনারশিপ বা ব্র্যান্ড কলাবোরেশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ভিডিওর জন্যও আয় করা সম্ভব, যা ক্রিয়েটরের আয় বৈচিত্র্যময় এবং স্থায়ী করে তোলে।

চতুর্থত, ফেসবুকে আয় করতে হলে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলা অপরিহার্য। ভিডিওতে কপিরাইট লঙ্ঘন, নৃশংস বা আপত্তিকর কনটেন্ট থাকলে মনেটাইজেশন বাতিল হতে পারে। পাশাপাশি পেজের এনগেজমেন্ট রেট ভালো রাখা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ফেসবুকের অ্যালগরিদম সক্রিয় ও জনপ্রিয় কনটেন্টকে দর্শকদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেয়। এতে ভিডিও বেশি দেখা হয়, ভিউ বৃদ্ধি পায় এবং আয়ের সম্ভাবনাও বাড়ে।

শেষকথাঃ ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি

ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি এ সম্পর্কে আমার মন্তব্য হলো, ফেসবুক ভিডিও দ্রুত অডিয়েন্স তৈরি এবং শর্ট-টার্ম ইনকামের জন্য সুবিধাজনক। ক্রিয়েটররা স্টার্স, সাবস্ক্রিপশন, ইন-ভিডিও পারচেস এবং পেইড পার্টনারশিপের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। তবে ফেসবুকের CPM কম হওয়ায় প্রতি ভিউ থেকে আয় সীমিত থাকে, ফলে দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী আয় তৈরি করা কঠিন। তাই যারা দীর্ঘমেয়াদি এবং ধারাবাহিক আয় চান, তাদের জন্য ইউটিউব তুলনামূলকভাবে বেশি লাভজনক।

অপরদিকে, ইউটিউব দীর্ঘমেয়াদী এবং স্থায়ী আয়ের জন্য অনেক বেশি কার্যকর। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামের আওতায় ক্রিয়েটররা ইন-স্ট্রিম অ্যাড, স্পনসরশিপ, চ্যানেল মেম্বারশিপ, Super Chat এবং লাইভ স্ট্রিমিং-এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এছাড়া ইউটিউবের গ্লোবাল ভিউ এবং উচ্চ CPM ক্রিয়েটরদের আয়কে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়। আশা করছি, ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটিতে আয় বেশি এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url