গোলমরিচের উপকারিতা
        
          গোলমরিচ এমন একটি মসলা যা আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ
          ভূমিকা পালন করে। গোলমরিচ ভিটামিনের দারুণ উৎস। এছাড়াও গোলমরিচ
          ম্যাগনেসিয়াম, তামা, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি
          খনিজ সমৃদ্ধ। এতে আছে ফাইবার এবং সীমিত পরিমাণ প্রোটিন এবং শর্করা।
          গোলমরিচে রয়েছে বিভিন্ন রকমের গুণ। ঠিক মতো খেলে উপকার পাবেন। দেখে নিন
          কোন কোন রোগ উপশমে এই মশলা সাহায্য করে।
        
        
        
          অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুরঃ গোলমরিচে মজুত রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর এইসব
            অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষের ক্ষয়ক্ষতি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
            রাখে। ফলে নিয়মিত গোলমরিচ সেবনে হার্টের জটিল সমস্যা থেকে ক্যান্সারের
            মত একাধিক ক্রনিক রোগ দূরে থাকে। তাই সুস্থ সবল জীবন পেতে হলে গোলমরিচ
            খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
        
        
        
          রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ গোলমরিচ খেলে আমাদের শরীরের রোগ
          প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। গোলমরিচের মধ্যে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং
          সেলেনিয়াম রয়েছে। যেগুলি সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন
          চার-পাঁচটা গোলমরিচ খাওয়া ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়ঃ আমাদের ব্রেন হল শরীরের সিপিইউ। তাই এই অঙ্গটির কার্যক্ষমতা হারালে
            গোটা শরীরের ওপরই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা
            বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কাজে উপকারি ভূমিকা পালন করে গোলমরিচ। এই
            মশলায় থাকা কিছু উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে। এমনকি
            অ্যালঝাইমার্স ও পার্কিনসনসের মতো জটিল রোগ প্রতিরোধের কাজেও এর জুড়ি
            মেলা ভার।
        
        
       
      
        
          
        
        
          ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ গোলমরিচ ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ,
          গোলমরিচ ফ্যাট সেল গুলোকে ভেঙে দেয়। যার ফলে ওজন কমে ক্যালরি কম হয় এবং
          এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে।গোলমরিচে আছে ‘পিপেরিন’ নামক এক উপাদান যা
          বিপাকের গতি বাড়ায় এবং শরীরে চর্বি জমতে বাধা দেয়। শরীরে স্বাস্থ্যকর
          কোলেস্টেরলের ঘনত্ব বাড়াতেও কাজে লাগে এই উপাদান। এছাড়াও গোলমরিচ
          ‘থার্মোজেনিক’-জাতীয় খাদ্য উপাদান, যা দ্রুতি চর্বি ঝরায় এবং বিপাকক্রিয়া
          বাড়ায়। আর মসলাদার এবং ঝাল খাবার অল্প পরিমাণেই ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে।
        
       
      
        
          
        
        
          ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ গোলমরিচের মধ্যে আছে পিপারাইন নামক একটি উপাদান যা ক্যান্সারের অন্যতম ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা
          হয়। গোলমরিচে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও প্রচুর পরিমাণে
          অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । যা ক্ষতিকর ফ্রী রেডিকেলসে্র হাত থেকে এবং আমাদের
          শরীরকে ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচায়। তাই সুস্থ-সবল নীরোগ জীবন কাটাতে
          চাইলে যত দ্রুত সম্ভব এই ভেষজ সেবন করুন।
        
       
      
        
          
        
        
          সর্দি কমাতে সাহায্য করেঃ সর্দি-কাশি কমাতে গোলমরিচ দারুন ভাবে
          কাজ করে। এক চামচ মধু ও গোলমরিচ গুঁড়ো সর্দি কাশির সমস্যাকে সমাধান করতে
          পারে। এটি বুকে জমে থাকা সর্দি দূর করতে সাহায্য করে। ভাইরাস জনিত
          ইনফেকশন রোধ করতে সাহায্য করে। সর্দি কাশি ছাড়াও, যদি জ্বর আসে তাহলেও
          গোলমরিচ কাজ করে। গোলমরিচে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা
          অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করতে পারে। জ্বরের সময় গোলমরিচ খেলে খুব ঘাম
          হয় এবং তার ফলে জ্বর ছেড়ে যায়। গলা ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে গোলমরিচ।
          তাই ঠান্ডা লাগলে গোলমরিচ খেতে পারেন। সর্দি কাশির সময় মুখে স্বাদ থাকে
          না। সেই সময় মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে গোলমরিচ।
        
        
        
          ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ হাই সুগার একটি জটিল অসুখ। তাই এই
          রোগকে বশে না রাখলে কিডনি, হার্ট, চোখসহ একাধিক অঙ্গের জটিল রোগ হতে
          পারে। আর এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গোলমরিচ। এতে এমন কিছু
          অ্যান্টিডায়াবেটিক উপাদান রয়েছে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
          করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত এই মশলা সেবন করুন।
          এতেই ফল পাবেন হাতেনাতে।
        
        
        
          কোলেস্টেরল কমায়ঃ কোলেস্টেরলকে বাগে না আনতে পারলে হার্ট অ্যাটাক,
          হার্ট ফেইলরের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই যত দ্রুত সম্ভব
          কোলেস্টেরলকে বিপদসীমার নীচে নামিয়ে আনতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য
          করতে পারে গোলমরিচ। এটি শরীরে থাকা ক্ষতিকর লিপিড-কে কমাতে সহায়তা করে।
          তাই হাই কোলেস্টেরল রোগীদের অবশ্যই নিয়মিত গোলমরিচ খাওয়া উচিত।
        
        
        
          সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করেঃ গোলমরিচের এন্টিব্যাক্টিরিয়াল উপাদান
          সেসব সংক্রমণের বিরুদ্ধে দারুণ ভূমিকা পালন করে। গোলমরিচে থাকা পিপারাইন
          শরীরে যেকোনো জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়ে। বিশেষ করে শরীরে কোনো জীবাণু প্রবেশ
          করে প্রজনন শুরু করলে সেটি প্রচণ্ড লড়াই করে জীবাণুকে ধ্বংস করে দেয়।
        
       
      
        
        
          দাঁত ও মুখের জন্য উপকারীঃ দাঁত ব্যথা ও মুখের জন্যে খুব উপকারী
          গোলমরিচ। এজন্য কিছু কিছু টুথপেস্ট তৈরিতেও গোলামরিচের ব্যবহার করা হয়।
          গোলমরিচের এন্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান দাঁত ও মুখের জন্যে বিশেষভাবে
          উপকারী। মাড়ির সমস্যা হলে বা ফুলে গেলে এক চিমটি লবণের সাথে একটুখানি
          গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে মাড়িতে হালকা করে মালিশ করুন। ভাল ফল মিলবে
          অবশ্যই।
        
       
      
        
        
          ত্বকের জন্য উপকারীঃ ত্বক ভালো রাখার জন্য কেবল বাইরে থেকে যত্ন
          নিলেই হবে না, খেতে হবে উপকারী সব খাবারও।গোলমরিচ ত্বকের জন্য খুবই
          উপকারী গোলমরিচ শরীরকে ভেতর থেকে সচল রাখতে সাহায্য করে। বাইরের ক্ষতিকর
          সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি হাত থেকে ত্বকের রক্ষা করে। ত্বকের বিভিন্ন
          সমস্যা দূর করে ত্বককে সুন্দর রাখতে কাজ করে গোল মরিচ। সেইসঙ্গে এটি দূর
          করে ত্বকের কালো দাগও। নিয়মিত গোল মরিচ খেলে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে না।
          দূর হয় ব্রণও।
        
       
      
        
        
          ঘুম ঘুম সমস্যা দূর করেঃ যাদের ঘুমঘুম লাগে বা সর্বদা বিরক্ত
          থাকেন। তাহলে গোলমরিচের চা খান। এটি মস্তিষ্কের ডোপমাইন নামক একটি
          রাসায়নিক ছড়াবে। যা আপনাকে ভালো বোধ করো করাবে।
        
       
      
        
        
          আমাশয় দূর করতে সাহায্য করেঃ যারা আমাশয় ভুগছেন তারা গোলমরিচ
          গুঁড়ো সকাল বিকাল দুই বেলা জলের সঙ্গে খেতে পারে। দু-তিন দিন খেলেই
          আমাশয় দূর হয়ে যাবে।
        
       
      
        
        
          নাসা রোগ দূর করতে সাহায্য করেঃ নাসা এ রোগের মূল কারণ হলো রসবহ
          স্রোতের বিকার আর সমস্যা হয় গলা থেকে উপর দিকটা। নাসা রোগের লক্ষণ হল
          নাকে সর্দি তারপর নাক বন্ধ, কখনো কখনো কপালে ব্যথা, গন্ধ না পাওয়া,
          এমনকি খাবারের রুচিও কমে যায়, আবার কারো কারো ঘাড়ে যন্ত্রণা করে, নাক
          দিয়ে রক্ত পড়ে। এইরকম সমস্যা হলে– পুরনো আখের গুণ পাঁচ গ্রাম, মত গরুর
          দুধের দই ২৫ গ্রাম মত তবে এই দই বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারলে ভালো হয়।
          তার সঙ্গে এক গ্রাম গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে সকালে ও বিকালে দুবার করে
          খেতে হবে। তিন চারদিন পর থেকে কমতে শুরু করবে।
        
       
      
        
          
        
        
          ক্রিমির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ গোল মরিচ গুড়ো দুধের সঙ্গে
          মিশিয়ে সকাল বিকাল দুবার খেতে হবে তাহলেই ক্রিমির মতো সমস্যা দূর হয়ে
          যাবে। যার ফলে পাকস্থলী ভালো থাকে।
        
       
      
        
        
          টাক পড়ার সমস্যা রোধ করেঃ টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যায় বেশির ভাগ
          মানুষই ভুগতে থাকেন। তাই যারা টাক পড়ে যাওয়ার মত সমস্যায় ভুগছেন তাদের
          জন্য এই টিপসটি খুব কাজে লাগবে। যে স্থানে টাক পড়ে গেছে সেই স্থানে
          পেঁয়াজের রস লাগান এবং তারপরে ওই জায়গায় গোলমরিচ ও সিন্দুক লবণ
          একসঙ্গে বেটে লাগিয়ে রাখতে হবে। এইভাবে কয়েকদিন ব্যবহার করলেই দেখতে
          পাবেন নতুন চুল গজাতে থাকবে।
        
       
      
        
        
          চোখের অসুখ সারাতে সাহায্য করেঃ গোলমরিচ খেলে চোখের অসুখ সেরে
          যায়। গোলমরিচ চোখে কাজলের মতো করে দিতে পারলে চোখে ঝাপসা দেখা এবং ছানি
          পড়ে যাওয়া এইসব সমস্যা দূর করা যেতে পারে।
        
       
      
        
        
          হেঁচকি বন্ধ করতে সাহায্য করেঃ একটি গোলমরিচ সুঁচ দিয়ে ফুটিয়ে
          প্রদীপের শিখায় যদি ধরা হয়। তো ওই গোলমরিচ পুড়ে যে ধোঁয়া উঠবে ওটা
          শুকলে হেঁচকি বন্ধ হয়ে যাবে।
        
       
      
        
        
          পেটের অসুখ সারাতে সাহায্য করেঃ পেট ফাঁপা বা পেটে পুরানো গোলমরিচ
          খেলে তা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। একটি কিসমিসের সঙ্গে গোলমরিচ চিবিয়ে
          খেলে মস্তিষ্ক সহ পাকস্থলের দূষিত বায়ু নষ্ট হয়ে যায়। লেবুর রস ও আদা
          সঙ্গে অল্প গোলমরিচগুলো মিশিয়ে খেলে পেটে ব্যথা কমে যায়।
        
       
      
        
        
          ফোঁড়া সারাতে সাহায্য করেঃ ফোঁড়া সারাতে গোলমরিচ উপকার করে। গোল
          মরিচ বেটে ফোঁড়াতে লাগালে ফোঁড়ার কমতে পারে।
        
       
      
        
        
          ম্যালেরিয়া সারাতে সাহায্য করেঃ তুলসী পাতার রস, গোল মরিচের
          গুড়ো আর মধু ভালো করে মিশিয়ে নেওয়ার পর খেলে ম্যালেরিয়া ভালো হয়ে
          যায়।
        
        
        
          এছাড়াও চুলকানি কমাতে, আম্বাত কমাতে কলেরা কমাতে, বাচ্চাদের খিদে
          বাড়াতে, জ্বর সারাতে, দাঁতের ব্যথা সারাতে, পেটের বায়ু কমাতে, ঢুলুনি
          রোগ কমাতে, ব্যথা কমাতে ইত্যাদ রোগ সারাতে গোলমরিচ আমাদের বিভিন্ন ভাবে
          সাহায্য করে থাকে।
        
        
          গোলমরিচের পুষ্টি উপাদান
          
            গোলমরিচে যথেষ্ট পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
            পলিফেনল রয়েছে গোলমরিচে। খাবারের সঙ্গে গোল মরিচ ব্যবহার করলে তা
            কেবল স্বাদ আর গন্ধই বাড়ায় না, সেইসঙ্গে নিয়ে আসে অনেক উপকারিতাও। এর
            আছে নানা ঔষধি গুণাগুণ। এই মসলা আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,
            ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাংগানিজ, জিংক, ক্রোমিয়াম, ভিটামিন এ ও সি এবং
            অন্যান্য উপাদানে ভরপুর।
          
          
          প্রতি ১০০ গ্রাম গোলমরিচে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান
          
 
	| পুষ্টিউপাদান | 
	পরিমান | 
	| ক্যালোরি | 
	৫.৭৭ কিলোক্যালোর | 
	| প্রোটিন | 
	০.২৩৯ গ্রাম | 
	| কার্বোহাইড্রেট | 
	১.৪৭ গ্রাম | 
	| ফাইবার | 
	০.৫৮২ গ্রাম | 
	| চিনি | 
	০.০১৫ গ্রাম | 
	| ক্যালসিয়াম | 
	১০.২ মিলিগ্রাম | 
	| আয়রন | 
	০.২২৩ মিলিগ্রাম | 
	| ম্যাগনেসিয়াম | 
	৩.৯৩ আইইউ | 
	| ফসফরাস | 
	৩.৬৩ মিলিগ্রাম | 
	| পটাসিয়াম | 
	৩০.৬ মিলিগ্রাম | 
	| সোডিয়াম | 
	০.৪৬ মিলিগ্রাম | 
	| দস্তা | 
	০.০২৭ মিলিগ্রাম | 
	| ম্যাঙ্গানিজ | 
	০.২৯৪ মিলিগ্রাম | 
	| সেলেনিয়াম | 
	০.১১৩ মাইক্রোগ্রাম | 
	| ফ্লোরাইড | 
	০.৭৮৭ মিলিগ্রাম | 
	| নিয়াসিন | 
	০.০২৬ মিলিগ্রাম | 
	| ফোলেট | 
	০.৩৯১ মিলিগ্রাম | 
	| বিটেইন | 
	০.২০৫ মিলিগ্রাম | 
	| বিটা-ক্যারোটিন | 
	৭.১৩ মাইক্রোগ্রাম | 
	| লুথেইন-জিয়াক্সানথিন | 
	১০.৪ মিলিগ্রাম | 
	| ভিটামিন-ই | 
	০.০২৪ মিলিগ্রাম | 
	| ভিটামিন-এ | 
	১২.৬ মাইক্রোগ্রাম | 
	| ভিটামিন-কে | 
	৩.৭৭ মাইক্রোগ্রাম | 
          
            গোলমরিচ খাওয়ার নিয়ম
            গোলমরিচ খাওয়ার নিয়ম অনেকেই জানেন না। খাবারের স্বাদ বাড়াতে
            গোলমরিচের তুলনা নেই। গোলমরিচ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। মসলা
            হিসেবে অনেকদিন ধরেই গোলমরিচ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে প্রচুর পরিমাণে
            অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি, আন্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল
            বৈশিষ্ট্য থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতিদিন গোলমরিচ খেতে
            পারেন। গোলমরিচ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখলে বেশি উপকার
            পাবেন। যেমন-
          
 
          
            
সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খানঃ উপকার পেতে হলে আপনি রোজ
            একটি গোলমরিচ চিবিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। যাদের
            প্রায়ই ঠান্ডা লাগে বা হাঁচি হয় ঘন ঘন,তাঁরা যদি কয়েকটা গোলমরিচ রোজ
            চিবিয়ে খেয়ে নেন,উপকার পাবেনই পাবেন। কুসুম গরম জলে গোলমরিচের গুঁড়ো
            ফেলে একটু নেড়ে নিয়ে হালকা হালকা চুমুক দিয়ে খেলে শরীরে শক্তি ও
            কর্মক্ষমতা বাড়ে। কাজ করার এনার্জি পাওয়া যায়। শরীরে জলের মাত্রা
            কমতে পারে না। এর সাহায্যে আপনি হরমোনের ভারসাম্য, ডায়াবিটিস,
            অ্যামেনোরিয়া, পিরিয়ড বিলম্বের মতো রোগে উপকার পাবেন।
চা ও গোলমরিচের গুঁড়োঃ
            অস্থিসন্ধির ব্যথা কমাতে পারে গোলমরিচ। গোলমরিচ গুঁড়ো করে চায়ের
            সঙ্গে মিশিয়ে অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। তাহলে বাতের ব্যথা দ্রুত কমবে।
            কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য থাকে। যা
            বাতের ব্যথা, ফোলা, যেকোনও ব্যথা কমাতে খুব ভালো কাজ করে।
          
          
            
মধু দিয়ে খানঃ গোলমরিচ ও মধুর উপকারিতাও অনেক। রোগ
            প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আপনার
            হলুদ এবং মধুর সঙ্গে ১ চা চামচ খাওয়া উচিত।
দুধ বা ঘি দিয়ে
            কালো মরিচঃ ভালো ঘুম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং আর্থ্রাইটিস (জয়েন্টের
            ব্যথা থেকে মুক্তি) জন্য শোবার সময় দুধে এক চিমটি শুকনো আদা গুঁড়ো
            মিশিয়ে খেতে পারেন। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ১ চা চামচ দেশি
            গরুর ঘি দিয়ে ঘুমানোর সময় খেতে পারেন।
গোলমরিচ ও লবণঃ
            গোলমরিচ খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে। এটি পাকস্থলী , অন্ত্র ভালো রাখতে
            সাহায্য করে। শরীর প্রোটিন ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। যার কারণে রোগ
            প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে এক চামচ গোলমরিচের সঙ্গে
            সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন। যদি আপনার
            কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে, তাহলেও উপকার পাবেন।
বিটলবণ ও গোলমরিচঃ
            প্রোস্টেট ক্যানসার, কোলন ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার ঝুঁকি কমাতে
            গোলমরিচের জুড়ি মেলা নেই। কারণ, গোলমরিচের মধ্যে থাকা পিপারিন ক্যানসার
            কোষের বৃদ্ধি রুখে দেয়। গোলমরিচের সঙ্গে বিট লবণ খেতে পারেন। উপকার
            পাবেন।
          
          গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়ার উপকারিতা
          
            
              গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। হবু মায়েদের এ
              সময় নানা রকম শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়, যা ইতিবাচকভাবে মোকাবিলা
              করতে সক্ষম গোলমরিচ। চিকিৎসকরা সামান্য জ্বর, কাশি, সর্দি,
              অ্যাসিডিটি ইত্যাদি সমস্যায় হবু মায়েদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন থেকে
              বিরত থাকতে বলেন। কারণ হিসেবে তারা বলেন, এতে ভ্রূণের ক্ষতির আশঙ্কা
              রয়েছে। তাই ওষুধের বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারেন গোলমরিচ।
            
            
              
              
                অনাক্রম্যতা উন্নত করতে সাহায্য করেঃ গোলমরিচ শরীরের রোগ
                প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পরিচিত। গর্ভাবস্থায়, খাদ্যতালিকায়
                নিয়মিত এবং সর্বোত্তম পরিমাণে গোলমরিচ গ্রহণ প্রাকৃতিক প্রতিরোধ
                ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী হিসেবে কাজ করে।
              
              
              
                হজমশক্তি উন্নত করেঃ গর্ভাবস্থায় ক্রমবর্ধমান জরায়ু
                পাচনতন্ত্রের বিরুদ্ধে চাপ দেয় এবং অম্লতা, বদহজম এবং অম্বল
                সৃষ্টি করে। গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা মোকাবেলার একটি প্রাকৃতিক
                উপায় হলো আপনার খাদ্যতালিকায় গোলমরিচ অন্তর্ভুক্ত করা। এটি
                গর্ভাবস্থায় ঘটে যাওয়া পেট ফাঁপা এবং ফোলাভাবকে উল্লেখযোগ্যভাবে
                হ্রাস করে।
              
              
              
                কাশি এবং সর্দি থেকে মুক্তি দেয়ঃ গর্ভাবস্থায় আপনার যদি
                সর্দি এবং কাশি হয়, তবে একই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না
                কারণ তারা গর্ভাবস্থার ওষুধের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং পার্শ্ব
                প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তবে আপনি কাশি এবং সর্দির জন্য
                কিছু সহজ ঘরোয়া প্রতিকার চেষ্টা করতে পারেন। সর্দি-কাশি নিরাময়ের
                অন্যতম সেরা ঘরোয়া প্রতিকার হল সব খাবারে
                গোলমরিচ অন্তর্ভুক্ত করা। স্যুপে গোলমরিচ যোগ করলে ঠান্ডার
                উপসর্গও উপশম হয়।
              
              
             
            
              বিষন্নতার সাথে লড়াই করতে সাহায্য করেঃ গর্ভাবস্থায় এবং
              প্রসবের পরে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে বিষন্নতার একটি সাধারণ
              লক্ষন। অল্প পরিমাণে গোলমরিচ খাওয়া ভাল মানসিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য
              নিশ্চিত করতে পারে তবে এটি প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি আপনার
              স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
            
            
              
            
            
              
                রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ গর্ভবতী মায়ের জন্য রক্তচাপ
                ক্ষতিকারক হতে পারে কারণ এটি শেষ ত্রৈমাসিকে এবং প্রসবের সময় আরও
                জটিলতার কারণ হতে পারে। নিয়মিত গোলমরিচ খাওয়ার মাধ্যমে সামান্য
                উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
              
              
              
                ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ গোলমরিচের
                অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের দ্রুত
                পরিবর্তনগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে এবং মুক্ত
                র্যাডিকেলগুলিকে সুস্থ টিস্যুতে আক্রমণ থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে
                বাধা দেয়। মরিচ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পিপারিন ধারণ করে, যা কিছু
                ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলতে এবং এমনকি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে
                বাধা দিতে পারে। হলুদের সাথে গোলমরিচ এমনকি স্তনে ক্যান্সার কোষের
                বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।
              
              
              
                উন্নত পুষ্টি শোষণঃ কালো মরিচে রয়েছে পিপারিন, যা ভিটামিন
                এবং খনিজগুলির মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টির শোষণ বাড়াতে দেখা গেছে।
                গর্ভাবস্থায়, এটি নিশ্চিত করতে পারে যে মা এবং বিকাশমান শিশু
                উভয়ই সর্বোত্তম পুষ্টি পায়।
              
              
              
                ফোলা এবং জল ধারণ হ্রাসঃ গর্ভবতী মহিলারা প্রায়শই জল ধরে
                রাখার কারণে তাদের হাত-পা ফুলে যায়। গোলমরিচ মূত্রবর্ধক
                বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ফোলা কমাতে এবং গর্ভাবস্থায় জল ধরে রাখার
                সাথে সম্পর্কিত অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে।
              
             
            
              গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
              
                গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত কিছু
                কিছু ক্ষেত্রে। গোলমরিচ প্রায়শই গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয় এবং আপনি
                যদি এটিকে আপনার ডায়েটে সাবধানে অন্তর্ভুক্ত করেন তবে এটি কোনও
                ক্ষতি করবে না। কিন্তু কিছু মহিলা অল্প পরিমাণে গ্রহণ করলেও কিছু
                নির্দিষ্ট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন। নিচে গর্ভাবস্থায়
                গোলমরিচ খাওয়ার ফলে কি কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় তা
                দেখানো হলো।
              
              
              
                
                  এলার্জি প্রতিক্রিয়া হতে পারেঃ কিছু মহিলা গর্ভাবস্থায়
                  কিছু খাদ্য পদার্থে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারে।
                  মরিচ একটি অ্যালার্জি নির্দেশ করে লক্ষণগুলির একটি সিরিজ ট্রিগার
                  করতে পারে। আপনি যদি এই ধরনের প্রতিক্রিয়া অনুভব করেন, বিশেষ
                  করে গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়া এড়ানো ভাল। প্রয়োজনীয়
                  মশলাদার স্বাদ দিতে আপনি এটির মাত্র এক চিমটি যোগ করার চেষ্টা
                  করতে পারেন এবং প্রতিক্রিয়াটি অব্যাহত থাকে কিনা তা পরীক্ষা
                  করতে পারেন। অ্যালার্জির লক্ষণগুলি গুরুতর হলে আপনি আপনার
                  ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।
                
                
                  
                
                
                  জ্বলন্ত সংবেদন হতে পারেঃ গোলমরিচ খাওয়ার পর পেটে বা
                  গলায় জ্বালাপোড়া অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু
                  গর্ভাবস্থায়, যখন বদহজম এবং হার্টবামের সমস্যা দেখা দেয়, তখন
                  মরিচ খাওয়া কখনও কখনও পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করতে পারে।
                  সেক্ষেত্রে মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো
                
                
                
                  শরীরের তাপ বাড়াতে পারেঃ আপনার যদি গ্রীষ্মকালীন
                  গর্ভাবস্থা হয়, তাহলে আপনার মশলাদার আইটেমগুলি বাদ দেওয়া ভাল
                  কারণ সেগুলি শরীরের তাপ বাড়াতে পারে। আপনার খাদ্যতালিকায়
                  গোলমরিচ বা অন্যান্য মশলা অন্তর্ভুক্ত করা শরীরের তাপ বাড়াতে
                  পারে এবং বদহজমের সমস্যা, মুখের ঘা এবং এই ধরনের অন্যান্য
                  জটিলতার কারণ হতে পারে।
                
               
             
            ওজন কমাতে গোলমরিচ খাওয়ার নিয়ম
           
         
        
          
            ওজন কমাতে গোলমরিচ খাওয়ার নিয়ম আপনি হয়তো জানেন না। গোলমরিচে আছে
            পিপেরিন নামক এক উপাদান যা বিপাকের গতি বাড়ায় এবং শরীরে চর্বি জমতে
            বাধা দেয়। শরীরে স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের ঘনত্ব বাড়াতেও কাজে লাগে এই
            উপাদান। এছাড়াও গোলমরিচ থার্মোজেনিক-জাতীয় খাদ্য উপাদান রয়েছে যা
            দ্রুতি চর্বি ঝরায় এবং বিপাকক্রিয়া বাড়ায়। চলুন তাহলে জেনে নিন ওজন
            কমাতে গোলমরিচ কিভাবে খাবেনঃ
          
          
          
            গোলমরিচের চাঃ পাত্রে এক কাপ পরিমাণ পানি নিয়ে তাতে সামান্য আদা
            বাটা যোগ করতে হবে। পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে পানিটুকু একটি কাপে ছেঁকে নিতে
            হবে। এবার তাতে গ্রিন টি’র ব্যাগ ডুবিয়ে দিতে হবে এবং মেশাতে হবে আধা
            চা-চামচ গোলমরিচ। তৈরি হয়ে গেল গোলমরিচের চা।
          
          
            
          
          
            চিবিয়েঃ মসলার ঝাঁঝ সইতে পারলে গোলমরিচ সরাসরি চিবিয়েও খেতে
            পারেন। খালি পেটে দু-তিনটি গোলমরিচের দানা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেতে
            পারেন।
          
          
          
            মধুর সঙ্গেঃ একটি পাত্রে এক কাপ পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার
            তাতে এক চা-চামচ মধু আর আধা চা-চামচ সদ্য পেষা গোলমরিচের গুঁড়া
            ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। সকালে পান করলে শরীর থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত
            উপাদান অপসারণে সাহায্য করবে এই পানীয়।
          
          
          
            গোল মরিচের তেলঃ ওজন কমাতে গোলমরিচের তেল ব্যবহার করা যেতে
            পারে। ওষুধের দোকান থেকে ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ গোলমরিচের তেল কিনতে হবে। এক
            গ্লাস পানিতে এই তেল এক ফোঁটা মিশিয়ে সকালে নাস্তা খাওয়ার আগে পান করতে
            হবে।
          
          
          
            সবজি ও ফলের শরবতেঃ আধা চামচ পরিমাণ গোলমরিচ এদের সঙ্গে মিশিয়ে
            পান করতে পারেন। খালি পেটে গোলমরিচ খাওয়া সবচাইতে উপকারী। এসময় সরাসরি
            চিবিয়েও খেতে পারেন।
          
          
            
              চুলের যত্নে গোলমরিচের উপকারিতা
            
          
          
            
              চুলের যত্নে গোলমরিচের উপকারিতা রয়েছে। গোলমরিচ
              অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যে ভরপুর যা মাথার ত্বকের সংক্রমণের
              বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, গোলমরিচের মধ্যে থাকা
              ভিটামিন-সি চুল পড়ে যাওয়া এবং চুল পাতলা হওয়াকে রোধ করার জন্য
              পরিচিত। গোল মরিচের উপকারিতা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও ত্বকের মধ্যেই
              সীমাবদ্ধ নয়, এর উপকারিতা চুলের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে দেখা যায়,
              বিস্তারিতভাবে দেখে নেওয়া যাকঃ
            
            
            
              ১. নতুন চুল গজাতে গোল মরিচের ভূমিকা আছে। একটি গোটা লেবুর রস বের
              করে এক চামচ গোল মরিচের গুঁড়োর সাথে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ভালো করে ঘষে
              ঘষে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।এছাড়া ২
              চামচ মধুর সাথে এক চামচ গোল মরিচের গুঁড়ো মিশিয়েও স্ক্যাল্পে লাগাতে
              পারেন। এতে চুল গজায় ও চুলের সিঁথি ভরাট হয়।
            
            
            
              ২. আজকাল বেশিরভাগ মানুষই চুলের বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত। এর মূল কারণ
              পুষ্টির অভাব এবং সঠিক যত্ন না নেওয়া। আবার অনেক সময় স্ক্যাল্পে
              ধুলো-মাটি, ময়লা বা তেল জমে থাকে। এর কারণে চুলের ফলিকল ব্লক হয়ে
              যায়, ফলে চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে অলিভ অয়েলের
              সঙ্গে গোলমরিচের তেল মিশিয়ে সপ্তাহে দু'বার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
            
            
            
              ৩. এখন খুশকির সমস্যা ঋতু দেখে আর আসে না। কারও কারও সারা বছরই
              খুশকির সমস্যা লেগে থাকে। এখানে আপনাকে সাহায্য করতে পারে গোলমরিচ।
              গোলমরিচকে এই ক্ষেত্রে এক্সফোলিয়েটর হিসেবে ব্যবহার করুন। প্রথমে
              মোটা করে গোলমরিচকে পিষে নিয়ে এতে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাথার ত্বক
              ভালো করে স্ক্রাব করুন। স্ক্রাব করার পরে, এটি ১০-২০ মিনিটের জন্য
              রেখে দিন এবং তারপরে চুল ধুয়ে ফেলুন।
            
            
            
              ৪. চুলে খুশকির সমস্যা রোধ করতে গোল মরিচ বিশেষভাবে সাহায্য করে। এক
              চামচ গোল মরিচের গুঁড়ো এক বাটি দইয়ের সাথে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ভালো
              করে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ভালো করে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে
              ফেলুন। তবে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। এতে ড্যানড্রফ ধীরে ধীরে কমে
              আসবে। তবে অতিরিক্ত এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন না, এতে স্ক্যাপে
              জ্বালাভাব ও অস্বস্তি হতে পারে।
            
            
            
              ৫. সময়ের আগেই চুলে পাক ধরছে? নিয়মিত গোলমরিচের তেল ব্যবহার করতে
              পারেন এখানে। মেথি বীজ, গোলমরিচ, কারি পাতা ও নারকেল তেল দিয়ে
              গোলমরিচের তেল বানিয়ে নিন। এবার সেটা দিয়েই রোজ রাতে স্ক্যাল্পে ও
              চুলে লাগান। পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন।
            
            
            
              ৬. স্ক্যাল্পে ধুলো-মাটি, ময়লা বা তেল জমার কারণে শুধু যে চুলের
              বৃদ্ধি ধীর হয়ে যা তা নয়, এর পাশাপাশি একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই
              স্ক্যাল্পকে পরিষ্কার রাখা জরুরি। এর জন্য দু চামচ গোলমরিচ গুঁড়োর
              সঙ্গে দু চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় মেখে নিন। ১৫ মিনিট মাথায়
              তোয়ালে চাপা দিয়ে রাখুন তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
            
            গোলমরিচের উপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
            প্রশ্নঃ গোলমরিচ চিবিয়ে খেলে কি হয়?
              
              
              উত্তরঃ গোলমরিচে ‘পিপেরিন’ নামক একটি উপাদান আছে যা শরীরে চর্বি জমতে দেয়
                না এবং নতুন ফ্যাট তৈরি করতে দেয় না। ফ্যাটি অ্যাসিড,
                ট্রাইগ্লিসারাইড, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে
                গোলমরিচ। ওজন কমানোর জন্য পান পাতার সঙ্গে গোলমরিচ দিয়ে চিবিয়ে
                খেতে পারেন। এই পদ্ধতিটি ওজন হ্রাস করার একটি শক্তিশালী উপায়।
              
              
              প্রশ্নঃ নিয়মিত গোলমরিচ খেলে কি হয়?
              
              
              উত্তরঃ এই মরিচ স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। ক্ষুধা বাড়ায়, খাবার হজম
                করে, লিভারকে সুস্থ করে এবং ব্যথা ও পেটের কৃমি দূর করে। এটি
                প্রস্রাব বাড়ায় এবং হাঁপানি ধ্বংস করে। তীক্ষ্ণ এবং গরম হওয়ায়
                এটি মুখের মধ্যে লালা তৈরি করে এবং শরীরের সমস্ত উৎস থেকে মল বের
                করে উৎসকে শুদ্ধ করে।
              
              
              প্রশ্নঃ গোলমরিচ খেলে কি ওজন কমে?
              
              উত্তরঃ বদহজমের সমস্যা থাকলে গোলমরিচের সাহায্য নিতে পারেন কারণ এটি
                হজমশক্তি ঠিক রাখে। এছাড়া এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে। বিপাক
                বৃদ্ধিকারী হিসাবে কাজ করে দ্রুত এবং ভালো মেটাবলিজম ওজন কমানোর
                অন্যতম প্রধান কারণ। গোলমরিচে রয়েছে পিপারিন, যা যৌগ হিসেবে কাজ
                করে।
              
              
              প্রশ্নঃ গোলমরিচ খেলে কি আলসার হয়?
                
              
              উত্তরঃ মশলাদার খাবার আলসার সৃষ্টি করে না , তবে আপনার যদি ইরিটেবল
                  বাওয়েল সিনড্রোম, ডিসপেপসিয়া বা প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ (IBD)
                  থাকে তবে সতর্ক থাকুন। মূলত, মশলাদার খাবার যদি আপনাকে পেটে
                  ব্যথা দেয় তবে খাওয়ার আগে ভেবে নিন। মশলাদার খাবার হেমোরয়েডের
                  কারণ হয় না, তবে আপনার যদি পায়ুপথে ফাটল থাকে তবে আপনি জ্বালা
                  অনুভব করতে পারেন।
                
              
              প্রশ্নঃ অতিরিক্ত গোলমরিচ খেলে কি হয়?
              
              
              উত্তরঃ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি: অত্যধিক পরিমাণে গোলমরিচ খাওয়ার
                ফলে অম্বল, বদহজম এবং পেট ব্যথা সহ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল
                অস্বস্তি হতে পারে। এর কারণ হল মরিচের মধ্যে রয়েছে পিপারিন, একটি
                যৌগ যা পেটের আস্তরণে জ্বালাতন করতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে
                পারে।
              
              গোলমরিচের অপকারিতা
             
           
         
        
          গোলমরিচের অপকারিতা রয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। যদিও গোলমরিচ সাধারণত
          খাবারে মশলা হিসাবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ তবে অত্যধিক সেবনের
          কিছু সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কোনো খাদ্য অতিরিক্ত না
          খেয়ে পরিমিত খাওয়া প্রয়োজন। তেমনই আরেকটি খাবার হলো গোলমরিচ। যেটি আমরা
          বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাই। তবে এই খাবারেরও যেমন উপকারিতা রয়েছে
          তেমনি রয়েছে অপকারিতা চলুন জেনে আসা যাক এর অপকারিতা গুলো।
        
        
        
          গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তিঃ অত্যধিক পরিমাণে গোলমরিচ খাওয়ার ফলে
          অম্বল, বদহজম এবং পেটে ব্যথা সহ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি হতে
          পারে। এর কারণ হল মরিচের মধ্যে রয়েছে পিপারিন, একটি যৌগ যা পেটের
          আস্তরণে জ্বালাতন করতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
        
        
        
          অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াঃ কিছু লোকের গোলমরিচ থেকে অ্যালার্জি হতে পারে,
          যা আমবাত, ফুলে যাওয়া এবং শ্বাস নিতে অসুবিধার মতো লক্ষণগুলির কারণ হতে
          পারে। গোলমরিচ মতো একই পরিবারের অন্যান্য মশলা বা গাছপালা, যেমন বার্চ,
          মুগওয়ার্ট বা র্যাগউইডের প্রতি যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের গোলমরিচ
          প্রতি অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে।
        
        
        
          ওষুধের সাথে হস্তক্ষেপঃ গোলমরিচ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, রক্ত
          পাতলাকারী এবং অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস সহ কিছু ওষুধের শোষণ এবং
          কার্যকারিতাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে। আপনি যদি কোনো ওষুধ গ্রহণ করেন,
          তাহলে প্রচুর পরিমাণে মরিচ খাওয়ার আগে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর
          সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।
        
        
        
          ত্বকের জ্বালাঃ ত্বকে অতিরিক্ত পরিমাণে গোলমরিচ প্রয়োগ করলে লালভাব,
          চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া সহ জ্বালা হতে পারে। এর কারণ হল মরিচে
          ক্যাপসাইসিন রয়েছে, একটি যৌগ যা ত্বকের সংস্পর্শে এলে তাপ এবং জ্বালার
          অনুভূতি হতে পারে।
        
        
        
          অম্বলঃ গোলমরিচ খাদ্যনালী এবং পাকস্থলীর আস্তরণে জ্বালাতন করতে পারে, যার
          ফলে অম্বল হতে পারে। মরিচের অত্যধিক ব্যবহার কিছু ব্যক্তির অম্বল সৃষ্টি
          করে। কারণ মরিচের মধ্যে রয়েছে পিপারিন, একটি যৌগ যা পাকস্থলীর অ্যাসিড
          উৎপাদন বাড়াতে পারে।
        
        
        
          পেট ব্যথাঃ অতিরিক্ত পরিমাণে গোলমরিচ খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা, ফোলাভাব এবং
          ক্র্যাম্পও হতে পারে। মরিচের অত্যধিক ব্যবহার কিছু ব্যক্তির মধ্যে
          গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি সৃষ্টি করে। কারণ মরিচ পেট এবং অন্ত্রের
          আস্তরণে জ্বালাতন করতে পারে।
        
        
        
          ডায়রিয়াঃ কিছু ব্যক্তির মধ্যে, মরিচের অত্যধিক ব্যবহার ডায়রিয়া হতে
          পারে। এর কারণ হল মরিচ মলত্যাগ বাড়াতে পারে এবং মল আলগা করতে পারে।
          মরিচের অত্যধিক ব্যবহার কিছু ব্যক্তির মধ্যে ডায়রিয়ার কারণ হয়।
        
        
        
          আলসারঃ অতিরিক্ত পরিমাণে গোলমরিচ খেলে বিদ্যমান পাকস্থলীর আলসার বাড়তে
          পারে বা নতুন আলসার হতে পারে।
        
        গোলমরিচের উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা
        চর্বি আর কোলেস্টেরল ছাড়া উপকারী প্রায় সব উপাদানই আছে এই গোলমরিচে। এটা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিরোধ করে। সবচেয়ে বড় কথা এটা খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তোলে এবং ব্যবহার করা খুব সোজা। তাই প্রত্যেক ঘরে ঘরে গোলমরিচের ব্যবহার হওয়া উচিৎ। আপনার ডায়েটে সাধারণ পরিমাণে গোলমরিচ অন্তর্ভুক্ত করা কোনো ক্ষতি নাও করতে পারে, তবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
       
    
বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url