ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা ও ব্রকলির পুষ্টিগুণ
  ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা ও ব্রকলির পুষ্টিগুণ জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ শুরু
  থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। ব্রোকলিতে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম এবং আয়রন সহ
  প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। এর স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি সম্ভাব্যভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা কমানো থেকে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড, লিউটেনের সঙ্গে ক্যারটিনয়েড,
  বিটা-ক্যারোটিন এবং জিক্সানথিন- সব শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা অনেক
  গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করে। নিন্মে ব্রকলির উপকারিতা ও ব্রকলির
  পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
পেইজ সূচিপত্রঃ ব্রকলির উপকারিতা ও ব্রকলির পুষ্টিগুণ জেনে নিন
- ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা
 - ব্রকলির পুষ্টিগুন ও উপাদান
 - শিশুদের জন্য ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা
 - শিশুদের জন্য ব্রকলির পুষ্টিকর রেসিপি
 - গর্ভাবস্থায় ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা
 - ব্রকলি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
 - ব্রকলির মজাদার কয়েকটি রেসিপি
 - ব্রকলি সম্পর্কিত প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
 - ত্বকের সুরক্ষায় ব্রকলির উপকারিতা
 - ওজন কমাতে ব্রকলির কার্যকারিতা
 - ব্রকলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
 - ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা
 
ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা
    ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা ব্যপক। ব্রকলি অনেকটাই ফুলকপির মতো দেখতে সবুজ এই
    সবজির স্বাদ কিছুটা আলাদা। ব্রকলি আমাদের দেশে এখন বেশ জনপ্রিয়। ব্রকলি দিয়ে
    বিদেশি বিভিন্ন খাবার তো তৈরি করা যায়, আবার দেশি স্বাদেও এটি রান্না করে খান
    অনেকে। শিশুদের নুডলস, পাস্তায়ও যোগ করা যায় ব্রকলি। আবার এর স্যুপও বেশ
    সুস্বাদু। নিয়মিত এই সবজি খেলে পাবেন অনেক উপকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রকলির উপকারিতা-
  
আরও পড়ুনঃ গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
    রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ যখন সুস্থ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায়
    রাখার কথা আসে, তখন শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির প্রয়োজন ভিটামিন-সি।
    ব্রকলির মতো এমন অসাধারণ ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ সবজি খুব কমই আছে। আধা কাপ ব্রকলি
    সারা দিনের ভিটামিন সির চাহিদার প্রায় ৮৪ শতাংশ পূরণ করার ক্ষমতা
    রাখে।  ভিটামিন সি শরীরকে ডিটক্সিফাই করে এবং বয়স-সম্পর্কিত
    ম্যাকুলার অবক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ,
    সর্দি-কাশি, জ্বর, মুখের ঘা ইত্যাদি আরও অনেক রোগ থেকে বাঁচতে আমাদের
    খাদ্যতালিকায় ব্রকলি যোগ করা উচিত।
  
  
    ভিটামিন-সিঃ লেবুর দ্বিগুণ ও আলুর সাত গুণ ভিটামিন সি ব্রোকলিতে। বলা
    হয়, যাঁদের ভিটামিন সি দরকার, তাঁরা অল্প করে হলেও ব্রোকলি প্রতিদিন খেতে
    পারেন। এছাড়া, ভিটামিন সি দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
    অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিক্যালস দূর করে।
  
  
    ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ বর্তমানে ক্যান্সার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এখন
    এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মাত্রা বেড়েছে অনেকটাই। এই মরণব্যাধি থেকে বাঁচতে
    চাইলে আপনাকে সবার আগে নজর দিতে হবে খাবারের তালিকার দিকে। ক্যান্সারের ঝুঁকি
    বাড়াতে পারে এমন খাবার বাদ দেওয়ার পাশাপাশি ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে এমন খাবার
    খেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার জন্য উপকারী হতে পারে ব্রকলি। এটি নিয়মিত খেলে এই
    অসুখ থেকে দূরে থাকা সম্ভব অনেকটাই।
  
  আরও পড়ুনঃ ফটকা ফল বা গোল্ডেন বেরি খাওয়ার উপকারিতা
  
    হজমের সমস্যা দূর করেঃ হজমের সমস্যায় ভোগেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব
    কম। কারণ প্রায় সবার ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পেটের
    স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা জরুরি। নিয়মিত ব্রকলি খেলে তা হজমের সমস্যা দূর করে।
    পেটের সমস্যা দূর করতে চাইলে নিয়মিত ব্রকলি খেতে হবে। তাই আপনার খাবারের
    তালিকায় ব্রকলি রাখুন।
  
  
    ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করেঃ ডায়াবেটিস হলে ব্লাড সুগারের মাত্রা
    নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। নয়তো এটি বেড়ে গেলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
    সেজন্য খাবারের ক্ষেত্রে সচেতন হবে। খেতে হবে সহায়ক সব খাবার। এক্ষেত্রে আপনাকে
    সাহায্য করতে পারে ব্রকলি। আপনি যদি প্রতিদিন ব্রকলি খেতে পারেন তবে তা আপনাকে
    অনেকটাই সুস্থ রাখতে কাজ করবে। ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত ব্রকলি খাওয়ার অভ্যাস
    করুন।
  
  
    হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নয়নেঃ রক্ত জমাট বাঁধার জন্য ভিটামিন কে একটি
    প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এবং আমাদের হাড়কে সুস্থ ও সবল রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ
    ভূমিকা রাখতে পারে। ব্রকলিতে এ উপাদান আছে মাত্রাতিরিক্ত। ভিটামিন কে হাড়ের
    ঘনত্ব বাড়ায় এবং অস্টিওপরোসিসে আক্রান্তদের হাড়ভাঙন প্রতিরোধ করে।
  
  
    মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে
    সাহায্য করে ব্রকলি। তাই বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও নিয়মিত ব্রকলি খাওয়ানো উচিত।
    কারণ এই উপকারী সবজি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে দারুণভাবে কাজ করে। নিয়মিত এই সবজি
    খেলে দূরে থাকা যাবে আলঝাইমার্সের মতো অসুখ থেকেও।
  
  
    দৃষ্টিশক্তির জন্যঃ ব্রকলিতে আছে লুটিন আর জিয়াজেন্থিন নামের
    ক্যারোটিনয়েড। ২০০৩ ও ২০০৬ সালে করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুটি
    ক্যারোটিনয়েড বার্ধক্যজনিত কারণে চোখের যে সমস্যা হয়, যেমন: ক্যাটার্যাক্ট,
    ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ইত্যাদির ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে থাকে। এর বিটা ক্যারোটিন
    ভিটামিন এ–তে রূপান্তরিত হয়। এটা সবাই জানে, ভিটামিন এ চোখের জন্য বিশেষ
    উপকারী।
  
  
  
    হার্টের স্বাস্থ্য সমর্থন করেঃ এলডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের
    মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে হৃদরোগ হতে পারে। গুঁড়া ব্রোকলির স্প্রাউট
    সাপ্লিমেন্ট ট্রাইগ্লিসারাইডের সংখ্যা কমাতে, রক্তে এলডিএল (খারাপ)
    কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে এবং এইচডিএল (ভাল) কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে
    কার্যকর। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এই সবজিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
    আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রাখতে পারে। এই সব বন্ধ করার জন্য,
    ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর সাথে যুক্ত এবং ব্রকলি এই
    খাবারগুলির মধ্যে একটি।
  
  
    কিডনি স্বাস্থ্য সমর্থন করেঃ ব্রোকলিতে রয়েছে এমন যৌগ যা শরীরকে
    ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে, যার মধ্যে রয়েছে গ্লুকোরাফানিন,
    গ্লুকোনাস্টার্টিন এবং গ্লুকোব্রাসিসিন। এই যৌগগুলি শরীরের প্রাকৃতিক
    ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াগুলিকে সমর্থন করে, যা এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির উপর
    বোঝা কমিয়ে কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকার করতে পারে। প্রদাহ কিডনির ক্ষতি এবং
    রোগে অবদান রাখতে পারে। ব্রকলিতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরের
    প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, সামগ্রিক কিডনির স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে।
  
  
    ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ কম-ক্যালোরি গণনা এবং উচ্চ ফাইবার সামগ্রীর
    কারণে, ব্রকলিকে আসলে একটি কার্যকর ওজন কমানোর খাবার হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
    ফাইবার আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণ বোধ করতে সাহায্য করে, যা আপনার খুব
    বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে কাজে আসতে পারে। অধিকন্তু, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি
    স্বাস্থ্যকর হজম এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নীত করতে সহায়তা করে, যার ফলে
    কোষ্ঠকাঠিন্যও হ্রাস পায়।
  
  
    শরীরে প্রদাহ কমায়ঃ শরীরে প্রদাহ গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং
    দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যের অবস্থার বিকাশ ঘটাতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিস এর
    মধ্যে রয়েছে এবং প্রদাহের কারণে জয়েন্টগুলির ক্ষতি করে। তবে ব্রকলিতে থাকা
    আইসোথিওসায়ানেট এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাওয়া
    গেছে। অধিকন্তু, ব্রকলিতে থাকা সালফোরাফেনকে আর্থ্রাইটিসে আক্রান্তদের সাহায্য
    করার জন্যও পাওয়া গেছে কারণ এটি প্রদাহের কারণ বন্ধ করে যৌথ ধ্বংসকে বাধা
    দেয়। সর্বোপরি, শরীরের প্রদাহ হ্রাস স্বাস্থ্যকর, এবং ব্রকলি খাওয়া এটি
    অর্জনের একটি ভাল উপায়।
  
  
    বয়সের ছাপ পড়তে দেয় নাঃ ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করতে বিভিন্ন ধরনের
    তাজা ফল ও সবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তার মধ্যে একটি হলো ব্রকলি। এটি আপনার
    ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেবে না। আপনি যদি দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখতে চান তবে এই
    সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। নিয়মিত ব্রকলি খেলে তা ত্বককে রাখতে সতেজ ও তরুণ।
  
  
    ত্বক ও চুলের জন্য উপকারীঃ ব্রোকলিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বক ও
    চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে ত্বকের
    সজীবতা বজায় রাখে। এটি ত্বকের টানটান ও মসৃণ ভাব বজায় রাখে। ব্রোকলি খেলে ফ্রি
    র্যাডিকেলসের কারণে সৃষ্ট ত্বকের ক্ষতি রোধ হয়, ফলে ত্বকের বয়সের ছাপ, বলিরেখা
    ও শুষ্কতা কমে আসে।
  
  
    হরমোনের ভারসাম্যঃ ব্রকলির মতো ব্রাসিকা শাকসবজিতে ইন্দোল-৩-কার্বিনল
    (I3C) নামে একটি উদ্ভিজ্জ যৌগ থাকে। এটা উদ্ভিজ্জ ইস্ট্রোজেন হিসেবে কাজ করে।
    আমাদের শরীরে এটা ইস্ট্রোজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হরমোনের ভারসাম্য বজায়
    রাখতে সাহায্য করে। I3C এছাড়াও পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়েরই স্তন ক্যানসারের
    ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  
  
    ইমিউন সিস্টেমের উন্নতিঃ সালফার সমৃদ্ধ হওয়ায়, ব্রকলি অন্ত্রের
    স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ সংক্রমণের বিরুদ্ধে আপনার
    ইমিউনিটিকে উন্নত করে। এর কারণ হল সালফার গ্লুটাথিয়নের উৎপাদনে সাহায্য করে।
    যা অন্ত্রের ভেতরের আর বাইরের সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম।
  
  
    পুরুষদের জন্যঃ ব্রোকলিতে সালফোরাফেন এবং ইনডোল-3-কারবিনল নামক যৌগ
    রয়েছে, যেগুলির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব রয়েছে। মূত্রথলির ক্যান্সার.
    আপনার ডায়েটে ব্রোকলি অন্তর্ভুক্ত করা প্রোস্টেট স্বাস্থ্যকে সমর্থন করতে পারে
    এবং প্রোস্টেট-সম্পর্কিত সমস্যাগুলির বিকাশের ঝুঁকি কমাতে পারে।ব্রোকলি
    পুরুষদের মধ্যে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এটি
    ইনডোল-3-কারবিনলের উপস্থিতির কারণে, যা হরমোনের মাত্রা ভারসাম্য বজায় রাখতে
    এবং সামগ্রিক পুরুষ স্বাস্থ্যকে সমর্থন করতে পারে।
  
  
    অ্যালার্জির সমস্যা দূর করেঃ অ্যালার্জির সমস্যা ও যেকোন প্রদাহ দূর
    করতে ব্রকলির জুড়ি নেই। ব্রকলিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩, অ্যানজাইম। যা
    প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া যারা আর্থাইটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের
    জন্যও ব্রকলি খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। এভাবেই ব্রকলি আমাদের শরীরের বিভিন্ন দিকের
    উন্নতিতে সাহায্য করে। আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ব্রকলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  
  
    ক্ষতিকর উপাদান দূর করেঃ আমাদের দেহে নানা ধরনের ক্ষতিকর উপাদান জন্ম
    নেয় এবং নানা রোগব্যাধির কারণ হয়। দেহের ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে ব্রকলি খুবই
    কার্যকর। ফলে অনেক রোগ-বালাই থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এ ছাড়া ব্রকলি হজমে সহায়তা
    করে, পেট ভালো রাখে।
  
  ব্রকলির পুষ্টিগুন ও উপাদান
    ব্রকলির পুষ্টিগুনঃ এক কাপ কাঁচা ব্রকলিতে আছে ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,
    ২ দশমিক ৬ গ্রাম প্রোটিন, শূন্য দশমিক ৩ গ্রাম ফ্যাট, ২ দশমিক ৪ গ্রাম ফাইবার।
    আরও রয়েছে দৈনন্দিন চাহিদার ১৩৫ শতাংশ ভিটামিন সি, ১১৬ শতাংশ ভিটামিন কে, ১৪
    শতাংশ ভিটামিন বি৯ (ফোলেট), ১১ শতাংশ ভিটামিন এ, ৮ শতাংশ পটাশিয়াম, ৬ শতাংশ
    ফসফরাস, ৩ শতাংশ সেলেনিয়াম।
  
  
      প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন এক কথায় শরীরের প্রয়োজনীয়
      সমস্ত খাদ্যগুণেই সমৃদ্ধ ব্রকলি। হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখতে ও শক্ত করতে পারে
      ক্যালশিয়াম। তাই হাড়ের সমস্যায় ভুগলে ডায়েটে রাখুন এ সবজি। এতে রয়েছে
      ভিটামিন সি। মাত্র ১০০ গ্রাম ব্রকলিতে শরীরে প্রতিদিনের ভিটামিন সির চাহিদার
      ১৫০ শতাংশ পূরণ হতে পারে। ত্বক সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন।
    
    
      ব্রকলি প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যোভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড, বিটা-ক্যারোটিন ইত্যাদি
      অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। নানা গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করতে শরীরের প্রয়োজন
      এ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। সঙ্গে ত্বকের বলিরেখা দূর করতেও এটি সাহায্য করে।
      উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ
      ভূমিকা পালন করে এ সবজি। ব্রকলিতে থাকা গ্লুকোরাফানিন ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত
      টিস্যু সারিয়ে তোলে।
    
    
      ব্রকলি পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামেও সমৃদ্ধ। যা সুস্থ স্নায়ুতন্ত্রের জন্য
      অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা এখন প্রায় সব
      বাড়িতেই। তাদের জন্যও ডায়েটে মাস্ট এ সবুজ ব্রকলি। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ
      নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে থাকা প্রচুর পরিমাণ দ্রবণীয় ফাইবার শরীর থেকে ক্ষতিকর
      কোলেস্টেরল বের করে দেয়। নিয়মিত ব্রকলি খেলে ভালো থাকে হার্ট।
    
    
      কমে হার্টের যেকোনো অসুখের আশঙ্কা। ব্রকলি স্প্রাউটসের জুস খেলে শরীরে এক
      ধরনের রাসায়নিক তৈরি হয়। যা বায়ুদূষণ থেকে তৈরি কিছু ঝুঁকি কমিয়ে দিতে
      সাহায্য করে। এ ছাড়া অন্য অনেক সবুজ সবজির মতো ব্রকলিও একটি প্রাকৃতিক
      ডিটক্স, যা পেট ও পাচনতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। ব্রকলি ক্যান্সারবিরোধী। এমনকি
      মানসিক চাপ কমাতেও ডায়েটে রাখতে পারেন ব্রকলি।
    
  এক কাপ সেদ্ধ ব্রকোলিতে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদানগুলি নিম্নরূপঃ
  | পুষ্টি উপাদান | পরিমান | 
|---|---|
| ভিটামিন-এ | ০.৭২৪ মিলিগ্রাম | 
| ভিটামিন-সি | ১০১.২ মিলিগ্রাম | 
| ভিটামিন-ই | ২.২৬ মিলিগ্রাম | 
| ভিটামিন-কে | ২২০ মিলিগ্রাম | 
| নিয়াসিন | ০.৮৬ মিলিগ্রাম | 
| ফোলেট | ১৬৮ মাইক্রোগ্রাম | 
| আয়রন | ৫.৫ মিলিগ্রাম | 
| ফ্যাট | ০.৪ গ্রাম | 
| সোডিয়াম | ৬৪ মিলিগ্রাম | 
| পটাসিয়াম | ৩১৬ মিলিগ্রাম | 
| কাব্রোহাইড্রেড | ৭ গ্রাম | 
| ডায়েটরি ফাইবার | ২.৬ গ্রাম | 
| চিনি | ১.৭ গ্রাম | 
| সেলেনিয়াম | ৫.৭ মিলিগ্রাম | 
| ক্যালসিয়াম | ৬২ মিলিগ্রাম | 
| ম্যাগনেসিয়াম | ৩৩ মিলিগ্রাম | 
| ফসফরাস | ১০৫ মিলিগ্রাম | 
| প্রোটিন | ২.৮ গ্রাম | 
শিশুদের জন্য ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা
    শিশুদের জন্য ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা প্রচুর। এই স্বাস্থ্যকর সবজিটির মধ্যে
    রয়েছে আঁশ, যা বাড়ন্ত শিশুর জন্য জরুরি। এই সবজি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। এটি
    দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে কাজ করে। এতে রয়েছে আয়রন,
    ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, পটাশিয়াম, ফলিক এসিড। এটি বি ভিটামিনেরও ভালো উৎস;
    এতে স্নায়ু পদ্ধতি ভালো থাকে।
  
  শিশুকে প্রতিদিন ব্রকলি খেতে দিন। রান্না করে, সালাদের সঙ্গে বা জুস করেও খেতে
  দিতে পারেন। আর যদি এগুলো খেতে পছন্দ না করে, স্যুপও খাওয়াতে পারেন। শিশুদের
  ব্রকোলি খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা এখানে উল্লিখিত হলঃ
      অনাক্রম্যতার উন্নতিসাধনঃ ব্রকোলি সম্পর্কে সবথেকে ভাল বিষয় হল রোগ
      প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য দেহে এটির আরও বেশি শক্তি
      জোগান দেওয়ার প্রবণতা। ব্রকোলিতে ভিটামিন-সি বেশ ভাল পরিমাণে উপস্থিত। এটি
      কেবল দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বেশি শক্তিশালি রূপে গড়ে তোলার
      ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নয়,এটি আবার শিশুর দেহের সার্বিক স্বাস্থ্যকে
      সমর্থন করে এবং বিভিন্ন রোগ ব্যাধির আক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য
      প্রতিরোধ শক্তিও গড়ে তোলে।
    
    
      দৃষ্টিশক্তির বিকাশঃ আরও একটি উপাদান যা ব্রকোলিতে ভাল পরিমাণে
      উপস্থিত থাকে তা হল বিটা ক্যারোটিনের সংমিশ্রণের পাশাপাশি ভিটামিন A, যা
      শিশুর দৃষ্টিশক্তি আরও ভাল এবং তীক্ষ্ণ করার জন্য সরাসরি কাজ করে। এগুলি আরও
      পরিপূরক হয়ে ওঠে সামাণ্যতম B-কমপ্লেক্স ভিটামিন এবং ফসফরাস জাতীয় খনিজগুলি
      দ্বারা,যা দৃষ্টিশক্তি সুস্থ রাখতে বেশ ভাল ভূমিকা পালন করে।
    
    
      অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা হ্রাস করেঃ আমাদের রক্ত বাহে হিমোগ্লোবিন
      নামে পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্তা রয়েছে। হিমোগ্লোবিনের মূল কাজটি হলো
      রক্ত বাহগুলির মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পরিবহন করা। এবং
      হিমোগ্লোবিনের বিকাশ সম্পূর্ণরূপে আয়রনের উপস্থিতির উপর নির্ভর করে, যা কোনও
      ব্যক্তির দেহে ব্যর্থহলে তা অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা হিসাবে অভিহিত করা
      হয়।ব্রোকলিতে একটি অন্যতম মূল খনিজ হিসাবে আয়রণ রয়েছে যা দেহের মধ্যে এর
      উপস্থিতির পরিমাণকে সমৃদ্ধ করে এবং হিমোগ্লোবিনের বিকাশে উন্নতি ঘটায়।
    
    
      গ্যাসট্রিক আলসারের চিকিৎসা করেঃ গ্রহণ করা খাদ্য হজমের জন্য
      পাকস্থলিতে এমন একটি অ্যাসিড উৎপন্ন হওয়া প্রয়োজন যা অন্ত্রে সফলভাবে এটিকে
      ভাঙতে সহায়তা করে। যদি এই অ্যাসিডের উৎপাদনটি অনিয়ন্ত্রিত হয়,তার ফল হিসেবে
      দেহের গ্যাস্ট্রিক অংশে অ্যাসিডিটি আলসার গড়ে তুলতে পারে। এই
      প্রেক্ষিতে,ব্রকোলি থেকে প্রস্তুত একটি স্যুপ এই ধরনের আলসার থেকে আপনার
      সন্তানকে তার প্রয়জনীয় অতিরিক্ত উপশম এনে দিতে পারে।
    
    
      অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলির উপস্থিতিঃ দেহের সকল উপাদানগুলি এবং
      অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি নিজেরও মধ্যস্থ উপাদানগুলির মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর
      ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অ্যান্টিওক্সিডেন্টগুলি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এগুলি
      দেহকে বিষমুক্ত করতে এবং দেহস্থ যেকোনও বিপাকীয় মৌল মুক্ত করার ক্ষেত্রে
      যত্নশীল ,যা দেহের কলা এবং কোষগুলিকে সুরক্ষা প্রদানে সহায়তা করে। ব্রকোলি এই
      ধরনের অ্যান্টিওক্সিডেন্টগুলি দ্বারা পূর্ণ তাই ডায়েটে এর অন্তর্ভূক্তি উচ্চ
      মাত্রায় সুপারিশ করা হয়।
    
    
      কোষ্ঠকাঠিণ্য হ্রাস করেঃ যেকোনও ধরনের হজম অথবা কোষ্ঠকাঠিণ্যের
      সমস্যায়,উভয়ের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত উপায়গুলি হল তন্তুযুক্ত
      খাবারের সংযোজন এবং অন্ত্র আন্দোলনকে উদ্দীপ্ত করা। ব্রকোলিতে রয়েছে ফাইবার
      বা তন্তু যার মধ্যে আবার প্রাকৃতিক রেচক উপাদানগুলিও রয়েছে। এটি অতিরিক্ত
      ময়েশ্চার শোষণে এবং যেকোনও অপদ্রব্যগুলি অপসারণে সহায়তা করে,পরিপাক পদ্ধতিকে
      উদ্দীপ্ত করে তোলে এবং এইভাবে সমগ্র পাচন প্রক্রিয়াটিকে স্বাস্থ্যকর করে
      তোলে।
    
    
      ডায়রিয়া থেকে স্বস্তি দেয়ঃ ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে,ডায়রিয়া অত্যন্ত
      বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে কারণ এটির কারণে দেহে দ্রুত ডিহাইড্রেশন হতে পারে যা
      সেটিকে মারাত্মক করে তুলতেও পারে। ডিহাইড্রেশন,দেহস্থ জলের কোনও সাধারণ
      লুন্ঠণ নয় এটি আবার সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ এবং লবণের একটা ভাল
      ভারসাম্যও বটে।ডায়রিয়ার সময় ব্রকোলি দ্বারা প্রস্তুত একটা স্যুপ আপনার
      বাচ্চাকে খাওয়ালে তা অনবরত মল নির্গমনের সহিত তার দেহ থেকে হারিয়ে যাওয়া
      পুষ্টির পাশাপাশি জলের পরিমাণ পুনরুদ্ধারেও সহায়তা করে থাকে।
    
    শিশুদের জন্য ব্রকলির পুষ্টিকর রেসিপি
      শিশুদের জন্য ব্রকলির পুষ্টিকর রেসিপি রান্না করার জন্য বিভিন্ন সহজবোধ্য
      উপায় রয়েছে। কাঁচা ব্রকলি ভিটামিন সি এবং কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ তার
      সম্পূর্ণ পুষ্টি উপাদান ধরে রাখে, যা শিশুদের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য বেশ
      উপকারী। আপনার শিশুর জন্য ব্রকলিকে মজাদার করে তুলতে আপনি এই সকল রেসিপিগুলি
      প্রস্তুত করার চেষ্টা করতে পারেন।
    
১. ব্রকলি এবং চীজ নাগেট
    উপকরণ
    - রান্না করে জল ঝরানো টুকরো করে কাটা ব্রকলি
 - পাউরুটির ভিতরের নরম অংশ অথবা বেবি সিরিয়াল
 - চেডার চীজের ছিন্নভিন্ন করে কাটা টুকরো
 - কয়েকটি ডিম অথবা সবজি পিউরি
 
কীভাবে রান্না করবেন
    - ১৯০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে ওভেনটিকে প্রস্তুত করুন।
 - একটি বেকিং শীট নিয়ে সেটির উপর সঠিক ভাবে কিছুটা জলপাই তেলের প্রলেপ দিন।
 - একটি বড় বাটি নিয়ে তার মধ্যে সকল উপকরণগুলিকে একত্রিত করে ভালভাবে মিশ্রিত করুন।এর পাশাপাশি এর সাথে রুচি বর্ধক কিছু সিজনিং যুক্ত করা যেতে পারে।
 - সঠিকভাবে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত মিশ্রণটির কিছুটা অংশ আপনার হাতে নিয়ে সেটিকে একটি নাগেটের আকারে গড়ে তুলুন।এবার সেটিকে বেকিং ট্রের উপর রাখুন। অবশিষ্ট সম্পূর্ণ মিশ্রণটির জন্যই এই একই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করুন।
 - এরপর ট্রেটিকে ওভেনের ভিতরে রেখে সেটিকে ১৫ মিনিটের জন্য বেক করুন। ট্রেটিকে এবার বের করে এনে নাগেটগুলিকে টোকা মেরে উলটে দিয়ে পুনরায় সেটিকে ওভেনের মধ্যে ঢুকিয়ে আরও ৫-১৫মিনিটের জন্য বেক করুন।
 - যেকোনও সময় শিশুদের খাওয়ানোর জন্য একটি দুর্দান্ত ব্রকোলি চীজ শিশু খাদ্য রূপে নাগেটগুলি পরিবেশনের জন্য একদম প্রস্তুত।
 
২. ব্রকলি গাজর পিউরি
    উপকরণ
    - ব্রকলি
 - খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট ঘনকাকারে কাটা গাজর
 
      কীভাবে রান্না করবেন 
    
    - ঠাণ্ডা জলের ধারায় ব্রকোলিকে ঠিকমত ধুয়ে নিন।
 - ডালপালাগুলির সাথে ব্রকোলিটিকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। একটি মসৃণ পিউরি প্রস্তুতের জন্য শুধুমাত্র ফুলগুলিকেই ব্যবহার করুন।
 - একটা কড়াই নিয়ে তার মধ্যে ব্রকোলিগুলির পাশাপাশি ছোট ঘনকাকারে কাটা গাজরের টূকরোগুলিকেও যোগ করুন। এবার এর মধ্যে কিছুটা জল যোগ করুন এবং কম আঁচে বসিয়ে রাখুন। বিকল্প হিসেবে আপনি আবার এগুলি না নরম হওয়া পর্যন্ত সেগুলিকে প্রেসারে সেদ্ধ করেও নিতে পারেন।
 - অবশেষে সেগুলিকে একটি বাটির মধ্যে সব একসাথে পিঁষে নিন যতক্ষণ না সেটি একটি পিউরি আকারে গড়ে ওঠে।
 
৩. চীজ ব্রকলি রাইস
    উপকরণ
    - ব্রকলি
 - ব্রাউন রাইসের ভাত
 - চেডার চীজের ছিন্নভিন্ন করে কাটা টুকরো
 
কীভাবে রান্না করবেন
    - ঠাণ্ডা জলে ঠিকমত ব্রকোলিটিকে ধুয়ে নিন।
 - আস্ত ব্রকোলিটিকে সম্পূর্ণ রূপে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন,এরপর সেগুলিকে একটি স্টীমারের মধ্যে রেখে ভালভাবে সম্পূর্ণরূপে নরম না হওয়া পর্যন্ত ভাপিয়া নিন।
 - এবার একটা বাটি নিয়ে তার মধ্যে ভাতের সহিত ভাপানো ব্রকোলির টুকরোগুলিকে মিশ্রিত করুন।তারপর সেই বাটিটিকে কম আঁচের উপর বসিয়ে রেখে কিছুক্ষণ রান্না হতে দিন
 - এবার বাটিটির মধ্যে চীজ যোগ করে ভালভাবে নেড়ে নিন।চীজটি সম্পূর্ণরূপে গলে না যাওয়া পর্যন্ত সেটিকে রান্না করুন।
 - সবশেষে আঁচ থেকে সরিয়ে নিয়ে আপনার শিশুর উপযোগী প্রয়োজনীয় ঘনত্বে আনতে সম্পূর্ণ মিশ্রণটিকে একসাথে পিঁষে নিন।
 
৪. ব্রকলি ক্রীম স্যুপ
    উপকরণঃ
    - ব্রকলি
 - জলপাই তেল
 - পিঁয়াজ কুঁচি
 - মুরগির ব্রথ বা সেদ্ধ ঝোল
 - অরিগ্যানো
 - মরিচ
 - কম ফ্যাটযুক্ত দুধ
 
      কীভাবে রান্না করবেনঃ
    
    - একটি বড় কড়াই নিয়ে তার মধ্যে সামাণ্য কিছুটা তেল যোগ করে সেটি মাঝারি আঁচে বসিয়ে গরম করুন এবং তার মধ্যে পিঁয়াজ কুঁচিগুলিকে যোগ করে সেগুলি নরম না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
 - একই ভাবে অনুসরণ করে তার সাথে এক এক করে যোগ করতে থাকুন ব্রকোলি, অরিগ্যানো, মরিচ এবং মুরগির ব্রথ। এগুলি সব একসাথে ভালভাবে নাড়তে থাকুন এবং গ্যাসের আঁচটিকে মাঝারি থেকে উচ্চ শিখায় এনে সেটিকে ফোটাতে শুরু করুন।
 - একবার ফুটে গেলেই আঁচটিকে পুনরায় কমিয়ে মাঝারি আঁচে নিয়ে আসুন এবং যতক্ষণ না ব্রকলি নরম হয়ে যায় সেটিকে রান্না করুন।
 - এবার আঁচ থেকে সরিয়ে নিয়ে এর সাথে দুধ যোগ করুন।ভালভাবে নেড়ে নিয়ে সেটিকে একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে ঢালুন। এটিকে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘনত্বে আনতে এগুলি সব একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। পরিবেশনের পূর্বে পুনরায় এটিকে কিছুটা গরম করে নিন।
 
৫. বেসিক ব্রকলি পিউরি
    উপকরণঃ
    - ব্রকলি
 
      কীভাবে রান্না করবেনঃ
    
    - ঠাণ্ডা জলে সঠিক ভাবে ব্রকলিটিকে ধুয়ে নিন।
 - এবার এটিকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন।
 - নরম না হওয়া পর্যন্ত এটিকে ভাঁপিয়ে নিন, একটি মসৃণ পিউরি রূপে গড়ে তুলতে ভাঁপানো টুকরোগুলিকে সব একসাথে ব্লেন্ড করে নিন।
 - যদি আপনি এর ঘনত্বটিকে আরও পাতলা করে নিতে চান তবে প্রয়োজনানুসারে এর সাথে জল যোগ করতে পারেন।
 
গর্ভাবস্থায় ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা
      গর্ভাবস্থায় ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা ও প্রয়োজনীয় অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান
      মেলে ব্রকলিতে। এরমধ্যে আঁশ, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাসিয়াম,
      লৌহ, ‘ফোলেট’, অন্যতম। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও প্রচুর পরিমাণে থাকে এতে।
      মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য উপকারী উদ্ভিজ্জ
      উপাদানও মেলে এই সবজি থেকে। আঁশ বেশি থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে বেশ উপকারী
      ব্রকলি, যা গর্ভবতি মায়েদের একটি সাধারণ সমস্যা। তাই সালাদ, সুপ, তরকারি
      ইত্যাদিতে ব্রকলি রাখা উচিত।
    
    
      এই সবুজ সবজিতে রয়েছে গর্ভবতী মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সব উপাদান। অনেকটা
      ফুলকপির মতো দেখতে সবুজ রঙের এই সবজির চাহিদা এখন সর্বত্র। ব্রকলিতে গর্ভবতী
      মায়েদেরে জন্য অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান সেলেনিয়াম আর ফোলেট বা ভিটামিন বি-ফাইভ
      রয়েছে অতিমাত্রায়। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে। আর খনজি
      উপাদান পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ তো আছেই।
    
  ব্রকলি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
          ব্রকলির অসংখ্য সুবিধার প্রেক্ষিতে এই সবজিটিকে আপনার খাদ্যতালিকায়
          অন্তর্ভুক্ত করা ভালো। ব্রকলি কীভাবে খেতে হয় এবং আপনি যেভাবে এটি তৈরি
          করতে পারেন তা শিখে নেওয়া একটি ভাল প্রথম পদক্ষেপ কারণ আপনাকে এটিকে
          সিদ্ধ করে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি দেখতে পারেন এমন অনেক সুস্বাদু এবং
          স্বাস্থ্যকর রেসিপি রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্য এবং ওজন লক্ষ্যের সাথে
          মানানসই।
        
        
          উদাহরণস্বরূপ, সালাদে বা স্লোতে বাষ্পযুক্ত ব্রকলি যোগ করা এটি খাওয়ার
          একটি দুর্দান্ত উপায়। আপনি অন্যান্য সবজির সাথে গ্রিলড বা রোস্টেড
          ব্রকলিও তৈরি করতে পারেন বা এটি দিয়ে স্যুপ বা পাস্তা সসের ভিত্তি তৈরি
          করতে পারেন। অবশ্যই, এটি পিজ্জা বা স্যান্ডউইচে একটি দুর্দান্ত টপিংয়ের
          জন্যও তৈরি করে; যাইহোক, আপনি যেভাবে ব্রকলি সবজি রান্না করেন তার
          পুষ্টিগুণে প্রভাব ফেলে।
        
        
          এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে বেশিরভাগ পদ্ধতিতে, এটিকে বাষ্প করার
          পাশাপাশি, এটি কিছু ভিটামিন সি, চিনি এবং দ্রবণীয় প্রোটিন উপাদান হারাতে
          পারে। এই সত্যের পরিপ্রেক্ষিতে, ব্রকলি খাওয়ার অন্যতম সেরা উপায় হল
          ডালপালা বাষ্প করা এবং লবণ, মরিচ এবং জলপাই তেল দিয়ে সিজন করা।ব্রকলির অনেক উপকারিতা এবং ব্যবহার থাকা সত্ত্বেও, এটি সবার সাথে একমত
          নাও হতে পারে এবং তাই, এটি আপনার খাবারে যোগ করার আগে, একজন বিশেষজ্ঞের
          সাথে পরামর্শ করা ভাল।
        
      ব্রকলির মজাদার কয়েকটি রেসিপি
        ব্রকলি একটি পুষ্টিকর সবজি। আমরা সবাই প্রায় এটি দিয়ে তরকারি রান্না করে
        খেয়ে থাকি। তবে কাঁচা ব্রকলি থেকে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। ব্রকলি
        অনেকক্ষণ ধরে রান্না করলে এর পুষ্টি উপাদান হ্রাস পায়। তাই এটি ভাপে সেদ্ধ
        করা ভালো। সালাদ, স্যুপ বানিয়েও খাওয়া যায় ব্রকলি। এ সবজি খেতে বেশ
        সুস্বাদু। শীতকালে নানা পদ বানানো যায় ব্রকলি দিয়ে। জেনে নিন ব্রকলির
        মজাদার কয়েকটি রেসিপিঃ
      
      উপকরণঃ হাড় ছাড়া গরুর মাংস আধা কেজি, ছোট ব্রকলি ১টি, পেঁয়াজ ২টি, পেঁপে বাটা ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা আধা চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া স্বাদমতো, হলুদ গুঁড়া সামান্য, জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, লেবু ১টি, লবণ স্বাদমতো ও তেল প্রয়োজনমতো।
প্রস্তুত প্রণালিঃ হাড় ছাড়া গরুর মাংস ছোট কিউব করে কেটে নিন। ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। তারপর হলুদ গুঁড়া আর পেঁপে বাটা দিয়ে মাখিয়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন। ব্রকলি ফুল আকারে কেটে লবণ দিয়ে হালকা সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। পেঁয়াজ চার টুকরো করে কেটে পরতে পরতে খুলে নিতে হবে। ম্যারিনেট করা গরুর মাংসের সঙ্গে বাকি মসলা, স্বাদমতো লবণ আর তেল মাখিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।
শাশলিকের কাঠি পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে দিন। উঠিয়ে ভালো করে মুছে যথাক্রমে এক টুকরো মাংস, এক টুকরো ব্রকলি, পেঁয়াজ সাজিয়ে নিন কয়েক দফায়। তারপর নন স্টিক প্যানে অল্প তেল গরম করে শাশলিকের কাঠি পাশাপাশি সাজিয়ে মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত উল্টেপাল্টে ভেজে নিন। মাঝেমধ্যে বেঁচে যাওয়া মসলা ও তেল ব্রাশ করে দিতে হবে। হয়ে গেলে পাত্রে সাজিয়ে ওপরে লেবুর রস ছড়িয়ে সালাদ বা সসসহ পরিবেশন করুন।
          ২. ব্রকলি ছোলার স্টির-ফ্রাই
        
        
          উপকরণঃ ২ কাপ ব্রকলির ফুল। ১০০ গ্রাম ছোলা সিদ্ধ। ১টি লাল
          ক্যাপ্সিকাম কুচি। মাঝারি ১টা গাজর লম্বা কুচি করা। ৩টি রসুনের কোঁয়া, ১
          টেবিল-চামচ আদা কুচি করা। সয়াসস ১ টেবিল-চামচ। অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ১
          টেবিল-চামচ। ১ চা-চামচ গুড়ের রস। সাজানোর জন্য পেঁয়াজ কুচি। তিলের বীজ।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ তিলে তেল একটি বড় প্যানে গরম করে আদা ও
          রসুন দুযেক মিনিট নেড়ে চেড়ে নিন। গন্ধ বের হলে ব্রকলি, ক্যাপ্সিকাম, গাজর
          দিয়ে পাঁচ থেকে সাত মিনিট ভাজতে হবে।
        
        
          এবার ছোলা, সয়া সস, ভিনিগার, গুড়ের রস ভালো মতো মিশিয়ে উপরে তিলের বীজ ও
          পেঁয়াজ ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
        
        ৩. ব্রকলি পালংশাকের সুপ
        
          উপকরণঃ বড় একটি ব্রকলি টুকরা করা। ২ কাপ কাঁচা পালংশাক কুচি করা।
          ১টি পেঁয়াজ কুচি। ৩টি রসুন কুচি। ১টি মাঝারি আকারের আলু টুকরা করা। ৪ কাপ
          সবজির ব্রথ। ১ চা-চামচ হলুদ গুঁড়া। ১ চা-চামচ জিরা গুঁড়া। আধা চা-চামচ
          ধনে-গুঁড়া। মরিচ ও লবণ স্বাদ মতো। ২ টেবিল-চামচ তেল। ১টি লেবুর রস।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ একটি বড় পাতে অলিভ অয়েল মাঝারি গরম করে
          পেঁয়াজ ও রসুন কুচি নরম হওয়া পর্যন্ত ভেজে ব্রকলি, আলু ও পালংশাক দিয়ে
          দিন। কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে ভালো মতো ভেজে সবজির ব্রথ দিয়ে মিশিয়ে দিন। বলক
          আসলে আগুনের তাপ কমিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট বা সবজি নরম হওয়া পর্যন্ত ঢেকে
          রাখতে হবে। এরপর ব্লেন্ডারে এই সবজির মিশ্রণ ব্লেন্ড করে এর সঙ্গে হলুদ,
          জিরা, ধনে গুঁড়া, লবণ মরিচ মিশিয়ে আবারও কিছুক্ষণ জ্বাল দিন। এবার লেবুর
          রস মিশিয়ে সুগন্ধের জন্য পাঁচ থেকে ১০ মিনিট রেখে গরম গরম পরিবেশন করতে
          পারেন।
        
        
          ৪. ব্রকলি ও মসুর ডালের পাকোড়া
        
        
          উপকরণঃ এক কাপ ব্রকলির ফুল সেদ্ধ ও পাতলা করে কাটা। ১ কাপ মসুরের
          ডাল সিদ্ধ করে ভর্তা করা। ১টি পেঁয়াজ কুচি। ২টি রসুনের কোঁয়া কুচি। ১
          চা-চামচ জিরা-গুঁড়া। ১ চা-চামচ মরিচ-গুঁড়া। আধা চা-চামচ হলুদ গুঁড়া। লবণ
          স্বাদ মতো। কাঁচা-মরিচ কুচি ১ টেবিল-চামচ বেসন। ১ টেবিল-চামচ ধনেপাতা
          কুচি করা। ১ থেকে দুই টেবিল-চামচ তেল ভাজার জন্য।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ একটি বড় পাত্রে ব্রকলি, ডালভর্তা-সহ
          পেঁয়াজ, আদা, রসুন কুচি, মরিচের গুঁড়া, লবণ, কাঁচা মরিচ কুচি, বেসন ও
          ধনেপাতা কুচি পানি দিয়ে মিশিয়ে ভালো মতো একটা মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। যদি
          বেশি পাতলা হয়ে যায় তবে আরও কিছু বেসন মিশিয়ে ঘন করে নিতে হবে।
        
        
          মাঝারি তাপে পাত্রে তেল গরম করে, মিশ্রণ থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে ছোট ছোট
          বার্গারের প্যাটির আকারে সোনালি করে ভেজে নিতে হবে। তিন থেকে চার মিনিট
          দুপাশ ভাজলেই হবে। বাড়তি তেল শুষে নেওয়ার জন্য ভাজা হওয়ার সাথে সাথে
          প্লেটে রাখা টিস্যু পেপারে ব্রকলির পাকোড়াগুলো রেখে দিতে হবে। মজার
          স্বাদের এই পাকোড়া বিকালের নাস্তা হিসেবে বেশ।
        
        ৫. ব্রকলি চিজ মাফিন
        
          উপকরণঃ ব্রকলি ১ কাপ (মিহি করে কুচানো), ময়দা ১ কাপ, ওটস্ আধা
          কাপ, চেডার চিজ ১ কাপ, ডিম ১টি, বেকিং পাউডার ১ চা-চামচ, তরল দুধ আধা
          কাপ, চিনি দেড় চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ এবং তেল বা গলানো মাখন ২ টেবিল
          চামচ।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ মিহি করে কুচানো ব্রকলি সেদ্ধ করে নিন।
          পানি ঝরিয়ে কিচেন টিস্যুর ওপরে রেখে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। একটা বড়
          পাত্রে প্রথমে ময়দা, ওটস্, বেকিং পাউডার আর লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে
          নিতে হবে। আলাদা একটা পাত্রে ডিম, দুধ, চিনি, তেল বা গলানো মাখন একসঙ্গে
          ফেটে নিন। এবার এতে সেদ্ধ ব্রকলি আর চিজ মিশিয়ে তা ময়দার সঙ্গে মিশিয়ে
          নিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন।
        
        
          মিশ্রণটা বেশ ঘন হবে। মাফিন ট্রেতে অল্প তেল মেখে শুকনো ময়দা ছড়িয়ে দিন।
          ময়দার মিশ্রণ থেকে অল্প মিশ্রণ মাফিন ট্রেতে ঢেলে ওপরে চিজ ছড়িয়ে দিন।
          ২৩০ ডিগ্রি প্রিহিটেড মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ১২-১৫ মিনিট বেক করতে হবে। ওভেন
          থেকে নামানোর আগে টুথপিক ঢুকিয়ে দেখে নিতে হবে যে ভেতরটা ঠিকমতো বেক
          হয়েছে কি না। নয়তো আরও মিনিট তিনেক বেক করুন। ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
        
        ৬. ব্রকলির স্যুপ
        
          উপকরণঃ ছোট ব্রকলি ১টি (ছোট করে কাটা), মিষ্টি আলু আধা কাপ (খোসা
          ছাড়িয়ে কিউব করে কাটা), নারকেল দুধ ১ কাপ, সবজির স্টক ৪ কাপ, পেঁয়াজ ১টি
          (মাঝারি আকার), রসুন ২ কোয়া, আদা আধা ইঞ্চি, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ,
          থাইপাতা বা লেমন গ্রাসের নরম গোড়া কুচানো ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস
          স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ স্বাদমতো, ধনেপাতা ১০০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন
          তেল বা জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ ও পানি আধা কাপ।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ আর লেমন গ্রাসের
          নরম গোড়া কুচোনো, অল্প পানি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। প্যানে তেল গরম
          করে ব্লেন্ড করা মিশ্রণ মাঝারি আঁচে ৩/৪ মিনিট লালচে করে ভেঁজে নিন। এবার
          এতে সবজির স্টক ঢেলে দিন। কিউব করে কাটা মিষ্টি আলু আর লবণ দিয়ে সেদ্ধ
          হওয়ার জন্য ঢেকে দিতে হবে। আলু আধা সেদ্ধ হলে কেটে রাখা ব্রকলি দিয়ে দিন।
          ১০-১২ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে নারকেল দুধ আর ধনেপাতা
          মিশিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
        
        
          ফিশ সস আর স্বাদমতো লেবুর রস মিশিয়ে আবারও চুলায় দিয়ে কম আঁচে ফুটতে দিন।
          ফুটে উঠলে স্বাদ ও লবণ চেখে নিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। পরিবেশন পাত্রে ঢেলে
          ওপরে ঘন নারকেল দুধ, ধনেপাতা বা সেদ্ধ ব্রকলি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে
          হবে।
        
        ৭. মাছ-ব্রকলি ভর্তা
        
          উপকরণঃ ব্রকলি ১টি (ছোট আকারের সেদ্ধ), রুই মাছ আধা কাপ (সেদ্ধ),
          পেঁয়াজ কুঁচি বড় ১টি, রসুন কুঁচি ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ কুঁচি ৩টি,
          ধনেপাতা কুঁচি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ও আচারের তেল
          পরিমাণমতো।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ সেদ্ধ ব্রকলি আর রুই মাছ একসঙ্গে
          মেখে নিতে হবে। প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি আর রসুন কুঁচি হালকা
          ভেঁজে নিন। কাঁচা মরিচ কুঁচি দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিন। ব্রকলি-রুইয়ের
          মিশ্রণে ভাঁজা করা ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নামিয়ে
          ফেলুন। একটু খানি আচারের তেল মিশিয়ে নিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন
          ব্রকলি ভর্তা।
        
        ৮. ব্রকলি মুরগি সালাদ
        
          উপকরণঃ ছোট ব্রকলি ১টি (ফুলের মতো কেটে নিয়ে অল্প লবণ দিয়ে আধা
          সেদ্ধ করে নেওয়া), মুরগির বুকের মাংস ১ কাপ (অল্প আদা বাটা, রসুন বাটা,
          গোলমরিচ গুঁড়ো, সয়াসস দিয়ে অল্প তেলে লালচে করে ভেঁজে নেওয়া), গাজর আধা
          কাপ (কিউব করে কেটে অল্প লবণ দিয়ে সেদ্ধ করা), লাল বা সবুজ অথবা কালো
          আঙুর আধা কাপ (অর্ধেক করে কেটে নেওয়া), আনার দানা সিকি কাপ, মালটার রস
          আধা কাপ, চিলি ফ্লেক্স স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো (ইচ্ছে হলে), লেবুর রস ১
          টেবিল চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
        
        
          প্রস্তুত প্রণালিঃ বড় পাত্রে ব্রকলি, মুরগির মাংস, গাজর,
          আঙুর, স্বাদমতো লবণ (যদি প্রয়োজন হয়) দুটো চামচের সাহায্যে হালকা নেড়ে
          মিশিয়ে নিন। অপর একটা ছোট বাটি বা পাত্রে মালটার রস, চিলি ফ্লেক্স, চিনি,
          লেবুর রস মিশিয়ে ড্রেসিং বানিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর সালাদের
          ওপরে সালাদ ড্রেসিং ছড়িয়ে আলতো হাতে কাঠের চামচ বা কাটা চামচের সাহায্যে
          মিশিয়ে নিন। পরিবেশন পাত্রে ঢেলে ওপরে আনার দানা ছড়িয়ে সালাদ পরিবেশন
          করুন। মাল্টার রসের বদলে মেয়োনেজ বা জলপাই তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে।
          দেশি স্বাদ আনতে চাইলে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর ধনেপাতা কুঁচি মিশিয়ে নিতে
          পারেন।
        
        ব্রকলি সম্পর্কিত প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
          আপনারা যারা ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা ও ব্রকলির পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত
          সচোরাচর যে প্রশ্নগুলা গুগলে কিংবা কোনো ওয়েব সাইটে এসে সার্চ করে থাকেন
          তার সংক্ষেপে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর নিচে তুলে ধরা হলো। যা ব্রকলির উপকারিতা ও ব্রকলির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আশা করছি আপনারা
          সংক্ষিপ্ত কিছু ধারনা লাভ করতে পারবেনঃ
        
        
          প্রশ্নঃ ব্রকলি কিভাবে খেতে হয়?
        
        
          উত্তরঃ ব্রোকলি একটি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু সবজি যা বিভিন্ন
          উপায়ে খাওয়া যায়। এটি থেকে সর্বাধিক পুষ্টি পেতে এটি কাঁচা খান,
          ডুবিয়ে বা সালাদে। একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু সাইড ডিশ বা স্ন্যাকের
          জন্য এটিকে ভাজুন, বাষ্প করুন বা প্যান-ফ্রাই করুন বা পাস্তা, নাড়ুন
          ফ্রাই এবং স্যুপের মতো রেসিপিতে যোগ করুন।
        
        
          প্রশ্নঃ ব্রকলি খাওয়ার সঠিক সময়?
        
        
          উত্তরঃ ব্রোকলিতে উচ্চ অদ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে এবং এটি হজম হতে
          আরও বেশি সময় প্রয়োজন। ব্রোকলি খাওয়ার সর্বোত্তম সময় হল সকালের
          নাস্তা বা দুপুরের খাবার যাতে আপনার শরীর এটি শোষণ করার সময় পায়। আপনার
          এটি প্রায়শই খাওয়া উচিত কারণ এটি বিভিন্ন পুষ্টিকর উপকারিতা সহ একটি
          সবুজ শাক। ওজন কমাতে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্রকলি খেতে পারেন।
        
        
          প্রশ্নঃ ব্রকলি কি ক্ষতিকর?
        
        
          উত্তরঃ ব্রোকলি আপনার মস্তিষ্ক, হৃদপিন্ড, হাড় এবং সামগ্রিক
          স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত সুবিধা প্রদান করে - যদিও এটি খাওয়ার ফলে
          গ্যাস এবং ফোলা হওয়ার মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে । আপনি যেভাবেই
          এটিকে অন্তর্ভুক্ত করুন না কেন, এই সবজিটি বেশি করে খাওয়া আপনার পুষ্টির
          পরিমাণ বাড়াতে এবং আপনার স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করার একটি স্মার্ট
          উপায়
        
      
        প্রশ্নঃ খালি পেটে ব্রকলি খাওয়া যাবে কি?
      
      
        উত্তরঃ যদিও ব্রোকলি অত্যন্ত পুষ্টিকর, তবে এটি কাঁচা খাওয়ার সময়
        হজম করা অত্যন্ত কঠিন । আপনি যদি প্রাতঃরাশের জন্য প্রচুর পরিমাণে ব্রোকলি
        খান তবে আপনি হজমের অস্বস্তির করুণা হতে পারেন। এটি প্রায়শই গ্যাস এবং
        ফোলাভাব বাড়ে, যা আপনার দিন শুরু করার একটি দুর্দান্ত উপায় নয়।
      
      
        প্রশ্নঃ ব্রকলির তেতো ভাব দূর করার উপায়?
      
      
        উত্তরঃ ফুটন্ত পানির নির্যাস মাত্র একটি দ্রুত ডুবিয়ে দিলেই যথেষ্ট
        তিক্ততা চলে যায় এবং রান্না শুরু হয়। ব্লাঞ্চিং একটি অতিরিক্ত পদক্ষেপ,
        তবে এটি ব্রকোলি রাবেকে অনেক বেশি সুস্বাদু করে তোলে এবং সালাদ, পাস্তা বা,
        আমার প্রিয় - একটি দ্রুত সাউটের জন্য প্রস্তুত।
      
      ত্বকের সুরক্ষায় ব্রকলির উপকারিতা
            ত্বকের সুরক্ষায় ব্রকলির উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন। বেশিরভাগ
            মানুষ ত্বকের যত্নে কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকেন। তার
            মধ্যে কোনো কোনোটা হয়তো কাজ করে, তবে ত্বকে তার দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর
            প্রভাবও থেকে যেতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর
            করে তোলার ব্যবস্থা করলে। সেজন্য আপনাকে খেতে হবে ত্বক ভালো রাখার জন্য
            উপযুক্ত খাবার। 
          
          
            কিছু ফল ও শাক-সবজি আপনার ত্বকে পরিবর্তন আনতে পারে। তেমনই একটি সবজি
            হলো ব্রকলি। মাত্র এক কাপ টুকরো করা ব্রকলিতে ৮১ মিলিগ্রাম পরিমানে
            ভিটামিন সি থাকে। যা একদিনে শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি।এছাড়া
            ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ই থাকে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা
            বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ রোধ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রকলি খেলে ত্বকের
            কী উপকার হয়ঃ
          
          
            ভিটামিন সি-এর উৎসঃ স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখার জন্য ভিটামিন
            সি অপরিহার্য। ব্রকলি এই ভিটামিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। এই ভিটামিন
            কোলাজেন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন, যা ছাড়া আমাদের ত্বকের গঠন এবং
            স্থিতিস্থাপকতার অভাব হয়। ইউএসডিএ-এর তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম
            ব্রকোলিতে ৮১ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ভিটামিন সি থাকে। ব্রকলি কাঁচা, হালকা
            ভাপে দিয়ে বা ভেজে খেতে পারেন।
          
          
            ত্বককে প্রাকৃতিক আভা দেয়ঃ ত্বক প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল থাকলে
            তা স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়। ব্যয়বহুল লোশনের পরিবর্তে ব্রকলির মতো
            পুষ্টিকর সবজি বেছে নিতে পারেন। ব্রকলিতে উপস্থিত ভিটামিন সি আপনার
            ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে। তাই আপনি যদি সবসময়ই কাঙ্ক্ষিত
            উজ্জ্বল ত্বক চান তবে এখনই আপনার ডায়েটে ব্রকলি যোগ করুন!
          
          
            বলিরেখা পড়তে দেয় নাঃ খাবারের তালিকায় ব্রকলি যোগ করার আরেকটি
            সুবিধা হলো, এটি বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। ব্রকলি
            অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এটি ক্ষতিগ্রস্থ ত্বককে নিরাময় করতে
            সাহায্য করে। ফলে আপনার ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যায় না। তাই
            অ্যান্টি-এজিং ক্রিমকে বিদায় দিয়ে আজ থেকে বরং ব্রকলি খাওয়া শুরু
            করুন।
          
          
            ব্রণ কমাতে সাহায্য করেঃ ব্রণের সমস্যায় ভুগলে ব্রকলি খাওয়ার
            অভ্যাস করুন। এটি ব্রণের বিরুদ্ধে বিস্ময়করভাবে কাজ করে। গবেষণা
            অনুসারে, ব্রকলিতে সালফোরাফেন নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা
            ব্রণ কমাতে এবং ত্বককে আগের মতো মসৃণ করতে সাহায্য করতে পারে।
          
          
            ত্বক হাইড্রেট করতে সাহায্য করেঃ আপনি যদি আপনার ত্বককে
            হাইড্রেট করার প্রাকৃতিক উপায় খুঁজে থাকেন, তাহলে ব্রকলি আপনার জন্য
            সেরা উপায় হতে পারে। এতে গ্লুকোরাফানিন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা
            ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে এক ধরনের
            প্রাকৃতিক আভা দেয়। ব্রকলিতে উপস্থিত ভিটামিন সিও এই কাজে অবদান রাখে।
          
          ওজন কমাতে ব্রকলির কার্যকারিতা
            ওজন কমাতে ব্রকলির কার্যকারিতা ব্যপক অন্যান্য নন-স্টার্চি সবজির মতো
            ব্রকলিও ক্যালোরি কম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন নিয়ন্ত্রণে
            উপকারী। ব্রকোলির ফাইবার এবং জলের উপাদান আপনাকে ধীর হজমের কারণে দীর্ঘ
            সময় পূর্ণ থাকতে সাহায্য করতে পারে এবং আপনার খাদ্যতালিকায় ব্রকলি
            যোগ করা উচ্চ-ক্যালোরি এবং অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলিকে ভিড় করতে
            সাহায্য করতে পারে।
          
          
            ব্রকলি বিপাকীয় স্তরে ওজন নিয়ন্ত্রণেও উপকার করতে পারে।
            ফাইবার-সমৃদ্ধ উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবার যেমন ব্রোকলির উচ্চ TEF, বা
            খাদ্যের তাপীয় প্রভাব রয়েছে , যার অর্থ এটি খাওয়ার পরে বিপাকীয় হার
            বৃদ্ধি করতে পারে। ব্রকলিতে ক্যালোরির পরিমাণ কম, তাই অনেক খেলেও ওজন
            নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওজন কমানোর জন্য ক্ষুধা লাগলে ব্রকলি খাওয়া যেতে
            পারে। সালাদে এবং দেশি বা বিদেশি স্টাইলে রান্না করলে ব্রকলি খেতে অনেক
            সুস্বাদু মনে হয়।
          
          
            এই সবজি খাওয়া ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে এবং ক্ষুধার
            মাত্রা হ্রাস করতে পারে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
            যদিও আরও মানব গবেষণার প্রয়োজন, ব্রকলি এবং অন্যান্য ক্রুসিফেরাস
            শাকসবজিতে উপস্থিত উদ্ভিদ যৌগগুলি চর্বি কোষগুলির বৃদ্ধিকে ধীর করতে
            ভূমিকা পালন করতে পারে।
          
          ক্যালোরির পরিমাণ কম হলেও ব্রোকলিতে যে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, তা শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্রকলিতে ক্যালশিয়াম বেশি থাকায় হাড় শক্তিশালী ও মজবুত হয়। ব্রকলিতে ভিটামিন কে, আয়রন আর পটাশিয়ামের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ ফ্ল্যাভিনয়েড, লিউটেন, ক্যারোটিনয়েড, বিটা-ক্যারোটিনসহ উচ্চমানের নানা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এ সময় সুস্থতার জন্য তাই খাদ্য তালিকায় ব্রকলি রাখুন।
ব্রকলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
            ব্রকলির সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল গ্যাস বা ফোলাভাব। কারণ
            ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম করা কঠিন। আপনি যদি গ্যাস
            বা ফোলা প্রবণ হন তবে আপনি আপনার ব্রকলি খাওয়া সীমিত করতে চাইতে
            পারেন। ব্রকলিও কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। কারণ এতে রাফিনোজ নামে
            একটি যৌগ রয়েছে, এক ধরনের চিনি যা হজম করা কঠিন।
          
          
            আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে লড়াই করে থাকেন তবে আপনি ব্রকলি এড়াতে
            বা এটি পরিমিতভাবে খেতে চাইতে পারেন। কিছু বিরল ক্ষেত্রে, ব্রোকলিও
            অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ব্রকলিতে অ্যালার্জির
            প্রতিক্রিয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফোলাভাব এবং শ্বাস
            নিতে অসুবিধা। আপনি যদি ব্রকলি খাওয়ার পরে এই উপসর্গগুলি অনুভব করেন,
            অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান।
          
          ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে শেষকথা
              ব্রকলি একটি বহুমুখী এবং পুষ্টিকর সবজি যা অসংখ্য স্বাস্থ্য
              উপকারিতা প্রদান করে। ইমিউন হেল্থকে সমর্থন করা থেকে শুরু করে হার্ট
              এবং কিডনির স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ব্রকলি যেকোনো ডায়েটে একটি
              মূল্যবান সংযোজন। উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবার সহ
              এর সমৃদ্ধ পুষ্টির প্রোফাইল এটিকে স্বাস্থ্য সুবিধার পাওয়ার হাউস
              করে তোলে। সুতরাং, পরের বার যখন আপনি আপনার খাবারের পরিকল্পনা করছেন,
              আপনার প্লেটে আরও ব্রোকলি যোগ করার কথা বিবেচনা করুন এবং এটির অফার
              করা অনেক সুবিধা উপভোগ করুন।
            
            
              ব্রোকলি শুধু একটি সুস্বাদু সবজি নয়, বরং এটি অসংখ্য স্বাস্থ্য
              উপকারিতার উৎস। শীতকালে এটি সহজলভ্য হওয়ায় আমাদের খাদ্য তালিকায়
              এই সবজিটি অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। প্রতিদিন ব্রোকলি খেলে শরীর
              ও মন উভয়ের জন্যই উপকারী। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বজায় রাখতে এবং
              অনেক রোগের সম্ভাবনা কমাতে খাবারের তালিকায় ব্রোকলি রাখা ।
            
            
            
          


বিডি টেকল্যান্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url